একেবারে সম্মুখ সমর!
বিশালাকায় ভাল্লুকের সামনে একা বছর পঞ্চাশের এক চাষি। ওই অবস্থাতেও হিংস্র ভাল্লুখের সঙ্গে প্রাণপণ লড়াই করে নিজের জীবন বাঁচালেন পুরুলিয়ার কোটশিলা থানার হরতান গ্রামের নিরঞ্জন মাহাতো।
সোমবার সকালে খেতের কাজ সেরে বাড়ির ফেরার পথে গ্রামেরই কাছে ওই ঘটনাটি ঘটেছে। প্রতিরোধের মুখে পড়ে পিঠটান দেয় ভাল্লুক! লড়াইয়ে অবশ্য সামান্য চোট পেয়েছেন নিরঞ্জনবাবু। প্রসঙ্গত, গত ৩০ অগস্ট হরতান লাগোয়া কাঁড়িয়র গ্রামের অদূরে চৈতু মুড়া নামে এক প্রৌঢ়ও একই ভাবে একটি ভাল্লুকের আক্রমণের শিকার হন। তিনিও ওই ভাল্লুকটির সঙ্গে লড়াই করে নিজেকে বাঁচিয়েছিলেন। আহত অবস্থায় তাঁকে স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করেন। বর্তমানে তিনি বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
মাঠেঘাটে কাজ করার সূত্রে নিরঞ্জনবাবুর চেহারা বেশ শক্তপোক্ত হলেও এ ধরনের অভিজ্ঞতা এই প্রথম। ঘটনা সম্পর্কে নিরঞ্জনবাবু বলেন, “খেত থেকে একাই বাড়ি ফিরছিলাম। খেতের পাশেই ঝোপ। আচমকাই ভাল্লুকটি ওই ঝোপের আড়াল থেকে বেরিয়ে আমার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। ভাল্লুকটি নখ দিয়ে আমার মুখে মাথায় আঘাত করতে চাইছিল। আমি প্রাণপণে ওকে ঠেলে রেখেছিলাম। জানতাম ও যদি আমার মুখে নখ বসাতে পারে তো আমাকে মেরে ফেলবে। তাই আমিও ওর সামনের দুটো পা দু’হাত দিয়ে ঠেকিয়ে রেখেছিলাম।” এর মাঝেই ভালুকটি তাঁকে মাটিতে ফেলে দেয়। নিরঞ্জনবাবু মাটিতে পড়ে যেতেই কোদাল দিয়ে ভাল্লুকের মাথায় আঘাত করেন। তাতেই ভাল্লুকটি ঝোপের মধ্যে দিয়ে জঙ্গলের দিকে পালিয়ে যায় বলে তিনি জানিয়েছেন।
ভাল্লুকের সামনে পড়েও নিরঞ্জনবাবু ভয় পাননি। কোটশিলার রেঞ্জ অফিসার ললিতমোহন মাহাতো বলেন, “লোকটির সাহসের কথা উল্লেখ করতেই হবে। ভাল্লুকের আক্রমণের মুখে দাঁড়িয়ে এই লড়াই সত্যিই প্রশংসনীয়।” এ দিকে পুরুলিয়া ডিভিশনের ডিএফও অজয়কুমার দাস জানিয়েছেন, ওই এলাকায় বুনো ভাল্লুক-সহ অন্যান্য জন্তুর হানা বাড়তে থাকায় সাবধাণতা অবলম্বন করতে এলাকায় মাইকে প্রচার করা হবে। |