|
|
|
|
চাপানউতোর রেলশহরে,
ঘাসফুলের ধাঁচে বিজ্ঞাপন বোর্ড |
বরুণ দে • খড়্গপুর |
রাস্তার ধারে ল্যাম্পপোস্টের গায়ে লাগানো হয়েছে বিজ্ঞাপনের বোর্ড। তাতেও তৃণমূলের দলীয় প্রতীকের আদল। এ নিয়েই বিতর্ক বেধেছে রেলশহর খড়্গপুরে। বিরোধীদের অভিযোগ, তৃণমূল পরিচালিত পুর-কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এমন বোর্ড বানানো হয়েছে। সবেতেই দলতন্ত্র কায়েমের চেষ্টা করছে শাসক দল। পুর-কর্তৃপক্ষ অবশ্য তা মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি, দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাই বিজ্ঞাপন বোর্ডের আকার ঠিক করেছে। এ ক্ষেত্রে পুরসভার কোনও ভূমিকা নেই।
রাজপথের দু’ধারে চোখ মেললেই আলোকোজ্জ্বল সব বোর্ড। তাতে হরেক জিনিসের বিজ্ঞাপন। বাদ পড়েনি ল্যাম্পপোস্টগুলিও। প্রতি শহরে এটা চেনা ছবি। খড়্গপুরও ব্যতিক্রম নয়। |
|
ছবি: রামপ্রসাদ সাউ। |
বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আয় বাড়াতে বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করে পুরসভা। পুরসভা সূত্রে খবর, কয়েক মাস আগে এক সংস্থার সঙ্গে পুরসভার চুক্তি হয়। সেই মতো শহরের ইন্দা, পুরাতন বাজার প্রভৃতি এলাকায় আপাতত ২৫টি বোর্ড লাগানো হয়েছে। এগুলি এলাকায় ‘টোল কিয়স্ক’ বলে পরিচিত। এ বার রেলশহরে বিজ্ঞাপনের যে বোর্ডগুলি বসানো হয়েছে, তার নকশা নিয়ে শুরু হয়েছে চাপানউতোর। তৃণমূলের দলীয় প্রতীক ঘাসফুলের আদলে বোর্ডগুলি তৈরি করা হয়েছে বলে অনুযোগ একাংশ শহরবাসীর। সরব হয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও। প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা কংগ্রেস কাউন্সিলর রবিশঙ্কর পাণ্ডের মতে, “বিজ্ঞাপনের বোর্ডে কোনও দলের প্রতীকের আদল থাকলে বিতর্ক হবেই। সবেতেই দলতন্ত্র চলছে। কোন সংস্থার সঙ্গে চুক্তি হল, পুরসভা কত টাকা পেল, কিছুই জানি না। পুরসভার মিটিংয়ে এ নিয়ে কোনও আলোচনাও হয়নি।”
পুর-কর্তৃপক্ষ অবশ্য এ বিতর্ক থেকে নিজেদের দূরে রাখতে চাইছেন। তবে অভিযোগও একেবারে উড়িয়ে দিতে পারছেন না। খড়্গপুরের ভারপ্রাপ্ত পুরপ্রধান তৃণমূলের তুষার চৌধুরী বলেন, “ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে। যখন বোর্ড বসানো হচ্ছিল, তখন আমার ওয়ার্ডেরই এক প্রবীণ মানুষ আমায় ফোন করেন। জানতে চান, দলের তরফ থেকে কিছু হচ্ছে কি না। আসলে নকশাটি ফুলের মতো বলেই বিভ্রান্তি হচ্ছে।” তুষারবাবুর বক্তব্য, “পুরসভা এক সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করেছে। তারা কেমন বোর্ড লাগাবে, তা আমরা বলে দেব কেন? দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা নিজে থেকেই ফুলের মতো বোর্ড লাগিয়েছে।” ওই সংস্থার কর্তা অভিষেক মুখোপাধ্যায়ও বলেন, “কোনও দলের প্রতীকের সঙ্গে ওই নকশার মিল নেই। তবে বিতর্ক যে চলছে, তা আমিও শুনেছি। শুনে কিছুটা অবাকই হয়েছি।” তাঁর কথায়, “নকশায় দেখানোর চেষ্টা হয়েছে, একটা টবের উপর ফুল। ব্যস্, এটুকুই। এ নিয়ে বিতর্ক হবে কেন বুঝতে পারছি না।”
তবে এ সব ব্যাখ্যা মানতে নারাজ পুরসভার বিরোধী কাউন্সিলররা। কংগ্রেস কাউন্সিলর রবিশঙ্কর পাণ্ডের মতে, “বোর্ড কেমন হবে, পুর-কর্তৃপক্ষ তা জানতেন না, এটা মানা অসম্ভব।” আর পুরসভার বিরোধী দলনেতা তথা সিপিএম কাউন্সিলর অনিতবরণ মণ্ডল বলেন, “নতুন করে আর কী বলব? পুর-কর্তৃপক্ষ যা খুশি তাই করছেন।” |
|
|
|
|
|