শিবপুর-লোবাকে জুড়ে কটাক্ষ দীপার
ক জায়গায় শিল্পতালুকের জন্য জমি নেওয়া হলেও শিল্প আসেনি। অন্যত্র জট শিল্পের জন্য জমি নেওয়া নিয়ে। বোলপুরের শিবপুর মৌজা ও দুবরাজপুরের লোবা অঞ্চলের সমস্যাকে এই সূত্রে বেঁধে মঙ্গলবার রাজ্য সরকারকে এক হাত নিলেন কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী তথা প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক দীপা দাশমুন্সি।
বোলপুর-শ্রীনিকেতন ব্লকের শিবপুরে কংগ্রেসের পতাকা নিয়ে গুসকরা-শ্রীনিকেতন রাস্তার পাশে অপেক্ষারত চাষিদের একাংশের কথা শুনে দীপা বলেন, “এখানকার চাষিদের বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। শিল্প না হওয়া পর্যন্ত অধিগৃহীত জমিতে জমিদাতাদের চাষ করতে দেওয়ার বিষয়টি সরকারকে বিবেচনা করতে হবে।” আর লোবায় পৌঁছে সেখানকার সংঘর্ষ নিয়ে তাঁর মন্তব্য, “রাজ্য সরকারের যথাযথ জমি নীতি না থাকার জন্যই এমন ঘটল।” যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল এবং বোলপুরের বিধায়ক তথা মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের অভিযোগ, “রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতেই আন্দোলনকারীদের উস্কানি দেওয়া হচ্ছে।” ফোনে যোগাযোগ করা হলে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (লোবা এবং শিবপুরদু’টি ক্ষেত্রেই জড়িয়ে রয়েছে তাঁর নাম) বলেন, “ব্যস্ত আছি। কথা বলতে পারব না।”
শিবপুরে শিল্পতালুকের জন্য ২০০১-এ প্রায় ৩০০ একর জমি নেয় সরকার। কিন্তু রাজ্য শিল্প পরিকাঠামো উন্নয়ন নিগমের ওই জমিতে কেউ শিল্প গড়তে আসেননি। কর্মসংস্থান ও এলাকার উন্নয়নের আশায় জমি দিয়েছিলেন চাষিরা। ইতিমধ্যে জমির দর অনেক বেড়েছে।
বোলপুরের শিবপুর মৌজায় দীপা দাশমুন্সি। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
শিল্পস্থাপন এবং জমির বর্ধিত দামের দাবিতে বছর চারেক আগে শুরু হয় আন্দোলন। জমির সীমানায় সিমেন্টের খুঁটি উপড়ে দেন চাষিরা। তৃণমূলের নেতৃত্বে ‘শ্রীনিকেতন শান্তিনিকেতন কৃষিজমি বাঁচাও কমিটি’ ২০০৯-এ পুলিশের সামনেই ওই জমিতে ধান পুঁতে দেয়। সেই থেকে ওই জমি কমিটির দখলে।
রাজ্যে নতুন সরকার আসার পরে চলতি বছরের ২৫ মার্চ এই জমি পরিদর্শনে যান শিল্পমন্ত্রী। তখন জমিদাতাদের ক্ষোভের আঁচ পেয়ে কমিটির নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করে দাবিদাওয়া বিবেচনার আশ্বাস দেন পার্থবাবু। গত ২৭ জুলাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বীরভূমে গিয়ে সেই অধিগৃহীত জমিতে তথ্য-প্রযুক্তি বা আইটি হাবের শিলান্যাস করে ‘শিল্পনিকেতন’ গড়ার ডাক দেন। ওই আইটি হাব নিয়ে কি কেউ আগ্রহ দেখিয়েছেন? সরাসরি উত্তর না দিয়ে বীরভূমের জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা এ দিন বলেন, “আমরা বিভিন্ন শিল্পসংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করছি। দীপাবলির পরে বিশদে বলব।”
শিবপুরের সমস্যা নিয়ে দীপার সঙ্গে যে সব বর্গাদার, খেতমজুর, চাষিরা কথা বলেছেন, তাঁদের ক্ষোভ, “বাম আমলের মতো তৃণমূল জমানাতেও শিবপুর নিয়ে কিছু হচ্ছে না।” তাঁদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে দীপাও বলেন, “আমাদের দাবি, অধিগৃহীত জমিতে শিল্প হোক, কর্মসংস্থান হোক। একই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদেরও ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক। রাজ্য সরকার দাবি করছে বহু শিল্পোদ্যোগী নাকি শিবপুর মৌজায় শিল্প গড়ায় আগ্রহী। এত দিনেও কাউকে দেখা গেল না কেন?” লোবার ধর্না-মঞ্চে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কটাক্ষ, “সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের মতো জমি আন্দোলনের উপরে ভিত্তি করেই রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল এবং মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সময়ে লোবায় সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি মোটেই কাম্য ছিল না।” তাঁর বক্তব্য, “এখানে এসে বুঝছি, মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে।” লোবা ও বাবুপুর গ্রামে গিয়ে মঙ্গলবার পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত ৫ জনের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন দীপা। প্রত্যেক পরিবারকে ১০ হাজার টাকা সাহায্য করেন। তৃণমূলের বক্তব্য, “শিবপুরের আন্দোলনে কংগ্রেসের তেমন প্রত্যক্ষ ভূমিকা ছিল না কখনওই। লোবাতেও এত দিন ওদের দেখা যায়নি। হঠাৎ কৃষক-দরদি হওয়ার কারণটা স্পষ্ট।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.