|
|
|
|
|
|
দরাজ হচ্ছে ব্যাঙ্কও |
গ্যারাজ ভরতে যখন পুরনো গাড়িই সই, তখন ঋণের সুযোগ পায়ে ঠেলবেন কেন। জানাচ্ছেন
দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত |
নতুন গাড়ির মতোই ঋণ পেতে পারেন পুরনো গাড়ি কিনলেও। এখন অনেক সংস্থাই পুরনো গাড়ির ব্যবসায় নেমেছে। যেমন, মারুতি ট্রু-ভ্যালু, মহীন্দ্রা ফার্স্ট চয়েস ইত্যাদি। সংগঠিত ব্যবসায় আসছে আরও অনেক সংস্থাই। তা ছাড়া, এর বাইরে তো পুরনো গাড়ি কেনাবেচা হয় দীর্ঘ দিন ধরেই। এলাকার গ্যারাজে বা পরিচিত মহলে নিজেদের মধ্যেই গাড়ির হাতবদল নতুন নয়। কিন্তু সব ক্ষেত্রেই কি ব্যাঙ্ক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি নতুন গাড়ির মতো ঋণ দেয়? দিলে, সেখানে সুদের হার কত? গাড়ির দামের কতটা ঋণ মেলে? আসুন আলোচনায় বসি।
গাড়ির বয়স
গাড়ির বয়সটা এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণ ভাবে বেশি পুরনো গাড়ির অবস্থা ভালো থাকে না। তা ছাড়া যত দিন যায়, পুরনো গাড়ির দামও পড়তে থাকে। ফলে খুব বেশি পুরনো হলে ঋণের অঙ্ক কম হয়। এ ক্ষেত্রে এক একটি ব্যাঙ্ক এক এক রকম হিসেব করে। কেউ তিন বছরের বেশি পুরনো গাড়ির জন্য ঋণ দেয় না। কারও ক্ষেত্রে আবার এই সময়সীমা পাঁচ বছর। কারও শর্ত আবার একটু অন্য রকম। যেমন, তার ক্ষেত্রে ঋণ শোধের মেয়াদ শেষের সময় গাড়ির বয়স দশ বছরের বেশি হলে চলবে না।
ঋণের ঊর্ধ্বসীমা
পুরনো গাড়ি কিনতে কতটা ঋণ আপনি পেতে পারেন, সাধারণত তার একটা ঊর্ধ্বসীমা ঠিক করে দেয় অধিকাংশ ব্যাঙ্কই। কেউ হয়তো ১০ লক্ষ টাকার বেশি ঋণ দেয় না। আবার কেউ তা দেয় বেতনভোগীদের নিট মাসিক আয়ের ৩০ গুণ পর্যন্ত। তবে সেটাই সব নয়। কারণ, আখেরে কতটা টাকা ধার হিসেবে আপনি হাতে পাবেন, তা নির্ভর করে আরও অনেকগুলি বিষয়ের উপর। যেমন, ইতিমধ্যেই তাঁর কোনও ঋণ আছে কি না, ঋণ শোধের ক্ষমতা কেমন ইত্যাদি।
গাড়ির দামের কতটা
নির্ভর করে ব্যাঙ্কের উপর। কেউ দামের ৮০% পর্যন্ত ঋণ দেয়। কেউ হয়তো দেয় ৫০%। বাকিটা কিন্তু পকেট থেকে বার করতে হবে আপনাকেই।
সুদ কেমন
ঝুঁকির কারণে স্বাভাবিক ভাবেই পুরনো গাড়ি-ঋণে সুদের হার নতুনের তুলনায় কিছুটা বেশি। তার উপর নতুন গাড়ির থেকে পুরানোর ‘রি-সেল’ দামও অনেকটাই কম। তবে নামী ডিলারশিপ বা গ্যারেজ থেকে স্বীকৃত (সার্টিফায়েড) গাড়ি কিনলে, সুদ কিছুটা কম হতে পারে। সুদের হার নির্ভর করে মেয়াদের উপরেও। |
|
মেয়াদ কেমন
পুরনো গাড়ি মানেই তা আগেও ব্যবহার হয়েছে কিছু দিন। তাই তার কন্ডিশন আরও দ্রুত পড়তির দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা। সেই কারণেই এখানে ঋণ শোধের মেয়াদ নতুন গাড়ির মতো অত বেশি দিন নয়। তা মেটাতে হয় তুলনায় অনেক কম সময়ে। যেমন, কোনও কোনও ব্যাঙ্ক ঋণ দেয় সর্বাধিক পাঁচ বছরের জন্য। কেউ আবার মেয়াদের হিসাব করে গাড়িটি প্রথম কেনার দিন থেকে। এবং ঋণ দেয় তখন থেকে সাত বছরের জন্য। অর্থাৎ, ২০১০ সালে প্রথম বার কেনা গাড়ি যদি এ বছর কেউ ফের কেনেন, তা হলে তাঁকে তা শোধ করতে হবে ২০১৭-এর মধ্যে।
মিটিয়ে ফেলুন পুরনো ঋণ
যে কোনও গাড়ি ফের কেনা-বেচার আগেই তার বকেয়া ঋণ পুরোপুরি মিটিয়ে ফেলা জরুরি। কারণ, পুরনো ঋণ শোধ না-করা পর্যন্ত ফের নতুন করে ধার পাওয়া সম্ভব নয়।
ঋণ পাবেন আত্মীয়ের কাছে কিনলেও
বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন যে কারও কাছে গাড়ি কিনলেই কিন্তু ব্যাঙ্কের কাছে ধার পেতে পারেন আপনি। এমনিতে মারুতি ট্রু-ভ্যালু বা মহীন্দ্রা ফার্স্ট চয়েসের মতো সংস্থার কাছ থেকে গাড়ি কিনলে যে কোনও ব্যাঙ্কই ঋণ পাওয়া সহজ। কিন্তু ব্যক্তিগত স্তরে গাড়ি কেনা-বেচা হলেও ঋণ মিলতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রে গাড়ির দাম ও অবস্থা যাচাই করিয়ে নিতে হবে। কোথাও এই বিষয়গুলি বাজিয়ে দেখেন এক জন স্বীকৃত অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ার। কোনও ব্যাঙ্কের আবার এ জন্য নিজেরই বিশেষ পরিকাঠামো রয়েছে। সেখান থেকেই সব কিছু খতিয়ে দেখে ঋণ দেয় তারা।
এ ছাড়া...
পুরনো গাড়ির ঋণে উপরের বিষয়গুলি তো মাথায় রাখতেই হবে। সেই সঙ্গে স্পষ্ট করে জেনে নিতে হবে অন্যান্য মাপকাঠি। খোঁজ নিতে হবে প্রয়োজনীয় নথিপত্র নিয়েও।
তা হলে আর দেরি কেন? কোমর বাঁধুন।
|
|
|
|
|
|