সম্পাদকীয় ২...
সঙ্কটমোচন?
বিচারবিভাগের সহিত পাকিস্তানের নির্বাচিত সরকারের দ্বন্দ্বের আপাতত নিরসন হইয়াছে। প্রেসিডেন্ট জারদারির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে মামলা শুরুর জন্য আদালতের নির্দেশে প্রধানমন্ত্রী রাজা পারভেজ আশরফ সম্মত হওয়াতেই এই অবস্থা। তাঁহার পূর্বসূরি ইউসুফ রাজা গিলানি এই প্রশ্নে বিচারবিভাগের বিরাগভাজন হইয়া গদি হারাইয়াছিলেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নিজের গদি বাঁচাইতে পারিয়াছেন। কিন্তু ইহার ফলে কি স্বয়ং প্রেসিডেন্ট জারদারির গদি এবং শাসক দল পাকিস্তান পিপল্স পার্টির ক্ষমতাও হাতছাড়া হইয়া যাইবে না? ২০০৯ সাল হইতে এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের সহিত টানাহ্যাঁচড়া চালাইবার পর পিপল্স পার্টির সরকার দলের সর্বোচ্চ পদাধিকারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা শুরুতে সম্মতিই বা দিল কেন?
পাকিস্তানে পার্লামেন্ট নির্বাচনের লগ্ন ক্রমশ ঘনাইয়া আসিতেছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নওয়াজ শরিফ যাহাতে দুর্নীতির তদন্তে অসম্মতি এবং বিচারবিভাগের সহিত বিরোধের বিষয়দুটিকে নির্বাচনী প্রচারের কাজে ব্যবহার করিয়া পিপল্স পার্টিকে কোণঠাসা করিতে না পারেন, তাহা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সম্ভবত এই কারণেই পার্টির এই রূপ সিদ্ধান্ত। সুপ্রিম কোর্টের সহিত এই প্রশ্নে বিরোধের বিষয়টি জনমনেও বিরূপ প্রভাব ফেলিয়াছে। আসিফ আলি জারদারির তরফে বিচারের সম্মুখীন হইতে চাওয়ার সেটাও কারণ। লক্ষণীয় পাক প্রধানমন্ত্রী নিজ দলের প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা শুরু করা বিষয়ে কোনও সুস্পষ্ট অঙ্গীকার করেন নাই, কেবল সুইজারল্যান্ডের সরকারকে অনুরূপ মামলা হইতে নিরস্ত করিয়া পারভেজ মুশারফের সরকার যে চিঠি পাঠাইয়াছিল, সেটি প্রত্যাহার করিতে সম্মত হইয়াছেন। সত্য, এইটুকু না হইলে জারদারির বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা শুরু করাও অসম্ভব। কিন্তু শুধু এই চিঠি প্রত্যাহারই সেই মামলা শুরুর পক্ষে যথেষ্ট নয়।
পাকিস্তানে বিচারবিভাগ বনাম শাসনবিভাগের দ্বন্দ্ব পারভেজ মুশারফের কাল হইতে চলিতেছে। মুশারফকে বিচারবিভাগের বিরোধিতার মাসুল গনিয়া দিতে হইয়াছে রাজনৈতিক নির্বাসনের মধ্য দিয়া। তবে পাকিস্তানের রাজনীতিতে নির্বাসিতদের পুনর্বাসনও কোনও নূতন ঘটনা নয়। জারদারি-বেনজির এবং নওয়াজ শরিফ সকলেই নির্বাসন হইতেই ফিরিয়াছেন। মুশারফের গণতান্ত্রিক বৈধতা ছিল না, পিপল্স পার্টির নেতৃত্বের আছে। অন্য দিকে, পাকিস্তানে বিচারবিভাগ সেনা-সমর্থিত। অন্তত সেনা-অফিসারদের দুর্নীতি, অর্থনৈতিক উন্নয়নের তহবিল লুণ্ঠন ইত্যাদি লইয়া পাক আদালত বিচলিত হয় না। বিপরীতে নির্বাচিত রাজনৈতিক নেতৃত্বের বিভিন্ন দোষত্রুটি খুঁজিয়া বাহির করিতে পাক সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির প্রবল আগ্রহ। এক দিকে সেনাবাহিনী ও বিচারবিভাগের যৌথ চাপ, অন্য দিকে নির্বাচিত রাজনীতিকদের শাসন পরিচালনার উদ্যম এই দুইয়ের টানাপড়েনে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি আলোড়িত হইতেছে। নূতন এক দফা নির্বাচন সম্পন্ন হইলেই এই আলোড়ন থামিয়া যাইবে, এমন নয়। তবু পাকিস্তানের নবীন গণতন্ত্রকে ইহার মধ্য দিয়াই হাঁটি-হাঁটি পা-পা করিয়া অগ্রসর হইতে হইবে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.