কাল শিশু দিবস
বন্ধ চা বাগান বাড়াচ্ছে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা
কোথাও চা বাগান বন্ধ। কোথাও চলছে লোকসানে। এই দুই-ই এখন হয়ে উঠেছে শিশু শ্রমিকের জোগানদার। সরকারি সূত্রের খবর, অভাবের সুযোগ নিয়ে তরাই ডুয়ার্সের চা বাগান এলাকার হতদরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়েদের ভিন রাজ্যে তো বটেই, পাঠানো হচ্ছে লাগোয়া সিকিম, ভুটানেও। পাথর ভাঙা, রেস্তোরাঁ, গৃহস্থালির কাজে লাগানো হচ্ছে।
সম্প্রতি দার্জিলিং জেলায় নকশালবাড়ি, খড়িবাড়ি, দাগাপুর, গয়াগঙ্গা চা বাগান থেকে এই ধরনের তথ্য মেলার পর তা পুলিশ-প্রশাসনের হাতে পৌঁছে দিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবীরা। দিল্লি, নয়ডা-র মত এলাকায় নিয়ে গিয়ে শিশুদের হোটেল, অফিস, ক্যান্টিন, ছাড়াও রেলের নানা ঠিকাদার সংস্থায় কাজ করানো হচ্ছে। তবে উত্তরবঙ্গে সবচেয়ে বেশি শিশু শ্রমিক রয়েছে বিড়ি শিল্পে।
দার্জিলিং ডিস্ট্রিক্ট লিগাল এইড ফোরামের সম্পাদক অমিত সরকার বলেন, “গত অক্টোবরে পুলিশ-প্রশাসনকে ৬টি ঘটনার কথা জানিয়েছি। এই ধরনের শিশুদের জন্য কোনও হোম না থাকায় উদ্ধারের পর সমস্যা বাড়ছে।” আলিপুরদুয়ারের দক্ষিণ পানিয়ালগুড়ির গ্রাম বিকাশ সমিতির সম্পাদক দেবজিৎ সরকার জানান, সম্প্রতি আলিপুরদুয়ার ২ নম্বর ব্লকের ৩৫ জন কিশোর কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়েছে।ডুয়ার্সের বানারহাটের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ডুয়ার্স জাগরণের সম্পাদক ভিক্টর বসু জানান, চা বলয় লাগোয়া স্থানীয় বাজার গুলির মিষ্টির দোকান, হোটেলগুলিতে শিশু শ্রমিক প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। সংগঠনের উদ্যোগে এ বছরের গোড়ায় ভিন রাজ্যে পাচারের সময় ১৪ জন শিশুকে উদ্ধার করা হয়। ৭৪ জনকে বিভিন্ন স্কুলেও ভর্তি করানো হয়েছে। চোপড়া ব্লকেও চা বাগানে শিশু শ্রমিক রয়েছে। চা মালিক সংগঠন ডিবিআইটি-র সচিব প্রবীর ভট্টাচার্য বলেন, “প্রত্যেক বাগান কর্তৃপক্ষকে এই বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।”
জাতীয় শিশু শ্রম প্রকল্পের দ্বায়িত্বে থাকা জলপাইগুড়ির সহকারি শ্রম আধিকারিক আর্থার হড়ো জানান, ২০০৫-০৬ শেষ সমীক্ষায় জেলায় প্রায় ২২০০ শিশু শ্রমিকের তথ্য উঠে এসেছিল। দার্জিলিঙের স্বেচ্ছাসেবীদের দেওয়া তথ্য অনুসারে, জেলায় প্রায় ৪ হাজার শিশুদের বেআইনি ভাবে কাজ করানো হচ্ছে। গত তিন মাসে কার্শিয়াং, কালিম্পং এবং শিলিগুড়ি মিলিয়ে ১৫টি অভিযান হয়েছে। উদ্ধার করা শিশুদের বেশির ভাগই হোটেলে কাজ করছিল। জেলার একটি বড় অংশের শিশু বালাসন, মহানন্দা নদীতে পাথর তোলার কাজ করছে। অন্তত এই ধরনের ৩০০ শিশুকে নদীতে পাথর ভাঙতে দেখা যায়।
বিড়ি, ইটভাটা, হোটেল, ধাবা, ছোট কারখানা, মিষ্টির দোকান, রাজমিস্ত্রির জোগানদার, বাড়ির কাজের লোক এমন নানা কাজে লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে শিশুদের। এদের জন্য না আছে যথেষ্ট শ্রমিক স্কুল, না রয়েছে উদ্ধার হওয়ার পর হোমের ব্যবস্থা। ফলে শিক্ষার অধিকার তাদের জীবনে শূন্য প্রতিশ্রুতি হয়েই থেকে যাচ্ছে। হারিয়ে যাচ্ছে শৈশব।

কাল শিশু দিবস
• উত্তরবঙ্গে সর্বাধিক শিশু শ্রমিক উত্তর দিনাজপুরে (২১ হাজার)

• দক্ষিণ দিনাজপুরে অন্তত ২০ হাজার, কোচবিহারে ১০ হাজার
শিশু শ্রমিক রয়েছে।

• বিড়ি শিল্প, ইটভাটা, হোটেল ধাবা, পাথর ভাঙার কাজে বাড়ছে শিশু শ্রমিক, আশঙ্কা সমাজকর্মীদের।

• নেই যথেষ্ট হোম, আবাসিক স্কুল, শিশু শ্রমিক বিদ্যালয়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.