জলপাইগুড়ির হোমের তথ্যে অসঙ্গতির অভিযোগ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি |
আবাসিকদের নিয়ে তথ্যে এ বার নানা ‘অসঙ্গতি’ মিলল জলপাইগুড়ির বেগুনটারি এলাকার ‘নিজলয়’ হোমে।
জেলার শিশুকল্যাণ সমিতি দাবি করেছে, ওই হোমের নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করে দেখা গিয়েছে, হোমে থাকা কয়েকজন কিশোরীর নাম নথিপত্রে নেই। আবার আবাসিক না হয়েও কয়েকজন কিশোরী নিয়মিত ওই হোমে থাকছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। পক্ষান্তরে শিশুকল্যাণ সমিতির ভূমিকা নিয়ে ‘কটাক্ষ’ করার পাশাপাশি, হোম কর্তৃপক্ষের দাবি, অন্য কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তাঁদের বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্র’ করেছে।
শনিবার গভীর রাতে ওই হোম থেকে ১১ জন কিশোরী পালায়। শহরেরই একটি এলাকা থেকে তারা রবিবার উদ্ধার হয়। ওই কিশোরীদের অভিযোগ, তুচ্ছ কারণে হোমের কর্মীরা তাদের নিয়মিত মারধর করে। ঠিকমতো খেতে দেওয়া হয় না। এই ঘটনা নিয়ে হইচই শুরু হলে মহকুমাশাসক (জলপাইগুড়ি সদর) সাগর চক্রবর্তী হোমে গিয়ে তদন্ত করেন। ইতিমধ্যে পুলিশের মাধ্যমে হোমের নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করে শিশুকল্যাণ সমিতি।
জলপাইগুড়ির জেলাশাসক স্মারকী মহাপাত্র বলেন, “মহকুমাশাসক বেগুনটারির হোমের বিষয়ে সামগ্রিক তদন্ত করেছেন। তিনি তদন্ত রিপোর্ট জমা দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মারধরের যে অভিযোগ উঠেছে, সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যারা শিশু ও কিশোরীদের মারধর করেছে, তাদের শাস্তি পেতেই হবে। শিশু কল্যাণ সমিতির সঙ্গে বৈঠকে বসব।” আজ, বুধবার সমিতির সঙ্গে জেলাশাসকের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
সমিতি সূত্রে জানানো হয়েছে, কোনও হোমে নতুন আবাসিক এলে প্রথমেই তার নাম, ঠিকানা এবং অন্য খুঁটিনাটি নথিভুক্ত করাটাই বিধি। যারা হোম ছেড়ে চলে গিয়েছে, তাদের নামও পৃথক ভাবে তালিকাভুক্ত করতে হয়। প্রতিদিন সেই তালিকা যাচাইও করার কথা। শিশুকল্যাণ সমিতির সদস্য শঙ্কর দাস জানান, ওই হোমের নথিপত্রে কেন ‘অসঙ্গতি’ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এ দিনই ওই হোম কর্তৃপক্ষ আবাসিকদের নিয়ে জেলাশাসকের দফতর এবং পুলিশ সুপারের দফতরে তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা নানা অভিযোগের প্রতিবাদে স্মারকলিপি দিতে যান। হোম পরিচালনকারী সংস্থার প্রকল্প আধিকারিক শিখা মিত্র বলেন, “অনেক সময়ে ছোটখাটো ত্রুটি হতেই পারে। হোমে কী আইন অনুসরণ করতে হয়, তা শিশুকল্যাণ সমিতিরই জানানোর কথা। দুর্ভাগ্যের বিষয়, শিশুকল্যাণ সমিতি আমাদের হোমকে বেশি সময় দিতে পারে না। তারা অন্য হোম নিয়েই ব্যস্ত।” শিখাদেবীর অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে শিশুকল্যাণ সমিতি।
|