শাসক দলের প্রতীকে লটারি, নালিশ
নিজেদের ক্লাবের ‘ডোনেশন কুপন কনটেস্ট’ তথা লটারির টিকিটে দলীয় প্রতীক ‘ঘাসফুল’ চিহ্ন ছাপার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল কংগ্রেসের একদল নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। শিলিগুড়ির উপকণ্ঠে বাগডোগরায় ঘটনাটি ঘটেছে। সেখানকার স্টেশন মোড় যুব সঙ্ঘের তরফে ওই লটারি হচ্ছে। ১০০ টাকা দামের ওই লটারির টিকিটে তৃণমূলের দলীয় প্রতীকও ছাপা হয়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের অনেকেরই অভিযোগ, শাসক দলের দলের চিহ্ন থাকায় অনেকেই ওই টিকিট কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। শুধু তা-ই নয়, ওই লটারি তথা কনটেস্ট করানোর জন্য সরকারি অনুমতি নেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ। দলের নেতা-কর্মীদের একাংশ এ ভাবে লটারির টিকিটে ‘ঘাসফুল’ চিহ্ন ব্যবহার করছেন, এই অভিযোগ পেয়ে উদ্বিগ্ন তৃণমূল কংগ্রেসের উত্তরবঙ্গের কোর কমিটির চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। মন্ত্রী বলেন, “দলের নির্দেশ ছাড়া প্রতীক কোথাও ব্যবহার করা যায় না। ওই লটারির কুপন আমি দেখেছি। উদ্যোক্তা সংস্থার সঙ্গে যুক্ত দলের লোকজনদের কৈফিয়ত তলব করা হয়েছে। জবাব পেলে এই ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” পাশাপাশি কারও অনুমতি ছাড়া লটারির আয়োজন হয়ে থাকলে পুলিশ-প্রশাসনকে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। শিলিগুড়ির অতিরিক্ত ডেপুটি পুলিশ কমিশনার আভারু রবীন্দ্রনাথ বলেন, “ওই ধরনের কোনও লটারির অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলে আমার জানা নেই। বিশদে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বস্তুত, দুর্গাপুজোর সময় থেকেই শিলিগুড়িতে বেআইনি লটারির কারবার জাঁকিয়ে বসে। পুজোর পরে অভিযোগ পেয়ে পুলিশ শহর ও লাগোয়া এলাকার সব বেআইনি লটারির কারবার বন্ধ করে দেয়। পুলিশের সন্দেহ, লটারির নামে শহর ও লাগোয়া এলাকায় অন্তত পক্ষে ৫ কোটি টাকা তোলা হয়েছে। ঘটনার মূলত অভিযুক্তরদের এক জন ধরা পড়লেও বাকিরা এখনও অনেকে ফেরার। তৃণমূল, কংগ্রেস, সিপিএম প্রায় সব দলেরই কিছু লোক ওই লটারির সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে যুক্ত বলে পুলিশ জানতে পারে। ওই সময়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদ্বেগ প্রকাশ করে সব বেআইনি লটারির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
তা সত্ত্বেও শিলিগুড়ির বাগডোগরার অদূরে ক্লাবের নামে কুপন ছাপিয়ে তা বিক্রি শুরু করে ওই ক্লাব। কিন্তু, অনুমতি ছাড়া ওই লটারির টিকিট প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে কেন? ক্লাবের তরফে যুগ্ম আহ্বায়ক রঞ্জন ভট্টাচার্যের দাবি, “আমরা সদস্য ও শুভানুধ্যায়ীদের মধ্যে ওই কুপন বিক্রি করছি। সে জন্য অনুমতির দরকার নেই।” দ্বিতীয়ত, টিকিট কিনতে বাধ্য করার জন্য দলীয় প্রতীক ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে কেন? রঞ্জনবাবুদের যুক্তি, “আসলে আমাদের থিম হল গাছ, অরণ্যের দিনরাত্রি। সে জন্যই ওই ফুল ছেপেছি। এটার সঙ্গে দলের প্রতীকের কোনও সম্পর্ক নেই।” ঘটনা হল, তৃণমূল কংগ্রেসের দার্জিলিং জেলা কমিটির একাধিক সদস্য ওই ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। দলের জেলা কমিটির সদস্যদের অনেকেই বলেন, “দলের শৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। যে যেমন খুশি কাজ করছে। কেউ অবৈধ বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণে মদত দিতে দিনরাত ছুটছেন। কেউ প্রকাশ্যেই ঠিকাদারের গাড়িতে ঘুরছেন। কেউ আবার বাম আমলের দুর্নীতিতে অভিযুক্তকে আড়াল করলে আসরে। এমন চলছে বলেই দলীয় প্রতীক লটারির টিকিটে ছাপার মতো অভিযোগ উঠছে।” তৃণমূল জেলা সভাপতি গৌতম দেব স্পষ্ট ভাষায় জানান, দলের অনুশাসন ভঙ্গ করলে প্রদেশ নেতৃত্বকে জানিয়ে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.