মেদিনীপুর সংশোধনাগার
রাতভর গাছে ঝুলে বন্দির দেহ
কোন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে দেহ নামানো হবে, জুডিশিয়াল না এক্সিকিউটিভ এই টানাপোড়েনে রাতভর গাছেই ঝুলে রইল মৃতদেহ। মঙ্গলবার দুপুরে মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার চত্বরেই ওই গাছে এক বন্দির দেহ ঝুলতে দেখা যায়। তারপর রাতভর গাছে ঝুলে থাকার পর এক এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে সেই দেহ নামানো হয় বুধবার দুপুরে। এই ঘটনায় বিড়ম্বনায় পড়েছে সংশ্লিষ্ট সব মহল। জেল সুপার খগেন্দ্রনাথ বীরের স্বীকারোক্তি, “একটা সমস্যা হয়েছিল। তাই মঙ্গলবার দেহ নামানো সম্ভব হয়নি। এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতেবুধবার দুপুরে দেহ নামানো হয়েছে।” কী সমস্যা? জেল সুপার অবশ্য তার জবাব দেননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলরক্ষী বলেন, “এমন ঘটনা অমানবিক।”
মঙ্গলবারই মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের সাজাপ্রাপ্ত বন্দি অনুপ হাইতের দেহ উদ্ধার হয়। অনুমান তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন। ধর্ষণের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত অনুপের বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না থানার দক্ষিণ হারকুলি গ্রামে। মঙ্গলবার দুপুরে অভিযুক্তের সংখ্যা মিলিয়ে দেখার সময় ধরা পড়ে, একজন কম রয়েছে। এরপরই খোঁজ শুরু হয়। পরে সংশোধনাগার চত্বরের এক গাছে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। সংশোধনাগার চত্বরে একটি সেলের পিছনে দু’টি গোডাউন রয়েছে। গোডাউন দু’টির মাঝে একটি কাঁঠাল গাছ রয়েছে। সেই গাছেই তাঁর দেহ ঝুলতে দেখা যায়।
অনুপ প্রথমে তমলুক সংশোধনাগারে ছিলেন। আদালত তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে ১০ বছর কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশের পরই তাঁকে মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে নিয়ে আসা হয়েছিল। চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে এখানে ছিলেন অনুপ। মানসিক অবসাদেই তিনি গলায় মাফলারের ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিক অনুমান।
নিয়মমাফিক ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সেই মতো মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে জেলা প্রশাসন ও বিচার বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করেন জেল কর্তৃপক্ষ। তখন থেকেই জুডিশিয়াল এবং এক্সিকিউটিভ, এই দুইয়ের মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয়। এক্সিকিউটিভের তরফে জানানো হয়, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতি প্রয়োজন। আবার জুডিশিয়ালের তরফে জানানো হয়, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতি প্রয়োজন। শেষমেশ মেদিনীপুরের সিজেএম কল্লোল দাস লিখিত ভাবে জানান, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মৃতদেহ উদ্ধার হবে। তারপরই দেহ উদ্ধারের প্রক্রিয়া শুরু হয়। বুধবার দুপুরে সংশোধনাগারে পৌঁছন এক এক্সিকিউটিভ অফিসার। পরে গাছ থেকে ঝুলন্ত দেহ নামানো হয়। দিনের শেষে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকও মানছেন, “এতক্ষণ ধরে এক বন্দির দেহ গাছে ঝুলে থাকল। এমন ঘটনা না ঘটলেই ভাল হত।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.