মালদহে বুধবারও বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে ফুলহার। ফুলহারে জলস্ফীতিতে হরিশ্চন্দ্রপুর ও রতুয়ার পনেরোটি গ্রামের বাসিন্দারা জলবন্দি হয়ে পড়ার পাশাপাশি অব্যাহত ভাঙনও। দুইদিন ধরে জলবন্দি হয়ে থাকলেও ত্রাণ দূরের কথা প্রশাসনের কর্তাদের কেউ খোঁজ নেয়নি বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। পাশাপাশি যাতায়াতের জন্য নৌকাও মেলেনি বলে অভিযোগ উঠেছে। গত সোমবার থেকেই ফুলহার অসংরক্ষিত এলাকায় বিপদসীমার উপর দিয়ে ও সংরক্ষিত এলাকায় হলুদ সঙ্কেত সীমার উপর দিয়ে বইতে শুরু করে। রতুয়া ও হরিশ্চন্দ্রপুরে ফুলহার বাঁধে ভাঙন চলতে থাকায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন সংরক্ষিত এলাকার বাসিন্দারাও। মালদহের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) নুরুল ইসলাম বলেন, “বিডিও-রা কোনও রিপোর্ট পাঠাননি। রিপোর্ট পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত মঙ্গলবার থেকে এদিন দুপুরে ফুলহার নদীর জলস্তর ১২ সেন্টিমিটার বেড়ে তা দাঁড়িয়েছে ২৭.৮৬ মিটারে। যা অসংরক্ষিত এলাকায় বিপদসীমার থেকে এবং সংরক্ষিত এলাকায় হলুদ সঙ্কেত সীমা থেকে ৫১ সেন্টিমিটার বেশি। |
জেলা সেচ দফতরের এক আধিকারিক বলেছেন, স্থানীয় ভাবে বৃষ্টি চলতে থাকায় নদীর জল বাড়ছে। রতুয়ার দেবীপুরে জরুরি ভিত্তিতে ভাঙনরোধের কাজ চলছে। নদীর জল উপচে এরমধ্যে হরিশ্চন্দ্রপুর -২ ও রতুয়া-১ ব্লকের অসংরক্ষিত এলাকার ১৫টি গ্রামের ১৫ হাজারেরও মত বাসিন্দা জলবন্দি হয়ে পড়েছেন। যাতায়াতের রাস্তা, মাঠ-ঘাট সবই ডুবে গিয়েছে। হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক তজমূল হোসেন বলেন, “মিহাহাটে বাঁধে নদীর জল প্রবল গতিতে বাঁধে ধাক্কা মারছে। সেখানে ভাঙনরোধের কাজ জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে। ভাঙন রোধের কাজ ঠিকঠাক হচ্ছে না।” রতুয়ার বিলাইমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নদী মন্ডল বলেন, “দুদিন ধরে দুটি গ্রাম পঞ্চায়েতের বহু মানুষ জলবন্দি হয়ে রয়েছেন। প্রশাসনকে সব জানিয়েছি।” হরিশ্চন্দ্রপুর-২ পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা সুধীর যাদব বলেন, “দিয়ারার ৫০টি পরিবার বাড়ি ছেড়ে রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁদের ত্রাণ মেলেনি। জলবন্দি মানুষদের যাতায়াতের জন্য নৌকার বন্দোবস্ত করার আবেদন জানিয়েও ফল হয়নি।” বন্যা পরিস্থিতি থেকে বার হয়ে ক্রমশ স্বাভাবিক হচ্ছে ডুয়ার্সের ওদলাবাড়ি। গত মঙ্গলবারই ঘিস নদীর অভিমুখ ঘোরানো সম্ভব হয়নি। ঘিস নদীর ভেঙে যাওয়া বাঁধ মেরামতের কাজ চলছে। উত্তরবঙ্গ বন্যা নিয়ন্ত্রণ কমিশনের নির্বাহী সদস্য গৌতম দত্ত বলেন, “বড় পাথর এবং তারজালি দিয়ে দ্রুততার সঙ্গে বাঁধের কাজ চলছে।” এই কাজে শ্রমিক বিডিও দফতর থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিডিও প্রেমবিভাস কাঁসারি। |