|
|
|
|
রাজ্য মন্ত্রিসভা বয়কট কংগ্রেসেরও
|
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
তৃণমূলের পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করল কংগ্রেসেও।
দিল্লির সরকার থেকে দলের মন্ত্রীদের সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা মঙ্গলবার সন্ধ্যায় করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই বুধবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক এড়িয়ে গেলেন কংগ্রেসের মন্ত্রীরাও। হাইকম্যান্ডের নির্দেশেই তাঁরা এ দিন মমতা-সরকারের বৈঠকে যোগ দেননি বলেই কংগ্রেসের মন্ত্রীরা জানিয়েছেন। মহাকরণে বৈঠক শেষ মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করায় তিনি পাল্টা বলেন, “এটা ওঁদের ব্যাপার। আমি বলতে পারব না।” তবে কংগ্রেসের মন্ত্রীরা পদত্যাগ করলে সরকারের উপর তার কোনও প্রভাব যে পড়বে না তা জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “এখানে আমরা একক বৃহত্তম দল।’’
বৈঠকে যোগ না দিয়ে কংগ্রেসে ৬ মন্ত্রীর মধ্যে পাঁচ জনই বেশির ভাগ সময় কাটালেন বিধানসভায় পরিষদীয় দলের কক্ষে আলাপ-আলোচনায়। কংগ্রেসের দুই ‘গুরুত্বপূর্ণ’ মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া, আবু হেনা, প্রতিমন্ত্রী সুনীল তিরকে, সাবিনা ইয়াসমিন, আবু নাসের খান চৌধুরী বিধানসভায় ছিলেন। বিধানসভার আসন্ন অধিবেশন নিয়ে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের এ দিনের সর্বদল বৈঠকে মানসবাবুরা যোগও দিয়েছেন। দলের অপর মন্ত্রী প্রমথনাথ রায় অবশ্য কালিয়াগঞ্জে ছিলেন। রাজ্য মন্ত্রিসভায় তাঁদের থাকা, না-থাকা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে মানসবাবু বলেন, “কংগ্রেস তো জাতীয় দল। আঞ্চলিক বা প্রাদেশিক দল নয় যে সেখানে সেখানে বলে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আমরা হাইকম্যান্ডের নির্দেশে মন্ত্রিসভায় আছি। হাইকম্যান্ডের নির্দেশ মেনেই কাজ করব।”
এ দিন মন্ত্রিসভার বৈঠকে যোগ না দেওয়ার জন্য দিল্লি থেকে নির্দেশ পাঠান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য। তৃণমূলের মন্ত্রীদের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে সরে আসার ঘোষণার প্রেক্ষিতে তাঁরা এ দিন মহাকরণে বৈঠকে যাবেন কিনা তা জানতে চেয়ে প্রদীপবাবুকে ফোন করেছিলেন মানসবাবু। প্রদীপবাবু বিষয়টি জানান এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক শাকিল আহমেদকে। তিনি এই ব্যাপারে হাইকম্যান্ডের সঙ্গে আলোচনা করেন। প্রদীপবাবু বলেন, “হাইকম্যান্ড নির্দেশ দেন এ দিন মন্ত্রিসভার বৈঠকে কংগ্রেসের মন্ত্রিদের যাওয়ার দরকার নেই। আমি হাইকম্যান্ডের নির্দেশ মানসদের জানিয়ে দিই।’’ মানসবাবু থেকে শুরু করে আবু হেনা, সাবিনারাও জানান, দলীয় নির্দেশেই তাঁরা এ দিন বৈঠকে যোগ দেননি। বৈঠকে তো যোগ দিলেন না, কিন্তু দফতরের কাজ কী হবে? মানসবাবুর মন্তব্য, “দেখব!” কিন্তু দলের এক মন্ত্রীর কথায়, “পরবর্তী নির্দেশের জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে।’’
পাশাপাশি দুই শিবিরেই জল্পনা শুরু হয়েছে জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন নিয়েও। রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের পুত্র ও নলহাটির বিধায়ক অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়কে জঙ্গিপুরে প্রার্থী করেছে কংগ্রেস। জোটে ভাঙন ধরায় কংগ্রেস ও তৃণমূল উভয় শিবিরেই প্রশ্ন উঠেছে, জঙ্গিপুরে মমতা কি শেষ পর্যন্ত প্রার্থী দাঁড় করাতে পারেন? মঙ্গলবার টাউন হলে মমতার বৈঠকেই দলীয় দুই সাংসদ এই ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছিলেন। মমতা বলেছিলেন, সব এক দিনে আলোচনা হয় না। এখনও সময় আছে। জঙ্গিপুরে মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন শনিবার। তৃণমূলের মন্ত্রীদের শুক্রবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা। তবে তৃণমূলের শীর্ষ নেতাদের একাংশের অভিমত, ‘‘রাষ্ট্রপতি-পুত্র প্রার্থী হয়েছেন বলেই জঙ্গিপুরে সম্ভবত প্রার্থী দেবেন না মমতা।” অন্য এক অংশের মতে, তৃণমূল জঙ্গিপুরে প্রার্থী দিলে ভোট কাটাকাটিতে পাছে বিরোধী সিপিএম জিতে যায় এই সম্ভবনা মমতা তৈরি করতে চান না। |
|
|
|
|
|