|
|
|
|
প্রবন্ধ ১... |
আর আগুনে যারা পেট্রোল জোগাচ্ছে? |
লিবিয়া, ইয়েমেন, সুদান, লেবানন, ইরাক, মিশর। বহু দেশে আগুন জ্বলছে।
একটি ‘আপত্তিকর’
ফিল্মের জেরে এই আগুন। যারা আগুন জ্বালাচ্ছে, তারা কত অসহিষ্ণু,
তাই নিয়ে দুনিয়ার
উদারপন্থী
এক হয়েছেন। কিন্তু শুধু তারাই অসহিষ্ণু, আর কেউ নয়? লিখছেন সেমন্তী ঘোষ |
মার্টিন রোসন বিলেতের বিখ্যাত কার্টুনিস্ট। ১৬ সেপ্টেম্বর মার্টিন রোসন এক ব্রিটিশ সংবাদপত্রের পাতায় একটি কার্টুন এঁকেছেন: দাউদাউ আগুন, লাল কমলা আগুনবরণ ক্যানভাস, কেবল এক দিকে ছোট্ট একটি পেট্রোল-ক্যান, তার গায়ে আরও ছোট্ট করে লেখা ‘ইনোসেন্স অব মুসলিমস্’। আর ছবির উপর ছোট্ট একটি বাক্য: Whoa! What’s their bleedin’ problem? ব্যঙ্গটা স্পষ্ট। এই মুহূর্তে এশিয়া ও আফ্রিকা জুড়ে ‘ইনোসেন্স অব মুসলিমস্’ চলচ্চিত্রের অভিঘাতে যে জিঘাংসা-কাণ্ড চলছে, এবং সেই দেখে পশ্চিম দুনিয়ায় যে প্রতিক্রিয়ার স্রোত বইছে, তা নিয়েই এই কার্টুন।
কী আছে ওই চলচ্চিত্রে? কীসের জন্য এত ক্রোধবহ্নি? ক্যালিফোর্নিয়া-নিবাসী মার্কিন ইসলামবিরোধী নাকুরা বাসেলি নাকুরার তত্ত্বাবধানে বানানো ছবিটিতে দেখানো হয়েছে হজরত মহম্মদ নাকি ক্ষমতালোলুপ, নারীলোলুপ, এমনকী শিশু‘সঙ্গ’লোলুপ। ছবি ইউটিউবে উঠতে যেটুকু সময় এশিয়া আফ্রিকা অস্ট্রেলিয়ায় আগুন জ্বলে গেল, পশ্চিমি দূতাবাস, কে এফ সি ম্যাকডোনাল্ডস্ সাহেবসুবো পর্যটকের উপর ঢিল পাটকেল মশাল গুলি গোলা চলল, প্রাণ গেল লিবিয়ার মার্কিন রাষ্ট্রদূতের। এবং আরও এক বার ইসলামের অসহিষ্ণুতার ছিছিক্কারে ভরে গেল বিশ্ব। আর তারই মধ্যে কি না দুঃসাহসী রোসন এঁকে ফেললেন এই কার্টুন? যে কার্টুন বলছে: ‘পেট্রোল’ও ঢালা হবে এন্তার, আর আগুন জ্বললে অবাক-অবাক প্রশ্ন ছোঁড়া হবে, “বলি হয়েছেটা কী তেনাদের? কিছু অসুবিধে হয়েছে নাকি, অ্যাঁ?” বলেন কী রোসন? পাঠকরা ফুঁসে উঠছেন। মুসলিমরা আজ যে আগুনে কাণ্ডকারখানা করছে, তার পিছনে পেট্রোল ঢালছে অন্য কেউ, এই কি তাঁর বক্তব্য? সঙ্গে সঙ্গে সমালোচনার গর্জন: মুসলিমদের আতুপুতু করা বন্ধ হোক! কেন তারা এত স্পর্শকাতর? অন্য দেশে বাক্-স্বাধীনতাতেও তাদের আপত্তি? কেন এই জঘন্য অসহিষ্ণুতাকে পাত্তা দেওয়া? |
|
অসহিষ্ণুতাকে পাত্তা দিতে নেই, তাই, আরও এক ধরনের কার্টুন আঁকা হচ্ছে। ফ্রান্সে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকায় ভেতরে ‘উলঙ্গ’ মহম্মদের কার্টুন আর উপরে বড় হরফে ব্যঙ্গাত্মক একটি শব্দ: ‘ইনটাচেব্লস্’ ধরাছোঁয়ার বাইরে যাঁরা, অর্থাৎ মুসলিমরা, এবং তাঁদের মহম্মদ।
অসহিষ্ণুতা খুব খারাপ জিনিস। কিন্তু কাকে বলে অসহিষ্ণুতা? মুসলিম দেশগুলিতে যা দেখছি আমরা, তাতে বুঝতেই পারছি অসহিষ্ণুতা সেখানে প্রবল। কিন্তু মহামহিম পশ্চিমি দেশগুলি? আগুন না হয় ওরা জ্বালছে, ওরা মারছে, ওরা খারাপ। আর যারা পেট্রোল জোগাচ্ছে, তারা খারাপ নয়? তাদের সব খুন মাফ? মহম্মদকে নিয়ে কোনও চরিত্রচিত্রণই কেন আজও সহ্য করা যাবে না, এটা নিশ্চয়ই জরুরি প্রশ্ন। এই স্পর্শকাতরতা নিশ্চয়ই বাড়াবাড়ি। কিন্তু কেনই-বা মহম্মদকে নিয়েই অনবরত কুৎসিত চর্চা করতে হবে? সেটা বাড়াবাড়ি নয়? সেটাও এক রকম মনোবিকার নয়? ওরা মন্দ কথা সহ্য করতে পারে না, ওরা তাই বাকস্বাধীনতা বন্ধ রেখেছে, ওরা মন্দ। আর এরা যে বাকস্বাধীনতা চালু রেখে নিন্দেমন্দব্যঙ্গরঙ্গ দিয়ে লাগাতার অন্যদের উত্ত্যক্ত করে মারছে, পেট্রোল ঢালছে, সেটা মন্দ নয়? |
দুই হাতের মন্দিরা |
নাকুরা বাসেলি নাকুরা ভারী গোলমেলে লোক, যত রাজ্যের উগ্র চিন্তা তাঁর মাথায় গিজগিজ করে, যত সব দক্ষিণপন্থী গোষ্ঠীর সঙ্গে তাঁর দহরম মহরম, জেলও খেটেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে আপাতত তদন্তে অতি মনোযোগী মার্কিন সরকার। কিন্তু এতগুলি মার্কিন-ব্রিটিশ-জার্মানের উপর আক্রমণ যদি না হত? রাষ্ট্রদূতের নিধন যদি না হত? এই সরকারি দুশ্চিন্তা দেখা যেত কি? দক্ষিণপন্থীরা তাঁদের মনের মাধুরী মিশিয়ে প্রচার করে যেতেন, ছবি বানিয়ে যেতেন, কার্টুন আঁকতেন, মাঝে মধ্যে অবকাশ মতো কোরান পোড়াতেন। বাস্তবিক, মহম্মদকে নিয়ে তাঁদের কালাপাহাড়ি সৃষ্টিশীলতার যে প্রবল প্রস্ফুরণ, যিশু খ্রিস্টকে নিয়ে তো ততটা দেখা যায় না? কিংবা মোজেসকে নিয়ে? ইউরোপ-আমেরিকার এই ‘অন্য’ সৃষ্টিশীলতা কেবলমাত্র একটি ধর্মের প্রতিই সদা আকৃষ্ট ব্যাপারটা কিন্তু ইন্টারেস্টিং! আর এই সৃষ্টিশীল লোকগুলি যে আবার অবধারিত ভাবে এক ‘অন্য’ রাজনীতির প্রতিও আকৃষ্ট হয়ে পড়েন, সেটাও ইন্টারেস্টিং!
এই যেমন, নাকুরার সঙ্গে বেদম ভাব ফ্লোরিডার সেই যাজক টেরি জোনস্-এর, দুই বছর আগে যিনি তাঁর নিজের তল্লাট গেনসভিল-এ কোরান-পোড়ানোর মহোৎসব পালন করেছিলেন। টেরি জোনস নাকি এই ফিল্মটির ভিডিয়ো-প্রচারেও অত্যন্ত সক্রিয়, মার্কিন তদন্তকারীরা তাঁকে এই প্রচার না করার অনুরোধ জানানোয় জোনস সাংবাদিকদের সোজাসাপটা বলে দিয়েছেন, অনুরোধ রাখতে বয়েই গেছে তাঁর। সরকার কেন যে তাঁকে ‘অনুরোধ’ জানাচ্ছে, কেন যে ‘আদেশ’ বা ‘নির্দেশ’ দিচ্ছে না, সেটা অবশ্য বোঝা সহজ নয়। তবে বোঝা সহজ, ক্যালিফোর্নিয়ার নাকুরা ও ফ্লোরিডার জোনস্ কোন আদর্শের বিনিসুতোয় এঁরা দু’জন গাঁথা। সেই আদর্শের নাম: ইসলামোফোবিয়া। আরও বড় করে বললে, ‘ফার রাইট’ বা ‘অতি দক্ষিণবাদ’। বোঝা সহজ, লিবিয়া ইয়েমেন সুদানের মুসলিমরা তাণ্ডব চালানোয়, মার্কিন নাগরিককে দিনেদুপুরে হত্যা করায় মার্কিন সরকারের এই নড়েচড়ে বসা। নয়তো কোরান পোড়ানোর সময়েও তাদের তত নড়তে দেখা যায়নি কেন? এই অতি-দক্ষিণীরাই উইসকনসিনের গুরুদ্বারে যে হত্যাকাণ্ড ঘটাল, তাতে এমন দেশজোড়া আলোড়ন দেখা যায়নি কেন? কারণ সেখানেও মার্কিন নাগরিকরাই মারা গিয়েছিলেন বটে, তবে তাঁরা ‘অন্য’ নাগরিক, শিখ অভিবাসী! এই যখন সরকার বা সমাজের পরিস্থিতি, স্বভাবতই, আমেরিকা ইউরোপে এই ‘ফার রাইট’-রা দুধে-ভাতে বেড়ে চলেছেন, ইসলাম-বিরোধিতা আর অভিবাসী-বিরোধিতা দুই হাতের মন্দিরার মতো বেজে চলেছে ।
তাই, ৯/১১-র এগারোতম বার্ষিকীতেও কত বিশ্লেষণ, কত চোখের জল, কিন্তু অ্যান্ডার্স বেহরিং ব্রেভিক নামক গণঘাতকের গণহত্যার প্রথম বর্ষপূর্তির দিনটিতেও তেমন তাপ-উত্তাপ নেই নরওয়েতে। কী করেছিলেন ব্রেভিক? তেমন কিছু নয়, কেবল গত বছর ২২ জুলাই অসলো শহরে আট জন, আর অসলোর কাছেই ইউটোয়া দ্বীপে ৬৯ জন ছেলেমেয়েকে একা হাতে মেরে ফেলেন তিনি, যাদের বেশির ভাগই টিন-এজার। ঘোষণা করেন, তাঁর দেশ অভিবাসীদের দাপটে পাল্টে যাচ্ছে, সেই পরিবর্তন রুখতেই তাঁর এই কাজ। নিজেরই ধর্মের মানুষকে মেরে নিজের সরকারকে ধাক্কা দিয়ে অভিবাসন-নীতি (মুসলিম অভিবাসন, অবশ্যই) পাল্টানোর বার্তা।
বিচারের সময় প্রশ্ন উঠেছিল: ব্রেভিক কি পাগল? উত্তর এসেছিল: না, একদম নয়, সম্পূর্ণ সুস্থ। যা করেছেন তিনি, ঠাণ্ডা মাথায় করেছেন। নিশ্চয়ই। রায় বেরোনোর দিনও তাঁর মাথা ভারী ঠাণ্ডা ছিল, মুখে লেগে ছিল এক-চিলতে হাসি, সুস্থ, ঠাণ্ডা সেই হাসি! সত্যি বলতে কী, তাঁর দেশও বেশ ঠাণ্ডা এবং সুস্থ ভাবেই গ্রহণ করেছে ঘটনাটাকে, প্রাথমিক শোক কেটে যাওয়ার পর গত এক বছরে নরওয়ে-তে এ নিয়ে কোনও ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখা যায়নি। বিচারের দিন আদালতে জড়ো হয়েছিলেন বহু নাগরিক, তাঁরাও অদ্ভুত সংযত, চুপচাপ। মজা এটাই। এগারো বছর পরও আল কায়দার সন্ত্রাসের শোক পালন চলে। অভিবাসী-বিরোধী ইসলাম-বিরোধী ব্রেভিকের যে সন্ত্রাস, তার কিন্তু শোক পালন হয় না, সংযমে বিস্মরণে সেই শোক ডুবে যায়।
ব্রেভিক পাগল নন, বরং সুস্থ এবং স্বাভাবিক, এটা খেয়াল রাখলেই এই সংযম ও বিস্মরণের অর্থ বোঝা যায়। ব্রেভিক স্বাভাবিক। তিনি একটি ‘স্বাভাবিক’ ধারার প্রতিনিধি, তাই সেই অসলো-কাণ্ডের পর-পরই ইতালীয় রাজনীতিক মারিয়ো বোর্গেজিয়ো বলেছিলেন, ব্রেভিকের ‘idea’গুলি কিন্তু ‘excellent’। সেই একই ধারার প্রমাণ রেখে এ বছর ব্রেভিকের রায় বেরোনোর পর ফরাসি লেখক রিচার্ড মিলেট বললেন, “ব্রেভিক ইজ হোয়াট নরওয়ে ডিজার্ভস”, সে যা করেছে সেটা ঠিক নয়, কিন্তু যে জন্য করেছে, সেটা নরওয়ের প্রাপ্য, ইউরোপেরও। এই অভিবাসন, এই বহু-সংস্কৃতিবাদ আমেরিকা থেকে আমদানি করেছে ইউরোপ, আর মিলেট-এর মতো লেখক বা বোর্গেজিয়োর মতো নেতার মতে, “ইউরোপের পক্ষে এর মতো খারাপ জিনিস আর হয় না।” নেদারল্যান্ডস-এর গিয়ার্ট ওয়াইল্ডার্সও এই কথাটাই বলে, ‘আই হেট ইসলাম’ ধুয়ো তুলে জনপ্রিয় হয়েছেন। এই ‘লাইন’ নিয়েই ভোটে দাঁড়িয়ে দারুণ সাফল্য পেয়েছে গ্রিসের ‘গোল্ডেন ডন’ দল, কিংবা ২০০২ ও ২০০৭ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়েছেন ফ্রান্সের জঁ-মারি ল্য প্যাঁ। আর এই মুহূর্তে, ইউটিউব আর ফেসবুকে উপচে পড়ছে এঁদের সমর্থন, নব্যপ্রযুক্তিতে তরঙ্গিত হচ্ছে নব্যনাত্সি ভাবধারা।
|
কেবল অর্থনীতি? |
এই নব্যতরঙ্গ নিয়ে তত্ত্ব-রচনাও উথলে উঠছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তত্ত্ব বলছে, অর্থনৈতিক সংকটের জন্যই ইউরোপে অতি-দক্ষিণীদের এই বাড়বাড়ন্ত। তাই কি? গ্রিস যদি এই তত্ত্বের প্রমাণ হয়, নরওয়ে তবে এর অ-প্রমাণ নয় কি? মনে রাখতে হবে, সাম্প্রতিক মন্দাতেও কিন্তু স্ক্যান্ডিনেভিয়ার দেশগুলি, বিশেষত নরওয়ে বা সুইডেন এখনও রীতিমত স্থিতিশীল, সংকটবিহীন! এই দেশগুলিতেই আজও সবচেয়ে বেশি পরিমাণ সরকারি জনকল্যাণ-বরাদ্দ, আক্ষরিক ভাবেই এরা কল্যাণ-রাষ্ট্র। কী করে এলেন তবে ব্রেভিকরা? আমেরিকার বিষয়টাও ভেবে দেখার। মন্দা-সংকট সেখানে তীব্র ঠিকই, কিন্তু নাকুরা বা জোনস-রা তো কেবল সেই সংকটেরই সন্তান নন, এঁদের উত্থানের গল্পটা তো আরও আগেকার! ফ্রান্সের ল্য প্যাঁ-রাও তো নিশ্চিত ভাবেই গত কয়েক দশকের নির্মাণ! তাই, শুধু অর্থনীতির তত্ত্ব দিয়েই এই অসহিষ্ণু দক্ষিণবাদকে বুঝলে ভুল হবে। গোটা পশ্চিম দুনিয়ায় সাংস্কৃতিক সংকট, সাংস্কৃতিক ‘উদ্বেগ’ কী ভাবে সহনশীলতার পারদ ছাপিয়ে উঠছে, হিংসায়, অসহিষ্ণুতায় প্রতিফলিত হচ্ছে, সেটা বুঝতে হবে। ব্রিটিশ সাংবাদিক ম্যাথু গুডউইন তাঁর ‘অতি-দক্ষিণবাদের’ উপর গবেষণায় বলেছেন, অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতার বদলে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার সূত্রেই ইউরোপের দেশে দেশে অতি-দক্ষিণবাদ গাঁথা।
কেবলই কি ইউরোপে? ২০০২-এর গুজরাতও কিন্তু এই রকম একটা প্রশ্ন তুলেছিল। সরকারি প্রযোজনায় যে হিংসার ভয়াবহতা সেখানে দেখেছিলাম আমরা, মধ্যবিত্ত সমাজের সম্পাদনাই তো তার মূল ভরসা ছিল! গুজরাতের মতো বর্ধিষ্ণু অঞ্চলে সেই মধ্যবিত্ত সমাজের প্রোথিত হিংসাভাবের মূলে কি কেবল অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতাই ছিল, আর কিছু নয়?
আসলে ইউরোপ আমেরিকা ভারত, আমাদের সকলের মুশকিল আমরা ভাবি, ‘ওদের’ সংস্কৃতিটাই অসহিষ্ণু, ‘আমরা’ যুক্তিবাদী। ‘আমরা’ যদি কখনও অসহিষ্ণু হই, সেটা অর্থনীতির দোষ, আমাদের সংস্কৃতির দোষ নয়। এই ভাবনাটা মৌলবাদী। এটা থেকে বেরোনো দরকার। তবেই পেট্রোল আর আগুনের ছবি দেখে রাগ হবে না। প্রবল আত্মদহন হবে। |
|
|
|
|
|