২০০৩ সালের পর নয়া তথ্যপ্রযুক্তি নীতি। সঙ্গে নতুন ‘ইনসেনটিভ’ প্রকল্প। এই জোড়া উপহারে রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প মহল খুশি হলেও সার্বিক পরিকাঠামোগত অভাব নিয়ে সোচ্চার হয়েছে তারা।
বুধবার সল্টলেকের উন্নয়ন ভবনে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পমহলের মুখোমুখি হলেন শিল্প তথা তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও দফতরের সচিব-সহ অন্য কর্তারা। তথ্যপ্রযুক্তি নীতি কার্যকর হলে আখেরে কতটা লাভবান হবে শিল্পমহল, তা যাচাই করে নেওয়ার লক্ষ্যেই এই বৈঠকের আয়োজন করে সংশ্লিষ্ট দফতর। পার্থবাবু সরাসরি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্তাদের জানান, নীতি কার্যকর করার দায় সরকারের ঠিকই। ন্যূনতম পরিকাঠামো গড়ে তোলার দায়ও সেই সরকারেরই। কিন্তু রাজ্যের ইতিবাচক দিকগুলির সদ্ব্যবহার করে এখানকার মেধা সম্পদ এ রাজ্যেই ধরে রাখতে সক্রিয় হতে হবে সংস্থাগুলিকেও।
নীতির খুঁটিনাটি ও অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা শুরু হওয়ার আগেই অবশ্য পার্থবাবু অন্য বৈঠকে যোগ দিতে চলে যান। তথ্যপ্রযুক্তি সচিব এ সুব্বাইয়া ও অন্য আধিকারিকেরা শিল্পমহলের মুখোমুখি হন। এই পর্বে পরিকাঠামো নিয়ে বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা প্রশ্ন তোলেন। মার্কিন সংস্থা ডেটাবাজারের অন্যতম কর্তা এস পি মুখোপাধ্যায় জানান, জেলায় জেলায় তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে অন্যতম বাধা ‘ব্যান্ডউইড্থ’ বা তথ্য পাঠানোর মাধ্যমের অভাব। তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের মূল উপকরণ ব্যান্ডউইড্থ উন্নত করতে রাজ্যে কেব্ল ল্যান্ডিং স্টেশন প্রকল্প এখনও পরিকল্পনা স্তরেই থেকে গিয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ। এর উত্তর এড়িয়ে গিয়েছেন সুব্বাইয়া।
প্রশ্ন ওঠে অন্যান্য শহরের তুলনায় কলকাতায় অফিস তৈরির জায়গার দাম নিয়েও। শিল্পমহলের দাবি, নানা করের চাপে এখানে দাম দাঁড়িয়েছে প্রতি বর্গ ফুটে ৬০ টাকা। অথচ হায়দরাবাদে সেই একই ধরনের জায়গার দাম বর্গ ফুট প্রতি ৩০ টাকা। সংস্থাগুলির অভিযোগ, কর কাঠামো সংশোধন না-করলে কম খরচে ব্যবসা চালানোর সুবিধার নিরিখে আরও পিছিয়ে পড়বে কলকাতা।
তথ্যপ্রযুক্তি নীতিতে ছোট ও মাঝারি সংস্থার জন্য হরেক আর্থিক সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা রয়েছে। ন্যাসকমের পূর্বাঞ্চলীয় কর্তা সুপর্ণ মৈত্র জানতে চান, কেন্দ্রীয় সরকারের ধাঁচে সরকারি জিনিসপত্র কেনার ব্যাপারে রাজ্য সরকারও ছোট ও মাঝারি সংস্থাকে বিশেষ সুযোগ দেওয়ার কথা ভাবছে কি না। এ প্রসঙ্গে সুব্বাইয়া জানান, স্থানীয় সংস্থাকে সুযোগ দিতে নয়া ক্রয় নীতি তৈরি করছে রাজ্য।
সব মিলিয়ে নয়া তথ্যপ্রযুক্তি নীতিকে শুধুই খাতায়-কলমে আটকে না-রেখে বাস্তবসম্মত করতে আগ্রহী রাজ্য সরকার। সেই সূত্রে মন্ত্রী ও সচিব, দু’জনেই জানিয়েছেন শিল্পমহলের মতামতের ভিত্তিতে নীতিতে নতুন সংযোজন করতেও পিছপা হবেন না তাঁরা। |