দু’টি বাসের মুখোমুখি ধাক্কায় জখম ৬০ যাত্রী
বাসস্টপে দাঁড়িয়েছিল যাত্রিবাহী বাস। তাকে পাশ কাটিয়ে যেতে চাওয়া একটি বাসের সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কা লাগল উল্টো দিক থেকে আসা অপর একটি বাসের। বুধবার সকালে মঙ্গলকোটের বুঁইচিতে এই দুর্ঘটনায় জখম হন মোট ৬০ জন যাত্রী। তাঁদের মধ্যে ৪৮ জনকে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে ৮ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুঁইচি বাসস্টপে এ দিন সকাল পৌনে ১০টা নাগাদ নতুনহাট-কাটোয়া রুটের একটি বাস যাত্রী তোলার জন্য দাঁড়িয়েছিল। পিছন থেকে আসছিল বর্ধমান থেকে গুসকরা ও নতুনহাট হয়ে কাটোয়াগামী বাস। সেটি বুঁইচিতে দাঁড়ায় না। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পাশ কাটিয়ে যেতে গিয়ে প্রথমে দাঁড়িয়ে থাকা বাসটিকে সামান্য ধাক্কা মারে কাটোয়াগামী বাসটি। ইতিমধ্যে কাটোয়া থেকে নতুনহাটমুখী একটি বাস সেখানে এসে পড়লে দু’টি বাসের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। স্থানীয় ব্যবসায়ী দীপক প্রামাণিক, বাবুরাম বৈরাগ্যরা বলেন, “হঠাৎ খুব জোরে শব্দ শুনতে পাই। নতুনহাটমুখী বাসটি বেশ কয়েক মিটার পিছনে জমিতে গিয়ে পড়ে। আর কাটোয়াগামী বাসটি আড়াআড়ি ভাবে দাঁড়িয়ে পড়ে।” দু’টি বাসই ভেঙেচুরে গিয়েছে। দু’জন চালকই গুরুতর জখম হয়ে কাটোয়া হাসপাতালে ভর্তি।
দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাস। বুধবার মঙ্গলকোটের বুঁইচি গ্রামে তোলা।
পুলিশ জানায়, যাত্রীদের মধ্যে ২১ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। জখমদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দারা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন বলে জানান কাটোয়া থানার ওসি সনৎ দাস। পুলিশ জানায়, দাঁড়িয়ে থাকা বাসটি সব যাত্রীকে নামিয়ে আহতদের নিয়ে চলে যায় হাসপাতালে। এ ছাড়া দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাওয়া আশপাশের তিন-চারটি গ্রামের বাসিন্দারাও আহতদের নানা গাড়িতে করে হাসপাতালে পাঠায়।
কাটোয়াগামী বাসে চালকের পাশেই বসেছিলেন আউশগ্রামের রঞ্জিত মল্লিকরায়। মহকুমা হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে তিনি বলেন, “বাসটি খুব জোরে যাচ্ছিল। দাঁড়িয়ে থাকা বাসটিকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সময়ে ধাক্কা মেরে নিয়ন্ত্রণ হারান চালক। তার পরেই সামনে থেকে আসা বাসটির সঙ্গে ধাক্কা লাগে।” নতুনহাটগামী বাসে চড়ে অফিস যাচ্ছিলেন মঙ্গলকোট ব্লক অফিসের কর্মী রবিউল হক শেখ। তিনি বলেন, “ধাক্কা খেয়ে আমাদের বাসটি দুলতে দুলতে পিছিয়ে গিয়ে জমির উপরে পড়ল।”
বর্ধমান মেডিক্যালে।
বাসযাত্রীরা অভিযোগ করেন, বাসস্ট্যান্ড থেকে নির্দিষ্ট সময়ে বেরোলেও বাসগুলি মাঝরাস্তায় যাত্রী তোলার তাগিদে ধীরেধীরে চলে। শেষ মুহূর্তে জোরে চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পড়ে। এ দিন আহতদের দেখতে কাটোয়া হাসপাতালে যান স্থানীয় কংগ্রেস বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। গুরুতর আহতদের বর্ধমান মেডিক্যালে স্থানান্তরের সময়ে অ্যাম্বুল্যান্স না-পেয়ে ক্ষুব্ধ হন পরিজনেরা। তাঁদের অভিযোগ, হাসপাতাল চত্বরে ২৪ ঘণ্টাই অ্যাম্বুল্যান্স থাকে। দুর্ঘটনার খবর এলেই আর সেগুলির দেখা মেলে না। এসডিপিও (কাটোয়া) ধ্রুব দাস বলেন, “পুলিশ অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করেছে। পরবর্তী কালে যাতে এমন সমস্যা আর না হয়, সে জন্য মহকুমাশাসককে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হবে।”

—নিজস্ব চিত্র



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.