টানবে বড় মণ্ডপ, বিশাল কালীমূর্তি |
কোথাও গুজরাটের সোমনাথ মন্দির, কোথাও আবার তিব্বতের বৌদ্ধ মন্দিরের আদলে তৈরি মণ্ডপ। কোথাও আবার বিশাল আকৃতির কালীমূর্তিই আকর্ষণ। দুর্গাপুরে কালী পুজোতেও এ বার থিমের রমরমা।
শহরের পুরনো পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম এ-জোনের দয়ানন্দ কালচারাল সোসাইটির পুজো। এ বার পুজোর ৪৯তম বর্ষ। বাঁশ ও বেত দিয়ে গড়া মণ্ডপ বরাবরের মতো এ বারও দর্শকদের মন জয় করবে বলেই আশা উদ্যোক্তাদের।
বি-জোনের আর্যভট্ট শোভাপুর বয়েজ ক্লাব আয়োজিত পুজো এ বার ১২ বছরে পা দিল। এ বারের আকর্ষণ দক্ষরাজের কন্যা সতীর দেহত্যাগ ও ৫১ পীঠ। ২২ বছর ধরে পুজো করছে আর্যভট্ট অ্যাভিনিউয়ের নাইটিঙ্গল ক্লাব কালীপুজো কমিটি। মূর্তির বিশালতাই বিশেষ আকর্ষণ। এ বার গড়া হয়েছে প্রায় ৩০ ফুট উঁচু প্রতিমা। এছাড়া পুজো শেষে রয়েছে আতসবাজি প্রদর্শনী। পুজো কমিটির পক্ষে পিঙ্কু সাহা বলেন, “পাড়ার সকলের যোগদানের মাধ্যমে বরাবর এই পুজো একটি মিলনমেলার রূপ নেয়।” |
দয়ানন্দ রোডের মণ্ডপ। —নিজস্ব চিত্র। |
সি-জোনের মহাবীর ইউনাইটেড ক্লাবের পুজো এ বার ৯ বছরে পা দিল। মণ্ডপ গড়া হয়েছে গুজরাটের সোমনাথ মন্দিরের আদলে। ৩২ বছরে পা দেওয়া এ জোনের অরবিন্দ স্পোর্টিং ক্লাবের পুজোর বিশেষ আকর্ষণ বিভিন্ন খাদ্যশস্য দিয়ে গড়া প্রতিমা। এখানে সতীর ১০ টি রূপ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ৩৪তম বর্ষে এডিসন রোডের আমরা ক’জন বয়েজ ক্লাবের মণ্ডপ তৈরি হয়েছে মন্দিরের আদলে। বাঁশ ও বেত দিয়ে তৈরি হয়েছে মণ্ডপটি।
চৈতন্য অ্যাভিনিউয়ের স্বদেশ সঙ্ঘ ক্লাব এর পুজোয় কর্ণাটকের এক মন্দিরের আদলে মণ্ডপ গড়া হয়েছে। তিব্বতের এক বৌদ্ধ মন্দিরের আদলে মণ্ডপ গড়েছে শিবাজী সম্মিলনী ক্লাব। খেজুর পাতার তৈরি তালাই দিয়ে গড়া মণ্ডপে ‘ফ্রেস্কো প্যানেল পেন্টিং’ শোভা পাচ্ছে ভিড়িঙ্গি মিলন সঙ্ঘের মণ্ডপে। খড়, কুলো প্রভৃতি দিয়ে মণ্ডপ গড়েছে বেনাচিতির পাঁচমাথা মোড়ের দিশারী সঙ্ঘ। তিন দশক পার করল সি-জোন সার্বজনীন পুজো। বরাবরের মতো পুজো করছে বিধাননগর সেক্টর ২ সি কালচারাল ক্লাব, শঙ্করপুর (পশ্চিম) সংহতি সঙ্ঘ পুজো কমিটিও। সিটি সেন্টারের সিটি অ্যাথলেটিক ক্লাবের পুজোর এ বার ৩৭তম বর্ষ। বিদ্যাপতি রাজেন্দ্রপ্রসাদ পুজো কমিটি এ বার পটচিত্র ও মূর্তির মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছে শক্তির দশ মহাবিদ্যা রূপ।
বীরভানপুরের পুজোয় এ বার কোথাও দেবীর দশ মাথা-দশ হাত, কোথাও ছিন্নমস্তা রূপ, কোথাও আবার দেবীর মূর্তি গড়া হয়েছে কালীঘাটের প্রতিমার আদলে। অনেক জায়গায় চোখ টানছে প্রতিমার উচ্চতাও।
কাঁকসা ও বুদবুদ এলাকাতে প্রাচীন পারিবারিক পুজোর রমরমা এখনও অটুট। তিনশো বছর ধরে কাঁকসার সিলামপুরে চট্টোপাধ্যায়, বন্দ্যোপাধ্যায় ও মুখোপাধ্যায় পরিবারের যৌথ পুজো হচ্ছে। পরিবারের বর্তমান সদস্য লালন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই তিনটি পরিবার এক সঙ্গে পুজোর আয়োজন করছেন। পানাগড় গ্রামে শ্মশানকালী পুজো হচ্ছে ৪৪ বছর ধরে। উদ্যোক্তাদের পক্ষে কল্যাণীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় জানান, সাবেক রীতি ও উপাচারের ওই পুজো বরাবর এলাকাবাসীর কাছে অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। বুদবুদের মানকর শ্মশানের কাছে বিশ্বাসবাড়ির পুজো আড়াইশো বছরপেরোল। প্যাড়ের কালী হিসাবে এলাকায় পরিচিত এই পুজো। সেখানে বহু মানুষের ভিড় জমে বলে জানিয়েছেন পরিবারের বর্তমান সদস্য তপনকুমার বিশ্বাস।
|