সন্তোষপুরের ছায়া বহরমপুরেও
আব্দার খারিজ
ন্তোষপুরের ঋষি অরবিন্দ বালিকা বিদ্যালয়ের ঘটনায় সংক্রামিত হল বহরমপুরও। মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষায় পাশ করিয়ে না দিলে ‘সন্তোষপুর বানিয়ে’ দেওয়ার হুমকি দিয়ে বুধবার বহরমপুরের গোরাবাজার বিজয় কুমার উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকাদের তালাবন্দি করে রাখেন ফেল করা ছাত্রছাত্রী ও তাঁদের অভিভাবকরা। কিন্তু ওই চাপের কাছে নতি স্বীকার করেননি ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকাদের কেউই। অবশেষে পুলিশ পৌঁছলে শিক্ষকদের অনমনীয় মনোভাবের কাছে হার মেনে অভিভাবকরাই তালা খুলে দেন। ফলে ঘণ্টা দু’য়েক তালাবন্দি থাকার পর এ দিন সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটা নাগাদ শিক্ষক শিক্ষিকারা বন্দিদশা থেকে মুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরতে পারেন।বহরমপুর শহর থেকে এক কিলোমিটার দূরে হরিদাসমাটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ওই স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মোট ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ১৮০০ এবং শিক্ষিকশিক্ষিকার সংখ্যা ২৫। ওই স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক প্রদীপ মণ্ডল বলেন, ‘‘উচ্চমাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষায় দ্বাদশ শ্রেণির সব ছাত্রছাত্রী উত্তীর্ণ হওয়ায় তাদের নিয়ে কোনও সমস্যা হয়নি। মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য এ বার টেস্ট পরীক্ষায় বসেছিল মোট ১১৮ জন ছাত্রছাত্রী। তার মধ্যে ৩২ জনকে কোনও ভাবেই পাশ করানো যায় না। কারণ, লিখিত ৯০ নম্বরের পরীক্ষায় তারা ২,৩, ৫, ৭ এই রকম নম্বর পেয়েছে। তারা এ বছর কোনও ভাবেই মাধ্যমিক পাশ করতে পারবে না। তাই শিক্ষকশিক্ষিকরা মিটিং করে ওই ৩২ জনকে এ বারও দশম শ্রেণিতে রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। শিক্ষকদের ওই সিদ্ধান্তে আখেরে ওই ছাত্রছাত্রীদেরই লাভ হবে।” প্রদীপবাবু বলেন, “কিন্তু সন্তোষপুরের ঋষি অরবিন্দ বালিকা বিদ্যালয়ের ঘটনায় উৎসাহিত হয়ে ফেল করা ছাত্রছাত্রী ও তাদের অভিভাবকরা ৩২ জনকে পাশ করিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার জন্য পরিচালন সমিতির পক্ষ থেকে প্রধান শিক্ষককে অনুরোধ করা হয়। ফলে তিনি শিক্ষক শিক্ষিকাদের নিয়ে এ দিন ফের মিটিং করেন। ৩২ জন লেখাপড়ায় এতটাই দুর্বল যে তারা মাধ্যমিকে কোনও মতে পাশ করতে পারবে না বলে শিক্ষক শিক্ষিকারা মনে করেন। ফলে সে কথা জানিয়ে ওই মিটিং থেকেই জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শককে প্রধানশিক্ষক ফোন করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে মতামত জানতে চান। শিক্ষকদের সঙ্গে সহমত প্রকাশ করে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকও পাশ না করানোর পক্ষে মত দেন।” তার পরই স্কুল ঘরে জনা পঁচিশেক শিক্ষকশিক্ষিকাকে আটকে রেখে বাইরে তালা দেয় ওই ছাত্রছাত্রীরা ও তাদের মায়েরা। গোরাবাজার বিজয় কুমার উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক মলয় চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কি কারণে ফেল করা ছাত্রছাত্রীদের পাশ করানো যাবে না সেই কথা আমরা ওই ছাত্রছাত্রী ও তাদের অভিভাবকদের বোঝানোর চেষ্টা করি। কিন্তু ব্যর্থ হই। তবুও শিক্ষার স্বার্থে আমরা আমাদের সিদ্ধান্তে অনঢ় থাকি।” এ বার তারা মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসলে পাশ করতে পারবে না, ফলে তারা নিয়মিত ছাত্র থাকার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে বলে শিক্ষকরা বোঝাতে থাকেন। প্রধানশিক্ষক মলয়বাবু বলেন, “ফেল করা ছাত্রছাত্রীরাই ভাল রেজাল্ট করতে পারবে বলে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সে কথা বোঝার বদলে তারা ‘সন্তোষপুর বানিয়ে’ দেওয়ার হুমকি দেয়।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.