নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
মায়ের ভিটেয় ফিরে স্কুল খুলেছিলেন জিমি ব্রাউন বড়গোঁহাই। গোলাঘাট জেলার সরুপথারে, সেই স্কুলের পাশেই সপরিবারে থাকতেন তিনি। আজ সকালে স্কুল চত্বরেই মিলল জিমি (৩৫), তাঁর স্ত্রী মনদীপ (৩০) ও তাঁদের ১১ বছরের মেয়ে, রোজের দগ্ধ মৃতদেহ। কারা, কেন শিশুকন্যা-সহ গোটা পরিবারকে এমন নৃশংসভাবে হত্যা করল তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশায় পুলিশ।
বরবিল বেভেজিয়া গ্রামটি সরুপথার থেকে ১২ কিলোমিটার ভিতরে। চার বছর আগে উজানি অসমের সদিয়া থেকে সেখানে আসেন ব্রাউন পরিবার। জিমির মা ছিলেন ওই গ্রামেরই মেয়ে। সেই সূত্র ধরেই গ্রামের বাইরের দিকে থাকতে শুরু করেন জিমি। গড়ে তোলেন ‘অসম ট্রেনিং ইংলিশ স্কুল’। পাশাপাশি, মোবাইলের রিচার্জ কুপনও বিক্রি করতেন তিনি। জিমির দুই মেয়ে গুয়াহাটিতে ঠাকুমার কাছেই থাকত। সপ্তাহখানেক আগে ছোট মেয়ে রোজ গ্রামের বাড়িতে, বাবা-মায়ের কাছে এসেছিল। আজ সকালে গ্রামরক্ষী বাহিনীর প্রধান কেশো বড়ো পুলিশে খবর দেয়, স্কুলের সামনে ব্রাউন পরিবারের তিনজনের ভষ্মীভূত দেহ পড়ে রয়েছে। পুলিশ জানায়, দেহগুলি এমনভাবে পুড়ে গিয়েছে যে চেনারও উপায় ছিল না। ছাইয়ের গাদা থেকে দেহাবশেষ ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে পুলিশের সন্দেহ, আগে হত্যা করে তারপর তিনটি দেহ স্কুল চত্বরে পুড়িয়ে দেয় আততায়ীরা। স্কুলের তিনশো মিটার পরিধির মধ্যে অন্য কোনও বাড়ি নেই। গ্রামবাসীরা পুলিশকে জানায়, কী হয়েছে সেই বিষয়ে তাঁদের কোনও ধারণাই নেই।
তবে স্থানীয় সূত্রে পুলিশ জানতে পেরেছে, স্থানীয় গ্রামবাসীদের সঙ্গে জিমির সম্পর্ক ভাল ছিল না। আদিবাসী জঙ্গি গোষ্ঠী ‘আনলা’-র সঙ্গেও বিবাদে জড়িয়ে পড়েন তিনি। বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও, বছর দুয়েক আগে স্থানীয় এক ছাত্রীকে বিয়ে করতে চাওয়ায় জিমির সঙ্গে গ্রামবাসীদের একাংশের মনোমালিন্য শুরু হয়। মাসখানেক আগেও কয়েকজন গ্রামবাসীর সঙ্গে তাঁর হাতাহাতি হয়েছিল। তবে পুলিশের মতে, ঘটনার পিছনে জমি-বিবাদও থাকতে পারে।
|