গায়িকার অপমৃত্যু • আইনশৃঙ্খলার অবনতি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
মাটিগাড়ার নাবালিকা গায়িকার মৃত্যু রহস্যের পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি তুলল দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্ট। মঙ্গলবার দুপুরে ফ্রন্টের তরফে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনার আনন্দ কুমারকে স্মারকলিপি দিয়ে ওই দাবি জানানো হয়েছে। শহরের আইন শৃঙ্খলার চূড়ান্ত অবনতির প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি শিলিগুড়ি পুলিশ নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে না বলে ফ্রন্টের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে। বিশেষ করে বামপন্থী কর্মী, সমর্থকদের জামিন অযোগ্য মিথ্যা মামলা জড়ানো হচ্ছে বলে ওই নেতারা অভিযোগ করেছেন। ফ্রন্টের বড় শরিক সিপিএমের ভারপ্রাপ্ত জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার বলেন, “শহরের যা অবস্থা তাতে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন চুরি, ছিনতাই-এর ঘটনা ঘটছে। মাটিগাড়ার একটি মেয়ে মারা গেল। পরিবারের তরফে খুনের অভিযোগ করা হল। পুলিশের একাংশ আত্মহত্যা ঘটনা বলে চুপচাপ বসে রয়েছে। পাশাপাশি, নানা এলাকায় শাসক দলের নেতাদের নির্দেশে বামপন্থী কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা চলছেই।” |
শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটে বাম নেতারা। ছবি তুলেছেন কার্তিক দাস। |
তিনি জানান, কমিশনার বিষয়গুলি দেখতে বলেছি। দ্রুত পুলিশ সঠিক কোনও ব্যবস্থা না নিলে রাস্তা নেমে আন্দোলন করা ছাড়া উপায় থাকবে না। তবে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা এবং পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার। তিনি বলেন, “অভিযোগ যে কেউ করতেই পারেন। এই নিয়ে বলার কিছু নেই। এটা ঠিক যে কিছু ঘটনা ঘটেছে। তবে পুলিশ হাত গুটিয়ে বসে নেই। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। প্রতি মামলা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। আর মিথ্যা মামলার কোনও প্রশ্নই নেই। মাটিগাড়ার কিশোরীর ঘটনাটিরও তদন্ত চলছে।” সম্প্রতি মাটিগাড়ার একটি পানশালার নাবালিকা গায়িকা দীপা শর্মার অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। একটি ভাড়া বাড়ি থেকে দীপার দেহটি উদ্ধার হয়। পরিবারের তরফে খুন এবং ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করা হয়। ফ্রন্ট নেতাদের অভিযোগ, প্রথম থেকেই পুলিশ মামলাটি আত্মহত্যার বলে গুরুত্ব দিতে চাইছে না। নাবালিকাকে দিয়ে পানশালায় কাজ করানোর অভিযোগ ওঠার পরেও হোটেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মৃতার পরিবারের লোক পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তদন্তের আশ্বাস ছাড়া কিছুই মেলেনি। এ দিন বামফ্রন্টের কর্মসূচিকে সিপিআই জেলা সম্পাদক উজ্জ্বল চৌধুরী, ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক অনিরুদ্ধ বসু, আরএসপি-র ভারপ্রাপ্ত জেলা সম্পাদক তাপস গোস্বামী-সহ ফ্রন্টের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘শহর জুড়ে ছিনতাই চলছে। থানার পাশে মন্দিরে চুরি হচ্ছে। থানার মহিলারা গেলে বাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। পুলিশ দুষ্কৃতীদের না ধরে রাতের অন্ধকারে গরিব হকারদের উচ্ছেদ করছে। শাসক দলের নেতাদের নির্দেশে বামপন্থীদের নামে মামলা করা হচ্ছে। স্কুল শিক্ষকেরাও রেহাই পাচ্ছেন না।” বামফ্রন্টের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলার অবনতির প্রশ্ন তুলে বৃহত্তর শিলিগুড়ি নাগরিক মঞ্চের তরফেও কমিশনারকে স্মারকলিপি হয়েছে। মঞ্চের তরফে সুনীল সরকার, রতন বণিকেরা জানান, পুলিশ কমিশনারেট তৈরি হওয়ায় শহরবাসী খুশি। কিন্তু যেভাবে চুরি, ছিনতাই-র ঘটন বেড়ে চলেছে তাতে উদ্বেগ বাড়ছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবও পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। মঞ্চের দাবি, দ্রুত পুলিশকে শহরে নজরদারি বাড়িয়ে প্রতিটি ঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করতে হবে। |