নিজস্ব সংবাদদাতা • আরামবাগ |
স্কুল পরিচালন কমিটির সঙ্গে টিচার ইনচার্জের গোলমালের জেরে গত কয়েক মাস ধরেই ডামাডোল চলছে ঐতিহ্যবাহী গোঘাট হাইস্কুলে। পঠন-পাঠন বিধ্বস্ত। মাঝে মধ্যেই গোলমালের জেরে ছাত্রছাত্রীরা স্কুল ছেড়ে পালায়। মঙ্গলবার এমনই একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে স্কুল পরিচালন কমিটির তরফে টিচার ইনচার্জ উদয়মনি ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের হল। আরামবাগের অতিরিক্ত জেলা স্কুল পরিদর্শকের অফিসেও একই নালিশ জানানো হয়। স্কুলের ‘হৃত গৌরব’ ফিরিয়ে আনার দাবিতে সরব হয়েছেন অভিভাবকেরাও। প্রায় শ’পাঁচেক অভিভাবকের স্বাক্ষর সম্বলিত ডেপুটেশন জমা পড়েছে অতিরিক্ত জেলা স্কুল পরিদর্শকের অফিসে। অতিরিক্ত জেলা পরিদর্শক গীতা জোয়ারদার বলেন, “বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে।”
পঠন-পাঠন ও সার্বিক উন্নয়নের নিরিখে আরামবাগ মহকুমায় প্রথম সারিতে আছে ১৯৪৭ সালে প্রতিষ্ঠিত গোঘাট হাইস্কুল। স্কুল ও স্থানীয় সূত্রের খবর, মাস তিনেক আগে অবসর নেন প্রধান শিক্ষক পরেশ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অবর্তমানে ইংরেজির শিক্ষক উদয়মনি ভট্টাচার্যকে টিচার ইনচার্জ হিসাবে দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। স্কুল পরিচালন কমিটির সভাপতি সমীরকুমার দে বলেন, “শিক্ষকদের পক্ষে পরিচালন কমিটির কাছে আবেদন ছিল, উদয়বাবুকে এই গুরুদায়িত্ব দিলে তিনি তাঁর উচ্ছ্ৃঙ্খল জীবন-যাপন থেকে হয়তো ফিরে আসবেন। আমরাও চেয়েছিলাম, তাঁর মতো দক্ষ শিক্ষককে স্কুল স্বাভাবিক অবস্থায় পেলে স্কুলেরই সার্বিক শ্রীবৃদ্ধি হবে।’’ সভাপতির অভিযোগ, “আমাদের আশা-ভরসা জলাঞ্জলি দিয়েছেন উদয়বাবু। ওই চেয়ার পেয়ে মদ্যপানের মাত্রা বাড়িয়ে দিলেন তিনি। মদ্যপ অবস্থায় স্কুলে এসে কখনও শিক্ষকদের মারধর করেছেন, কখনও আবার স্কুলের পথে রাস্তায় পড়ে থেকেছেন। এই রকম পরিবেশের বিরুদ্ধে অভিভাবকেরা প্রায়ই ডেপুটেশন দিচ্ছেন। মঙ্গলবার উনি মাত্রা ছাড়ানোয় থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।” স্কুল পরিচালন কমিটির সভাপতি সমীরবাবু ও সম্পাদক অরুণ ঘোষ উদয়বাবুর বিরুদ্ধে মারধর ও উচ্ছ্ঙ্খল আচরণের অভিযোগ করেছেন থানায়।
স্কুল সূত্রের খবর, দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার স্কুল কমিটির সভাপতির ঘরে কিছু ছাত্র হামলা করে। কিছু ক্ষণ পরেই স্কুল কমিটির সম্পাদককে স্কুলের মাঠেই মারধর করা হয়। দু’টি ঘটনাই উদয়বাবুর নেতৃত্বে ঘটেছে বলে দাবি করেছেন অরুণবাবু ও সমীরবাবু। স্কুল পরিচালন কমিটি পুলিশ ডাকে। পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। কী বলছেন অভিযুক্ত শিক্ষক? উদয়বাবুর বক্তব্য, “সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা। পরিচালন কমিটির সম্পাদক ও সভাপতি চুরি করতে পারছেন না বলেই আমাকে তাড়াতে চাইছেন।” |