ডেঙ্গির মোকাবিলায় ব্যবস্থা নিতে সরকারি তরফে দেরি হয়েছে বলে মন্তব্য করলেন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন।
এর আগে মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানিয়েছিলেন, ডেঙ্গি প্রতিরোধে কলকাতা পুরসভার কিছু গাফিলতি ছিল। পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিয়ে পরের বার পুরসভা অনেক আগে থেকে সতর্ক হবে বলে আশ্বাসও দেন তিনি। মঙ্গলবার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে একটি অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনও ডেঙ্গি পরিস্থিতিতে প্রশাসনিক বিলম্বের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, “স্বাস্থ্য-সচিবের সঙ্গে কথা বলেছি। ডেঙ্গি নিয়ে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, সে সব তিনি বলেছেন। মনে হয়, ব্যবস্থা নিতে একটু বিলম্ব হয়েছে। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।” মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, রাজ্যপাল যদি রিপোর্ট চান, তা হলে পুরসভার তরফে সবিস্তার রিপোর্ট পেশ করা হবে।
এ দিন মহাকরণে ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য দফতর ও কলকাতা পুরসভার পদস্থ অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখতে প্রতি ৭২ ঘণ্টা অন্তর এই বৈঠক চলবে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর। বৈঠকে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে হাজির ছিলেন স্বাস্থ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র এবং পুরসভার তরফে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় ও মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ। |
মশার ধূপ জ্বেলেই বাসে ঘুম। মঙ্গলবার। ছবি: সুদীপ আচার্য |
দিন কয়েক আগে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজ সময়ে শুরু করেনি কলকাতা পুরসভা। এ নিয়ে রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়ে যায় পুর-প্রশাসন। এ দিনের বৈঠক শেষে মেয়র বলেন, “আগামী বছর থেকে মার্চের শুরুতেই শহর জুড়ে মশা নিধনের কাজ শুরু করবে পুরসভা।” ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া ইত্যাদি মশাবাহিত রোগের প্রতিরোধে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি আশ্বাস দেন।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পরেও ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজে যাতে কোনও ঢিলেমি দেখা না যায়, সে বিষয়ে এ দিন ফের সতর্ক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ডেঙ্গি মোকাবিলার কাজে যাতে কোনও খামতি না থাকে, সে ব্যাপারে নজর রাখা, প্রতিটি এলাকায় ডেঙ্গির জীবাণুবাহী মশা দমনের কাজ চালিয়ে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। জ্বরে আক্রান্তদের জন্য রক্ত পরীক্ষার ক্যাম্পগুলিও যাতে আগামী কিছু দিন খোলা থাকে, তা-ও নিশ্চিত করতে বলেছেন। কোথায় কত জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত, পুরসভা এবং স্বাস্থ্য দফতর এ পর্যন্ত কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে, বৈঠকে সে সবও তাঁকে নিয়মিত জানাতে বলেন মমতা।
স্বাস্থ্য দফতরের মুখপাত্র অসিত বিশ্বাস বলেন, “হাওড়ার পরিস্থিতি খুব খারাপ। তাই হাওড়ার ব্যাপারে আলাদা গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতরকে হাওড়ার ডেঙ্গি মোকাবিলায় ব্যবস্থা গ্রহণ সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, ডেঙ্গি প্রতিরোধে কী কী করা উচিত, রোগের উপসর্গ, কী করা উচিত, কী নয় যাবতীয় তথ্য সংবলিত স্বাস্থ্য দফতরের লিফলেট আরও বেশি করে বিলি করার জন্য হাওড়ার জেলাশাসকের দফতরে জমা দিয়ে আসতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
এ দিকে, দেশের ডেঙ্গি আক্রান্তের প্রায় দশ শতাংশ এ রাজ্যের হওয়ায় নজরদারি ও রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থা জোরদার করতে বলেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। কেন্দ্রের এক বিশেষজ্ঞ দল সম্প্রতি ডেঙ্গি-আক্রান্ত এলাকা ঘুরে দেখে। |