মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর তাঁর তৃতীয় নদিয়া সফর শুরু হল বুধবার রাতে। এ দিন রাত আটটা নাগাদ কৃষ্ণনগর সার্কিট হাউসে পৌঁছে হাত নেড়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অস্ফূটে দললীয় কর্মীদের কাছে জেনে নেন “সবাই এসেছে তো?” সময় নষ্ট না করে তখনই ঢুকে যান সোজা নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে। গভীর রাতেও সেই বৈঠক শেষ হয়নি।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েই এ দিনের বৈঠক। তবে সেখানে যে দলীয় কোন্দল প্রসঙ্গও আসবে তা বলাই বাহুল্য। আজ, বৃহস্পতিবার দুপুরে তেহট্টে তাঁর জনসভা দুপুর একটায়। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মঞ্চে থাকছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারন সম্পাদক মুকুল রায়। তবে মঞ্চে জেলা নেতারা কে ঠাঁই পান তা নিয়ে জোর জল্পনা চলছে। |
এর আগে চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি প্রথমবার জেলা সফরে এসেছিলেন মমতা। সে বার জেলা আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। এরপর ২৮ অগস্ট। সে বার প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি কৃষ্ণনগর স্টেডিয়ামে জনসভাও করে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এ বারের সমাবেশ বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সম্প্রতি তেহট্টে রাস্তা অবরোধকারীদের উপর গুলি চালানো নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে যায়। তেহট্টে যেতে গিয়ে বাধা পান কংগ্রেস, বিজেপি ও সিপিএম নেতৃত্বও। পুলিশের গুলি চালানোর জেরে সরিয়ে দেওয়া হয় তেহট্ট থানার আইসি এবং এসডিপিওকে। তেহট্টের গুলি চালানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক চাপানউতোরের পাশাপাশি প্রকাশ্যে আসে তৃণমূলের গোষ্ঠাদ্বন্দ্ব। তেহট্টে গিয়ে দলের একাংশের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয় মুকুলবাবুকে।
এরই মধ্যে দলের ‘বিদ্রোহী’ নেতা জেলা যুব কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি তাপস সাহাকে দলে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। বিধানসভা ভোটে টিকিট না পেয়ে নেত্রীর আপত্তিকে উপেক্ষা করে নির্দল প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। তেহট্টে সভা করতে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করেন। তাপসবাবু নিজে জিততে না পরলেও তৃণমূল প্রার্থী গৌরিশঙ্কর দত্ত তৃতীয় স্থান দখল করেন। তেহট্টের ৩টি আসনেই জয়ী হন সিপিএম প্রার্থী। এরপর গুলি চালানোর ঘটনায় তৃণমূলের পায়ের তলার মাটি অনেকটাই সরে গিয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল। আর সে কারণেই হয়ত আরও একবার জেলা সফরে এলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর এ বারের সফর ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ করতেই বলে তাঁদের ধারনা।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবারের সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন তেহট্টে নিহতের পরিবারের লোকজন। তাঁদের মঞ্চেও ডাকা হতে পারে বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। |