চতুষ্কোণ রত্ন নিয়ে ফেড কাপে যাচ্ছে লাল-হলুদ
|
ইস্টবেঙ্গল-৪ (বলজিৎ-হ্যাটট্রিক, মননদীপ-পেনাল্টি)
আর্মি একাদশ-০ |
ফেড কাপে যাত্রার আগে লাল-হলুদের চার মহাপ্রাপ্তি।
সেনাবাহিনীকে বড় ব্যবধানে হারানোর চেয়েও মঙ্গলবার যুবভারতীতে যে চতুষ্কোণ অমূল্য রত্ন লাভ করল ট্রেভর মর্গ্যানের দল
পঞ্জাবের ‘পঞ্চ পাণ্ডব’: ইস্টবেঙ্গলের অস্ত্রাগারে এ মরসুমে যে সব গোলা-বারুদ আমদানি করা হয়েছে, তাতে ‘পঞ্জাব দ্য পুত্তর’দের বিশেষ ভূমিকা ফুটে উঠছে। দুর্গের শেষ প্রহরী থেকে মাঝমাঠে বৈচিত্র কিংবা গোল-সন্ধানীদের ভিড় সবেতেই যেন পঞ্জাবের সুগন্ধ লেপ্টে আছে! ময়দানের ইতিহাসে (স্মরণকালের মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে না) প্রথম ‘সিংহ’ স্ট্রাইকার জুটি বলজিৎ-মননদীপ। মর্গ্যানের ‘মিউজিক্যাল চেয়ার’ খেলায় যেটুকু সুযোগ পাচ্ছেন, চেটেপুটে সাফ করে দিচ্ছেন। কলকাতা লিগের তিন ম্যাচে জোড়া হ্যাটট্রিক-সহ আট গোলের এভারেস্টে উঠে পড়েছেন বলজিৎ। আর জাতীয় দল থেকে ফিরেই গোলের সরণিতে মননদীপ। রক্ষণে মাঝেমধ্যে ওপারাকে নড়বড়ে দেখালেও, সিদ্ধহস্তে সামলে দিচ্ছেন গুরবিন্দর। গোলে অনবদ্য গুরপ্রীত। আর হরমনজিৎ? চোটের জন্য সেনাবাহিনীর ম্যাচে খেলেননি। তাতে কী? বৈচিত্রের ভাণ্ডারে মোড়া হরমনজিতের জন্য যে প্রথম দলের দরজা হাট করে খোলা! |
হ্যাটট্রিকের গোল বলজিতের। মঙ্গলবার যুবভারতীতে। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস |
স্বদেশি ‘বিপ্লব’: বিদেশি-কেন্দ্রিক ফুটবলকে যেন ময়দান থেকে মুছে ফেলতে চাইছেন মর্গ্যান! কেননা, এগারো জনের দলে আট জন ভারতীয় খেললেও, মাত্র তিন জন বিদেশি থাকে। তাই নতুন মরসুমে ব্রিটিশ কোচের তুরুপের তাস লালরিন্দিকা, লোবো কিংবা ইসফাকের মতো স্বদেশিরাই। পরিস্থিতি যা, তাতে চিডির মতো গোলমেশিনের অভাবও চোখে পড়ছে না। ম্যাচ শেষ হওয়ার কুড়ি মিনিট আগে নামলেন।
কিন্তু তার আগেই বলজিৎ-মননদীপ জুটি দিয়ে গোলের ঠিকানা খোঁজার কাজ শেষ।
মর্গ্যানের ‘মগজাস্ত্র’: মরসুমের শুরুতে অদৃশ্য প্রতিযোগিতার যে বীজ লাল-হলুদে রোপণ করেছিলেন মর্গ্যান, সেটা মাস ঘুরতেই সোনা ফলাতে শুরু করে দিল। প্রত্যেক ফুটবলারের মধ্যেই বাড়তি কিছু করে দেখানোর তাগিদ। যেন বিপক্ষ আর্মি একাদশ নয়, সতীর্থরাই। নিঁখুত পাসিং, বুদ্ধিদীপ্ত ফুটবল এবং বোঝাপড়ার অদ্ভুত মিশেল নিয়ে নতুন উদ্যমে ছুটছে লাল-হলুদ ব্রিগেড।
সঞ্জুর নবজাগরণ: জড়তার স্যাঁতস্যাঁতে আঁচল ছেড়ে মুক্তধারায় বইছেন সঞ্জু। পায়ের জঙ্গল দেখলেই যিনি ‘অ্যান্টিডোট’ হিসেবে ব্যবহার করতেন লং বল থিওরি, তিনি-ই এখন নিজে দায়িত্ব নিয়ে জঞ্জাল পরিষ্কার করছেন। ফাঁকা জায়গা খুঁজছেন, বল বাড়ানোর জন্য।
এখন প্রশ্ন, এত ঝলমলে আলোর মধ্যে কি কোনও অন্ধকারই নেই ইস্টবেঙ্গলে? আছে। মঙ্গলবারের চারটে গোলেই কোনও না কোনও ভাবে আর্মির ব্যর্থতা লুকিয়ে আছে। বিপক্ষ গোলকিপার দু’টো ফস্কালেন, একটির পিছনে বিপক্ষ ডিফেন্সের বোঝাপড়ার অভাব, একটি পেনাল্টি।
ফেড কাপ মহাযুদ্ধে কিন্তু এত অযাচিত সুযোগ পাওয়া যাবে না!
|
ইস্টবেঙ্গল: গুরপ্রীত, ওপারা, সৌমিক, নওবা, গুরবিন্দর, সঞ্জু (লালরিন্দিকা), পেন (কেভিন), মেহতাব, ইসফাক, মননদীপ (চিডি), বলজিৎ। |