|
|
|
|
থিমের ঘনঘটায় উৎসবে
গা ভাসাবেন পাণ্ডুয়ার মানুষ |
তাপস ঘোষ • কলকাতা |
উত্তর ২৪ পরগনার কালীপুজোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে থিমের পুজোয় মেতেছে হুগলির পাণ্ডুয়া।
জি টি রোডের নিরুলা থেকে সিমলাগড় কালীবাড়ি পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রাস্তার দু’ধারে চোখধাঁধানো মণ্ডপ এবং রাস্তার উপরে মনমাতানো আলোকসজ্জা চোখে পড়বে। পাণ্ডুয়ায় মোট ১২৫টি কালীপুজো হয়। তার মধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটির আওতাভুক্ত ৪০টি পুজো। এখানে পুজোর বৈশিষ্ট্য কালীপুজো এক দিনের হলেও এখানে তিন দিন ধরে পুজো চলে। চতুর্থ দিনে হয় ভাসান।
পুজোর ক’টা দিন জি টি রোড বিকেল ৪টে থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। ডিএসপি (ডি অ্যান্ড টি)-র নেতৃত্বে ৮০ জন পুলিশকর্মী নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছেন। চারটি পুলিশ বুথ থাকছে দর্শনার্থীদের সুবিধার জন্য।
স্টেশনের ধারে কালীমাতা ব্যবসায়ী সমিতির ৫১ বছরের পুজো মণ্ডপ। সুউচ্চ কাল্পনিক মণ্ডপে রামপ্রসাদ-সারদামণিকে বিরাজমান শ্যামাকালী। একটু এগিয়ে অরবিন্দ পল্লি-সারদা পল্লি শ্যামাপুজো কমিটি ১০ বর্ষ। কর্কেট টিন দিয়ে ভুজের মন্দিরের অনুকরণে মণ্ডপ। পাণ্ডুয়া দক্ষিণপাড়া ব্যবসায়ী সমিতি ৫৬ বছরে পা দিয়ে গোপাল ভাঁড়ের রথ। পাটকাঠি দিয়ে মণ্ডপ নির্মাণ ছাড়াও এই পাটকাঠি দিয়েই তৈরি হয়েছে শ্যামামায়ের মৃণ্ময়ী রূপ। মণ্ডপের পাশে মডেলের আকারে গোপাল ভাঁড়ের বিভিন্ন রূপ ছোটদের মনোরঞ্জন করবে। মণ্ডপে সামনে জি টি রোডে থাকবে চোখধাঁধানো আলোকসজ্জা।
মধ্যমপাড়া ব্যবসায়ী সমিতি ও তরুণ সঙ্ঘের পুজো এ বার ৪০ বছরে পড়ল। মধ্যপ্রদেশের খাজুরাহো মন্দিরের আদলে ৫৫ ফুট উঁচু থার্মোকলের উপরে। প্লাস্টার অব প্যারিস দিয়ে মণ্ডপ নির্মিত। মণ্ডপের গায়ে থাকছে খাজুরাহের সেই মডেল। মূল মণ্ডপে থাকছে শোলার সাজে ঢাকা দেবী শ্যামা।
কালনা রোড ব্যবসায়ী সমিতি বেনেপাড়া যুব সম্প্রদায়ের পুজো ৫৪ বছরে পড়ল। বিষ্ণুপুরের মদনমোহন মন্দিরের আদলে মণ্ডপ নির্মিত হয়েছে। মন্দিরে থাকছে নটরাজের আদলে শ্যামামা। জি টি রোড ও কালনা রোডের মুখে থাকছে প্যারিসের আইফেল টাওয়ার। রবীন্দ্র পল্লির শতদলের পুজো এ বার ৩৩ বর্ষে পা দিল। এ বারের থিম ‘স্বপ্ন এ বার সত্যি হল, স্বর্গ এ বার মর্ত্যে এল।” তুলো, ইলিশ মাছ ধরার জাল, ঝুড়ি, থার্মোকল, সেগুন গাছের পাতা দিয়ে ৮৬ ফুট চওড়া এবং ৪০ ফুট উঁচু মণ্ডপ। মেঘের মধ্যে পরীদের নাচ এবং দেবীর ঘট থেকে ফুল ছোড়ার দৃশ্য এখানে চোখে পড়বে। তা ছাড়া, আকাশের গ্রহ-নক্ষত্রের সকল দৃশ্য দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করবে। মণ্ডপের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রতিমা থাকছে শ্বেতশ্যামা।
বিবেকানন্দ নগরের প্রগতি সঙ্ঘ ৫৭ বছরে পা দিল। মথুরার কৃষ্ণ মন্দিরের আদলে ৬৪ ফুট উঁচু মণ্ডপ। ভিতরে থাকছে মিশরীয় আদলের শ্যামাপ্রতিমা। রবীন্দ্রনাথের জন্মের সার্ধ শতবর্ষে চন্দননগরের আলোকসজ্জা দৃষ্টিনন্দন। নিরোদগড়ের সবুজ সঙ্ঘ ৬২ বর্ষে পা দিয়ে এ বারের নিবেদন শ্রীরামকৃষ্ণের জন্মস্থান কামারপুকুরের আদলে মণ্ডপ। থাকছে রামকৃষ্ণের সাধনাস্থল, ঠাকুরের বৈঠকখানা, ঠাকুরের দাদার ঘর, ঠাকুরের শয়নকক্ষের পাশে থাকছে মূল মণ্ডপ। জয়পুর প্রভাত সঙ্ঘের পুজোর এ বারের মণ্ডপ নির্মাণ বিভিন্ন কার্টুনের আকারে। কাকলিতলা ব্যবসায়ী সমিতির পুজোর চোখধাঁধানো আলোকসজ্জা, পার্কের মধ্যে দোলনায় শিশুদের খেলা, ঢেঁকির পাশাপাশি সবই দেখা যাবে আলোকসজ্জায়। পশ্চিমপাড়া ব্যবসায়ী সমিতির পুজোর থিম দক্ষিণেশ্বরের মন্দিরের আদলে। এখানকার আলোকসজ্জায় রামায়ণের কাহিনি ছোটদের মনে আনন্দ দেবে। কামারপাড়া জয়েন্ট স্টারের পুজো ২৮ বছরে পা দিল। এদের থিম ধনধান্যে পুষ্পে ভরা, আমাদেরই বসুন্ধরা’। গৌহাট কখনতলা ব্যবসায়ী সমিতির পুজো ও আলোকসজ্জা চোখে পড়ার মতো। স্পাইডারম্যান থেকে মনীষীদের আলোকসজ্জা দেখা যাবে এখানে। |
|
|
|
|
|