আকালিপুরে ডায়েরিয়ার প্রকোপ, আক্রান্ত ১৪
প্রশাসনিক উদাসীনতায় ডায়েরিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে-- এমনই অভিযোগ উঠল নলহাটি ২ ব্লকের ভদ্রপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে আকালিপুর গ্রামে। স্থানীয় ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকদের মতে, চারদিন থেকে ওই গ্রামে ডায়েরিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৪ জন। যাঁদের মধ্যে তিনজন লোহাপুরে অবস্থিত নলহাটি ২ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি ছিলেন। এ ছাড়া, তিনজন রামপুরহাট মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাকি ৮ জনের গ্রামে চিকিৎসা চলছে। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ১৪ জন বললেও গ্রামবাসীদের মতে আক্রান্তের সংখ্যা ২৫ জন। গ্রামবাসীদের দাবি, ইতিমধ্যে গ্রামের বাসিন্দা মিনতি ভুঁইমালি নামে এক গৃহবধূ রামপুরহাট মহকুমা হাসপাতালে ডায়েরিয়া আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হওয়ার পর সেখানে মারা যান। রামপুরহাট মহকুমা হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই বধূ ১০ নভেম্বর হাসপাতালে ভর্তি হন। ওই দিনই তিনি হাসপাতালে মারা যায়। মৃত্যুর কারণ হিসেবে ডেথ রেজিষ্টার খাতায় লেখা আছে সিভিএ-র জন্য মৃত্যু হয়েছে।
নলহাটি ২ ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক বাবুল রহমানের দাবি, “ওই বধূ স্ট্রোকে মারা গিয়েছেন।” তিনি আরও বলেন, “আকালিপুর গ্রামে জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগ থেকে পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহ প্রকল্পে গ্রামের মধ্যে দিয়ে যাওয়া পাইপ লাইনে ফাটল ধরে যাওয়ার জন্য বেশ কিছু দিন তাতে নোংরা জল ঢুকে পড়ছিল।” ওই জল খেয়েই এলাকায় ডায়েরিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে অনুমান করছেন বিএমওএইচ বাবুল রহমান। নলহাটি ২ ব্লকের বিডিও গঙ্গাধর দাসও একই কথা বলেছেন। তিনি আরও জানান, রবিবার খবর পাওয়ার পর জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগের নির্বাহী বাস্তুকারকে অবিলম্বে পাইপ লাইন সংস্কার করার জন্য বলা হয়েছে।
জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগের নির্বাহী বাস্তুকার অর্ধেন্দু দত্ত বলেন, “দফতর থেকে কোনও খবর আমার কাছে আসেনি। বিডিও-র কাছ থেকে খবর পেয়ে ভদ্রপুর জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগের নির্বাহী বাস্তুকারদের বিষয়টি দেখতে বলেছি এবং জল সরবরাহের ক্ষেত্রে ক্লোরিন মিশ্রিত জল সরবরাহের ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’’ এ দিকে ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত রামপুরহাট মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সুদীপ্ত ভট্টচার্য, রিনা চট্টরাজ, সরস্বতী মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “গ্রামে সরকারি নলকূপগুলি দীর্ঘদিন সংস্কার হয়নি। যে সমস্ত সরকারি নলকূপগুলি ঠিক আছে, সেই সমস্ত নলকূপগুলিতে এমন লালচে জল ওঠে, যে খাওয়া যায় না। তাই গ্রামবাসীরা জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগ থেকে সরবরাহকৃত পানীয় জল খাচ্ছেন।” গ্রামবাসী জীবন মণ্ডল, উত্তম ভট্টচার্যদের অভিযোগ, “গ্রামে পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বাস করেন। আছেন আশাকর্মীরাও। অথচ চারদিন ধরে ডায়েরিয়া দেখা যাওয়ার পর স্বাস্থ্যকর্মীদের টনক নড়েছে।” এক আশাকর্মী চিন্তামণি ভট্টচার্য বলেন, “আমার এলাকায় রবিবার ডায়েরিয়া দেখা দিয়েছে। ওই দিনই স্বাস্থ্যকর্মীদের খবর দিয়েছি। স্বাস্থ্যকর্মীরা কাজ করছেন।” আকালিপুরের বাসিন্দা ভদ্রপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান দিলীপ মণ্ডল বলেন, “আমি সোমবার বিষয়টি প্রধানকে জানিয়েছি।” তিনি অবশ্য নলকূপ সংস্কার না হওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়, দাবি করে বলেন,“গ্রামের ১৭টি নলকূপ প্রতি বছরই সংস্কার করা হয়।
ভদ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের চিত্রা সিমলান্দি বলেন, “গ্রামবাসীদের অভিযোগ ঠিক নয়। পঞ্চায়েতের খাতা দেখলেই বোঝা যাবে কতবার সরকারি নলকূপগুলি সংস্কারের পাশাপাশি পরীক্ষা করা হয়েছে। ” গ্রামে এখন পর্যন্ত মেডিক্যাল ক্যাম্প করা হয়নি কেন? সে প্রশ্নের উত্তরে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক বাবুল রহমান বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাজ করছেন। মেডিক্যাল ক্যাম্প দরকার পড়লে করা হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.