কর্মী থাকার কথা ৯। আছেন ৬ জন। তার মধ্যে ৩ জনের বদলির নির্দেশ আসায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আঞ্চলিক ব্লাড ব্যাঙ্কের কাজকর্ম ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সুষ্ঠু ভাবে আঞ্চলিক ব্লাড ব্যাঙ্ক চালাতে যেখানে ১৪/১৫ জন কর্মী দরকার সেখানে ৬ জনকে দিয়ে কাজ চালানো সম্ভব হচ্ছে না বলে ব্লাড ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। কর্মীর অভাবে এমন পরিস্থিতি যে সোমবার থেকে রক্তের বিভিন্ন উপাদান পৃথকীকরণের কাজ বন্ধ হয়ে পড়েছে। থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগীদের ‘ব্লাড ব্যাঙ্ক’ থেকে নিখরচায় রক্ত সরবরাহ করা হয়। এ দিন থেকে তা দেওয়া সম্ভব হবে না বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। তা ছাড়া বিভিন্ন রক্ত সংগ্রহের শিবির হলে ব্লাড ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে আগাম জানাতে হয়। সেই মতো নির্দিষ্ট দিনে তাঁরা ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান, চিকিৎসক পাঠান। কর্মীর অভাবে শিবিরের উদ্যোগকারীদের তাই নিষেধ করা হচ্ছে। রবিবার এবং সোমবার সে কারণে নকশালবাড়ি এবং শিলিগুড়িতে অন্তত ৩টি শিবির বাতিল করতে হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা ব্লাড ব্যাঙ্ক খোলা রাখার কথা থাকলেও কর্মীর অভাবে এখন থেকে রাতে কাজ করা সম্ভব নয় বলে জানানো হয়েছে। উত্তরবঙ্গে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের ডিরেক্টর মৃদুময় দাস সমস্যার কথা রাজ্যের স্বাস্থ্য বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্যকে জানিয়েছেন। রুদ্রবাবু বলেন, “বিষয়টি জেনেই রাজ্যের স্বাস্থ্য কর্তাকে জানানো হয়েছে। আশা করি স্বাস্থ্য দফতর ব্যবস্থা নেবে।” শিলিগুড়ির সূর্যনগর সমাজ কল্যাণ সংস্থা, ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স ফোরামের মতো সংস্থার পক্ষ থেকেও সমস্যার কথা মুখ্যমন্ত্রীর দফতর-সহ স্বাস্থ্য দফতর, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবকে জানানো হয়েছে। তা ছাড়া রক্তরস, প্লাজমা, অনুচক্রিকার মতো রক্তের নানা উপাদান আলাদা করার ব্যবস্থা উত্তরবঙ্গের সরকারি হাসপাতালগুলির মধ্যে একমাত্র মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে। ছয়টি জেলার বাসিন্দারা এ ক্ষেত্রে তাই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আঞ্চলিক ব্লাড ব্যাঙ্কের উপর অনেকেই নির্ভরশীল। এই অবস্থা কিছু দিন চললেই রক্ত সঙ্কট চরমে উঠবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী এ দিন বলেন, “বিষয়টা জেনেছি। যে তিন জনকে বদলি করা হয়েছে, তাঁরা নিজেরাই বদলি চেয়েছিলেন। আজ একটি নির্দেশের মাধ্যমে বিকল্প কর্মী না আসা পর্যন্ত তাঁদের ওখানেই কাজ করতে বলা হয়েছে।” তবে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানানো হয়েছে, এখনও এই ধরনের নির্দেশ তাদের কাছে আসেনি। |