দিনদুপুরে কয়েক জন দুষ্কৃতী বাজারে ঢুকে হুমকি দিয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ করলেন কাটোয়া স্টেশন বাজার এলাকার কিছু ব্যবসায়ী। সোমবার এসডিপিও (কাটোয়া)-এর কাছে স্মারকলিপি দেন ব্যবসায়ীরা। দু’জন ব্যবসায়ী কাটোয়া থানায় নির্দিষ্ট অভিযোগও করেছেন।
ঘটনার সূত্রপাত এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ। স্টেশনবাজার চৌরাস্তা মোড়ে কাটোয়া পুরসভার ট্রাফিক বিভাগের কর্মী রিন্টু দে ও প্রশান্ত দাস যান নিয়ন্ত্রণ করছিলেন। কালীপুজো ও কার্তিক পুজোর কেনাকাটা উপলক্ষে এ দিন রাস্তায় বেশ ভিড় ছিল। পুরসভা সূত্রে জানা যায়, সেই সময়ে মাঝরাস্তায় ভ্যানে ফল চাপিয়ে বিক্রি করছিলেন এক বিক্রেতা। ট্র্যাফিক কর্মীরা ওই ফল বিক্রেতাকে রাস্তা থেকে ভ্যান সরিয়ে নিতে বললে বচসা বেধে যায়।
ওই দুই কর্মী পুরসভার কাছে লিখিত অভিযোগে জানান, ফল বিক্রেতার তাঁদের মারধরও করেন। পথচলতি মানুষজনের মধ্যস্থতায় তখনকার মতো বিষয়টি মিটে যায়। কিন্তু দুপুর ১২টা নাগাদ স্টেশন বাজার এলাকায় গিয়ে কয়েক জন দুষ্কৃতী রিন্টু ও প্রশান্তের খোঁজ করে। সেখানে তাঁদের না পেয়ে কেশিয়ার মিলপাড়া এলাকায় প্রশান্তের বাড়িতে যায়। তখন প্রশান্ত বাড়িতে ছিলেন না। অভিযোগ, ওই দুষ্কৃতীরা তাঁর বাড়ির লোকজনকে হুমকি দেয়। ওই দুই ট্রাফিক কর্মী পুরসভায় অভিযোগ জানান। পুরপ্রধান শুভ্রা রায় বলেন, “ওই অভিযোগ কাটোয়া থানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
দুই পুরকর্মীকে খোঁজার নামে স্টেশন বাজার এলাকায় গিয়ে দুষ্কৃতীরা তাণ্ডব চালিয়েছে বলে এসডিপিও-র কাছে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। তাঁদের আরও অভিযোগ, রবিবার দুপুরে স্টেশন বাজারে একটি গয়নার দোকানে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে দোকান বন্ধ রাখার হুমকি দেয় দুষ্কৃতীরা। ওই দোকানের মালিক সমীর দত্ত বলেন, “ঘটনার সময়ে আমার ছোট ছেলে দোকানে ছিল। খবর পেয়ে আমি ছুটে যাই। দু’জন দুষ্কৃতী আমাকে পিস্তল দেখায়।” ব্যবসায়ীরা জানান, ওই ঘটনার পরে এ দিন ৭-৮ জনের একটি দল আগ্নেয়াস্ত্র, রামদা ইত্যাদি নিয়ে তাণ্ডব চালায়। পথচলতি মানুষজন ভয়ে এ দিক-ও দিক পালিয়ে যান। বেশ কিছুক্ষণ ঘোরাফেরার পরে কয়েকটি দোকানে ঢুকে হুমকি দেয় ওই দুষ্কৃতীরা। একটি বইয়ের দোকানের মালিক দেবপ্রসাদ ধর বলেন, “আমাকে দোকান বন্ধ করে বলে দোকানের শো-কেসে বন্দুকের বাঁট দিয়ে মারে।”
কাটোয়া মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতির মুখপাত্র বিদ্যুৎ নন্দী ও মহকুমা ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য মানিক দেবনাথ বলেন, “আমরা এই ঘটনায় আতঙ্কিত। শহরের মধ্যে এমন আগে কখনও ঘটেনি।” কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মতে, “পুলিশ কড়া হাতে এই সব ঘটনার মোকাবিলা না করলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।” এসডিপিও (কাটোয়া) ধ্রুব দাস বলেন, “এ ধরনের ঘটনা রুখতে পুলিশ সব রকম ব্যবস্থা নিচ্ছে।” |