|
|
|
|
বিহার পুলিশের ঢিলেমির মাসুল গুনছে ঝাড়খণ্ড |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রাঁচি |
ঝাড়খণ্ড প্রশাসনের উপরে বড় মাপের আঘাত হানতে ঘুরে ফিরে গিরিডিকেই বেছে নিচ্ছে মাওবাদী জঙ্গিরা। গত বছর সাতেকের ঘটনা বিশ্লেষণ করে সম্প্রতি এমনই সিদ্ধান্তে এসেছে রাজ্যের গোয়েন্দা পুলিশ। তাঁদের অভিযোগ, গিরিডির লাগোয়া বিহারের জামুই জেলার পাহাড় জঙ্গল বরাবরই মাওবাদী জঙ্গিদের খাস এলাকা। জামুইকে জঙ্গি মুক্ত করার জন্য যে অভিযান চালানো উচিত বিহার তা করেনি। ফল ভুগছে ঝাড়খণ্ড।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, ভৌগোলিক অবস্থানের সুযোগ নিয়েই বারবার গিরিডিকে টার্গেট করছে মাওবাদীরা। অনায়াসে সেখানে পরিকল্পনা মাফিক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে জঙ্গিরা। অপরাধ করে আন্তঃরাজ্য সীমা পার হয়ে জামুইয়ে গিয়ে ঘাঁটি গাড়ছে তারা। ঝাড়খণ্ড পুলিশের এক সূত্রের বক্তব্য, গত ৭ নভেম্বর গিরিডিতে প্রিজন-ভ্যানের উপর অতর্কিতে জঙ্গি হামলার ঘটনাও ঘটেছিল ওই একই ছকে। সে দিন গিরিডির প্রিজন-ভ্যানের উপরে হামলা চালিয়ে বৃষ্টির মতো গুলি বর্ষণ করে মাওবাদীরা। দলের বিহার-ঝাড়খণ্ড বিশেষ এরিয়া কমিটির কম্যান্ডার সহদেব সোরেন ওরফে পারভেজ-সহ বিচারাধীন ৮ জন জঙ্গিকে পুলিশের হেফাজত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় তারা। জঙ্গিদের গুলিতে তিন পুলিশকর্মীর সঙ্গে মৃত্যু হয়েছিল প্রিজন-ভ্যানে থাকা এক বিচারাধীন বন্দিরও। পলাতক বিচারাধীন বন্দি-সহ ওই আট জঙ্গির হদিশ এখনও মেলেনি।
পুলিশ জানায়, এর আগে চলতি বছরের ২৪ জুলাই গিরিডির পুলিশ লাইনে নির্মীয়মাণ ভবনে অতর্কিতে হামলা চালায় মাওবাদী জঙ্গিরা। মাইন বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নবনির্মিত ভবনের একাংশ উড়িয়ে দেয় তারা। ভবনের একাংশ ভেঙে পড়ায় ঘুমন্ত অবস্থায় দুজন নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়। পুলিশ জানিয়েছে, গত সাত বছরে গিরিডিতে মাওবাদী জঙ্গিদের বড় ধরনের আক্রমণের ঘটনা প্রথম ঘটে ২০০৫ সালে। গিরিডির হোমগার্ড প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আক্রমণ চালিয়ে জঙ্গিরা ১৮৩ টি রাইফেল লুঠ করে। কাজ হাসিল করে অবাধে ওই জঙ্গলের পথেই জামুইয়ের ঘাঁটিতে আশ্রয় নেয় তারা। এর পর মাওবাদীদের বড় মাপের হামলা হয়েছে ২০০৭ সালে। দেওরি থানা এলাকায় চিলখালিতে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলাকালীন অতর্কিতে হামলা চালায় জঙ্গিরা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত শ্রোতাদের লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি ছোড়ে। গুলিতে নিহত হন রাজ্যের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী তথা জেভিএম নেতা বাবুলাল মরান্ডির ছেলে অনুপ-সহ ১৭ জন।
পুলিশ সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে ঝাড়খণ্ডে মাওবাদী জঙ্গি দমনে ১৬ ব্যাটেলিয়ন মোতায়েন রয়েছে। বিহার সীমানা লাগোয়া গিরিডি, চাতরা, কোডারমা, পলামু-সহ মাওবাদী প্রভাবিত অঞ্চলের নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে আরও দুই ব্যাটেলিয়ন অতিরিক্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী চাওয়া হয়েছে। |
|
|
|
|
|