পশ্চিমে জোর সচেতনতা বৃদ্ধিতে
ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণে, ভাবাচ্ছে ডেঙ্গি
কটা সময় ম্যালেরিয়ার দাপট ছিল চূড়ান্ত। কাঁপুনি দেওয়া জ্বরে কাবু হতেন বহু মানুষ। দাপট ছিল ম্যালিগন্যান্ট ম্যালেরিয়ারও সেই পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা স্বাস্থ্য দফতর। কমানো গিয়েছে আন্ত্রিকের দাপটও। তবে এই মুহূর্তে ডেঙ্গির প্রকোপ রীতিমতো ভাবাচ্ছে স্বাস্থ্য দফতরকে। সম্প্রতি টানা তিন দিনের অতি বর্ষণে কিছুটা স্বস্তি মিললেও চিন্তায় দাঁড়ি পড়েনি। পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেপুটি সিএমওএইচ-২ প্রলয় আচার্য বলেন, “ম্যালেরিয়া ও আন্ত্রিক রোধে ক্রমাগত প্রচার, সচেতনতা বৃদ্ধি, মেডিকেটেড মশারি বিতরণ প্রভৃতির মাধ্যমে ওই দুই রোগ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা গিয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে ডেঙ্গিও নিয়ন্ত্রণে আনা যায় সে জন্য মানুষকে সচেতন করা হবে।”
গত ৩ বছরের পরিসংখ্যান বলছে, ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা কমছে। ২০১০ সালে জেলায় ৩৫৫০ জন মানুষ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। ২০১১ সালে সংখ্যাটা কমে দাঁড়ায় ১৫৫৩-য়। চলতি বছর জুলাই পর্যন্ত ম্যালেরিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৭৪ জন। পশ্চিম মেদিনীপুরের বিনপুর ১, ২ অর্থাৎ লালগড় ও বেলপাহাড়ি, জামবনি ও নয়াগ্রাম এই চারটি ব্লকেই ম্যালেরিয়ার প্রভাব বেশি। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, মূলত সচেতনতার অভাবেই ওই পরিস্থিতি ছিল। তাই প্রচার ও সেই সঙ্গে মশারি বিতরণ, নিয়মিত ডিডিটি স্প্রে প্রভৃতি ব্যবস্থার মাধ্যমে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে।
একই ভাবে আন্ত্রিকের প্রকোপও কমছে বলে স্বাস্থ্য দফতরের দাবি। ২০১০ সালে জেলায় যেখানে ১ লক্ষ ৬৭ হাজার ৭২৬ জন আন্ত্রিকে আক্রান্ত হয়েছিলেন, সেখানে গত বছর বন্যা হওয়া সত্ত্বেও ১ লক্ষ ৭০ হাজার ৩৬৬ জন মানুষ আন্ত্রিকে আক্রান্ত হন। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, বন্যা হলেই আন্ত্রিকের প্রভাব বাড়ে। অথচ, ২০১০ সালে খরাতে যত আন্ত্রিক দেখা গিয়েছিল বন্যাতে তার থেকে মাত্র ৩ হাজারের কিছু বেশি মানুষ আন্ত্রিকে আক্রান্ত হয়েছিলেন। চলতি বছরের জুলাই মাস পর্যন্ত সেই সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ৬ হাজার ৮৪৭ জন। কমার কারণ কী? স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, এখন আন্ত্রিক হলেও এলাকায় ‘এইচ টু এস’ কিট পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে জল পরীক্ষার জন্য। ২০ মিলিলিটার জলে সেই কিট দিলে যদি কালো হয়ে যায় তাহলে বোঝা যাবে তাতে আন্ত্রিকের জীবাণু রয়েছে। মানুষকেও সচেতন করা হচ্ছে। ব্যবস্থা নেওয়ায় রোগ দ্রুত ছড়াতে পারছে না। তাতেই সাফল্য মিলছে।
ডেঙ্গির ক্ষেত্রে চিত্রটা বিপরীত। স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, ২০১০ সালে জেলায় ৪ জনের ডেঙ্গি হয়েছিল। ২০১১ সালে একজনও ডেঙ্গি আক্রান্ত মেলেনি। কিন্তু চলতি বছরে অগস্ট পর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৪২ জন! হঠাৎ কেন ডেঙ্গির এত বাড়াবাড়ি? স্বাস্থ্য দফতরের ব্যাখ্যা, যত দিন যাচ্ছে ততই মানুষ কলকাতামুখী হচ্ছেন। জেলাতেও বাড়ছে কলকারখানা। বাড়িতে বসছে বাতানুকূল যন্ত্র, রয়েছে ফ্রিজ। সব মিলিয়ে জমা জলের পরিমাণ বাড়ছে। আর তাতেই ডিম পাড়ছে ডেঙ্গির মশা। অনেকে শহর থেকেও এই রোগের জীবাণু বহন করে আনছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা বৃদ্ধিতেই জোর দিচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। বিলি করা হচ্ছে লিফলেট। স্বাস্থ্য দফতরের মতে, মানুষকে সচেতন করা গেলেই এই ধরনের রোগ মোকাবিলা করা যাবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.