জেলা পরিবহণ দফতরকে কিছু না জানিয়ে বিধি ভেঙে ব্যাক্তিগত মালিকানার গাড়িকে জঙ্গল সাফারির ব্যবসার কাজে ব্যবহার করতে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বন দফতরের বিরুদ্ধে। ফলে একদিকে যেমন রাজ্য সরকারের কর ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে তেমনই পরিবহণ দফতরের ফিটনেস সার্টিফিকেট না থাকা ও চালকদের জঙ্গলে চালানোর যোগ্যতা রয়েছে কি না তা যাচাই করার উপায় না থাকায় পর্যটকদের জীবনের ঝুঁকিও বেড়ে গিয়েছে। রবিবার গরুমারার জঙ্গলের দুর্ঘটনার পরে ওই আশঙ্কা বেড়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, ওই গাড়িটি বাণিজ্যিক ভাবে চালানোর অনুমতি নেই। ফলে গাড়িটি যান্ত্রিক দিক দিয়ে কতটা ত্রুটিমুক্ত ও চালক কতটা দক্ষ তা যাচাই হয়নি। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক স্মারকী মহাপাত্র বলেন, “ব্যবসায়িক কাজে ব্যাক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করা উচিত নয়। গরুমারার ঘটনাটি শুনেছি। প্রশাসনের তরফে দ্রুত কিছু পদক্ষেপ করা হবে।” তবে রবিবারের দুর্ঘটনার পরে বন দফতর গোটা বিষয়টির থেকেই হাত গুটিয়ে নিয়েছে। সোমবার জলপাইগুড়ি বণ্যপ্রান ২ বিভাগের ডিএফও সুমিতা ঘটক বলেন, “এটা ঠিক যে কিছু গাড়ি ব্যাক্তিগত মালিকানার রয়েছে। যাদের ব্যবসায়িক লাইসেন্স নেই। কিন্তু আমরা লাইসেন্স করিয়ে নিতে বলেছি। এ বিষয়ে যদি অঘটন ঘটে তার দায় বন দফতরের নয়।” স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের অভিযোগ, বাণিজ্যিক ভাবে চালানোর অনুমতি নেই জেনেও সেগুলিকে সাফারিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে কেন তা স্পষ্ট হওয়া দরকার। জেলা পরিবহণ আধিকারিক পেমা ওয়াংদি ডুকপা বলেন, “ব্যবসায়িক লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি ব্যবহার করায় সরকারি কর ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে। রাজস্বের ক্ষতি হচ্ছে। কোনও সরকারি অফিসার বেআইনি কাজের অনুমতি দিতে পারেন না।” এই ব্যাপারে ডিএফও সুমিতা ঘটকের প্রশ্ন, “অন্য জঙ্গলে যে গাড়ি সাফারিতে ব্যবহার হয় তার সবগুলির কী ব্যবসার লাইসেন্স আছে?” পরিবহণ দফতরে কারিগরি আধিকারিক সুশান্ত অধিকারী জানান, যে গাড়ি ব্যবসার কারণে যাত্রী ওঠাবে, তার চালকের ড্রাইভিং স্কুলের সার্টিফিকেট জরুরি। পাশাপাশি তাঁরা যে যাত্রীদের নিয়ে নিরাপদে গাড়ি চালাতে পারেন তাও পরীক্ষা করা হয়। গরুমারার সাফারি করা অনেক গাড়িরই ব্যবসায়িক লাইসেন্স নেই, তাই চালকদের যোগ্যতা রয়েছে তা দেখার উপায় আমাদের কাছে নেই।” |