কে কতটা কৃতিত্ব নিজের দিকে টানতে পারেন, তারই প্রতিযোগিতা চলছে। তাতে ক্ষতি হচ্ছে রাজ্যেরই। রেলের প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী সোমবার বহরমপুরে এফইউসি মাঠে তাঁর সংবর্ধনা সভায় তৃণমূল কংগ্রেস বা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না করেও তাঁদের উদ্দেশে বলেন, “রাজনীতিকরা কৃতিত্বের যুদ্ধ করতে গিয়ে বাংলার বিপদ ঘটিয়েছেন। উন্নয়ন কে করল? আমি, না তুমি ওই লড়াই আর নয়। আসুন সবাই মিলে এক সঙ্গে উন্নয়নের কাজ করি। উন্নয়নকে রাজনীতির শিকার হতে দিলে রাজ্যের ক্ষতি। অন্য রাজ্য এগিয়ে যাচ্ছে, আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি। আমরা সংকীর্ণ রাজনীতির চোরাবালিতে হেঁটে নিজেরাই নিজেদের পিছিয়ে দিয়েছি।”
এ দিন কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকার রুপোর তৈরি রেলইঞ্জিন দিয়ে অধীরকে সংবর্ধনা দেন। বহরমপুরের পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্য অধীরবাবু মাথায় রুপোর মুকুট পরিয়ে দেন।
রেলের প্রতিমন্ত্রীর কাছে রাজ্যের ও মুর্শিদাবাদ জেলার প্রত্যাশা গগনচুম্বি। তিনি বলেন, “আমাকে হারকিউলিস ভাববেন না। ভারতের ও রেলের আর্থিক অবস্থার কথা ভেবে এগোতে হবে। রাজ্যে অনেক রেলপ্রকল্প জমি সমস্যার কারণে আটকে আছে। সমস্যা মেটাতে রাজ্যকে এগিয়ে আসতে বলা হয়েছে।” তবে তিনি প্রত্যশার পুরোটাতেই জলও ঢেলে দেননি। অধীর বলেন, “কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার আয়ু আর মাত্র দেড় বছর। ওই সময়ের মধ্যে বড় কিছু করা সম্ভব নয়। তবে অনেক ছোট কাজ রয়েছে সেই সব কাজ করা হবে। তা ছাড়া আগের ঘোষিত, সমীক্ষা হয়েছে, বা সাংসদ-বিধায়কদেরক জমা দেওয়া প্রকল্প গুলির মধ্যে সমস্যা কম ও তাড়াতাড়ি করা সম্ভব সেই প্রকল্প গুলি করা হবে।” কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ার পর রবিবার রাতে তিনি বহরমপুরে প্রথম পা রাখেন। তার পর এ দিন দুপুরে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে কান্দিতে ও বহরমপুরে দু’টি পৃথক প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে তাঁকে গণসংবর্ধনা দেওয়া হয়।
কান্দি ও বহরমপুর দু’টি অনুষ্ঠানেই তিনি নদিয়া ও মুর্শিদাবাদ জেলার ৩টি রেল প্রকল্পের কথা উন্নেখ করেন। প্রস্তাবিত ওই ৩টি রেল প্রকল্প হল কান্দি-চৌরিগাছা, বহরমপুর-সাঁইথিয়া ভায়া কান্দি ও করিমপুর-বহরমপুর ভায়া ডোমকল। মন্ত্রী বলেন, “ওই তিনটি প্রকল্পের বিষয় বিবেচনাধীন রয়েছে। রাষ্ট্রপতি-পুত্র অভিজিত মুখোপাধ্যায় বলেন, “অধীরবাবু আমার বাবাকে জিতিয়েছেন, আমাকেও জিতিয়েছেন।”
করিমপুর-বহরমপুর, কান্দি-চারিগাছা ও চাপড়া-কৃষ্ণনগর ওই তিনটি নয়া রেলপথ প্রকল্প ৩ বছর আগের, অথচ একটি পয়সাও আজও বরাদ্দ হয়নি বলে নাম না করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করেন সাংসদ মান্নান হোসেন। তিনি বলেন, “কোনও রাজ্যে ২ জন সাংসদ থাকলেও একজনকে মন্ত্রী করা হয়েছে। আমাদের রাজ্যে ৬ জন সাংসদ। তার মধ্যে ৩ জনই এ জেলার। অভিজিতের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে-- আমার কেউ মন্ত্রী হতে চাই না। কিন্তু অধীর চৌধুরীকে এর পর গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী করতে হবে। এটাই আমাদের দাবি।” |