এ বার ঝাড়গ্রামেও ডেঙ্গি আক্রান্তের সন্ধান মিলল। সরকারি ভাবে ৪ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন বলে ঝাড়গ্রাম স্বাস্থ্য জেলা সূত্রে জানা গিয়েছে। ওই চার জনের মধ্যে শহরের সুভাষপল্লির বছর ছাব্বিশের এক যুবক, ঝাড়গ্রামের রাজডিহা গ্রামের ১২ বছরের এক কিশোর ও বেলিয়াবেড়ার নোটা অঞ্চলের বছর উনিশের এক তরুণের চিকিৎসা চলছে ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে। সোমবার ঝাড়গ্রাম শহরের ডেঙ্গি আক্রান্ত বছর চোদ্দোর এক কিশোরকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
বেসরকারি সূত্রে অবশ্য জানা গিয়েছে, ঝাড়গ্রামে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যাটা আরও বেশি। ঝাড়গ্রাম শহরের এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, শহরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের চণ্ডীপুরে ৯ বছরের এক বালিকার রক্তে ডেঙ্গির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। বাড়িতেই মেয়েটির চিকিৎসা চলছে। শহরের রঘুনাথপুর এলাকার এক বধূও ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন বলে তাঁর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে। শহরের বেসরকারি প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরিগুলিতেও বেশ কয়েকজনের রক্তে ডেঙ্গি ধরা পড়েছে। একটি প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরি গত এক মাসে ৫ জনের রক্তে ডেঙ্গি পেয়েছে বলে জানিয়েছে। অন্য একটি প্যাথলজিক্যাল গবেষণাগার গত দু’সপ্তাহে ৪ জনের রক্তে ডেঙ্গি পেয়েছে বলে জানিয়েছে। শহরের সরকারি স্বীকৃত একটি প্যাথলজি-সেন্টারের কর্ণধার বললেন, “রক্তে ডেঙ্গির অস্তিত্ব পাওয়ার বিষয়টি বিস্তারিত তথ্য-সহ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরে জানানো হয়েছে।” ঝাড়গ্রাম স্ব্যস্থ্য জেলার ভারপ্রাপ্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) তপনকুমার ব্যাপারি অবশ্য ডেঙ্গি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে ঝাড়গ্রামের এক স্বাস্থ্য কর্তা বলেন, “যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের বেশিরভাগই কলকাতা থেকে রোগটি নিয়ে এসেছেন। মশা-নিধনে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা না-হলে এই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।”
এই পরিস্থিতিতে বামেদের ক্ষমতাসীন ঝাড়গ্রাম পুরসভা নড়েচড়ে বসেছে। গত সোমবার পুরভবনে ডেঙ্গি-সংক্রান্ত একটি বৈঠক ডাকেন পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ঝাড়গ্রামের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট দীপাঞ্জন দে, ঝাড়গ্রামের সহকারি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (এসিএমওএইচ) ভূপতিনাথ মাঝি, পুরসভার বিরোধী দলনেতা তৃণমূলের আনন্দমোহন পণ্ডা-সহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের পুরপিতা, পুরমাতা ও সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড-কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্যেরা। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ১৭টি ওয়ার্ডে মশা মারার জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে। তবে ঝাড়গ্রাম পুরসভায় মশা মারার কোনও ‘কামান’ নেই। সেজন্য স্প্রে-মেশিন দিয়েই মশা মারার তেল ছড়ানো হবে। পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, “পুরসভার হাতে ৯টি স্প্রে-মেশিন আছে। আরও ২৫টি স্প্রে-মেশিন কেনা হচ্ছে। বুধবার থেকে বিভিন্ন ওয়ার্ডে মশা মারার জন্য তেল স্প্রে করার কাজ শুরু হবে।” পুরবাসীকে সচেতন করার জন্য প্রচারপত্র বিলি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রদীপবাবু। |