শব্দে শান্তিভঙ্গ, তাই বিমানে দল বেঁধে হানা মৌমাছির
সাবধান! শব্দ করলেই বেরিয়ে পড়বে ওরা। ঝাঁকে ঝাঁকে হুল বাগিয়ে তেড়ে যাবে শত্রুর দিকে। একেবারে শব্দভেদী বাণের মতো।
বিমান ওঠানামার বিকট শব্দ ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে শান্ত জীবনে। সেই কারণেই রেগেমেগে বারবার মৌমাছিরা বিমানে হানা দিচ্ছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
প্রশ্ন উঠেছে, নির্মীয়মাণ নতুন টার্মিনালের আড়ালে কোথাও কি লুকিয়ে মৌমাছির চাক! বিমানবন্দরের পাঁচিল ঘেঁষা গঙ্গানগরের দিকে জঙ্গলে বেশ কিছু মৌচাক আছে বলেও কর্মীরা জানান! বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, বিমান ওঠানামার সময়ে যে শব্দ হচ্ছে, তাতেই মৌমাছির নিস্তরঙ্গ, শান্ত জীবনে নামছে অশান্তি। রানি মৌমাছিকে ঘিরে তৈরি চাক থেকে বেরিয়ে পড়ছে ক্রুদ্ধ মৌমাছির দল। পতঙ্গ বিশেষজ্ঞ স্বপন সুরের বক্তব্য, “বিমানের জন্য বিরক্ত হচ্ছে বলে বিমানেই বসছে মৌমাছিরা।”
বিকট শব্দ যে মৌমাছিরা সহ্য করতে পারে না, তা জানিয়ে পতঙ্গ বিশেষজ্ঞ অমিয় হাটি বলেন, “চোখ থাকলেও গন্ধ শুঁকে শত্রু চিহ্নিত করে তারা। তার পরেই শুরু হয় আক্রমণ। বদলা নেওয়ার স্বাভাবিক প্রবণতা আছে মৌমাছিদের মধ্যে।” স্বপনবাবু আরও জানান, আকাশ থেকে নামার পরে বিমানের গায়ে যে তাপমাত্রা থাকে, সম্ভবত তা মৌমাছিদের কাছে আরামপ্রদ।
অলঙ্করণ: সুমিত্র বসাক
‘আরাম’ হোক বা ‘বদলা’, মৌমাছির হানায় গত ২৩ অগস্ট ও ১০ সেপ্টেম্বর, সোমবার দু’টি বিমান অন্তত ২০ মিনিট দেরিতে ছাড়ে। সোমবার সকালে ইন্ডিগোর একটি বিমানের পেটের কাছে মালপত্র রাখার কেবিনের (কার্গো হোল্ড) দিকে ধেয়ে আসে মৌমাছির দল। প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, “বোঁ বোঁ করে এমন ভাবে বিমানের দিকে তেড়ে এসেছিল, যেন এটাই তাদের টার্গেট।” ২৩ অগস্টও বিকেলে এয়ার ইন্ডিয়ার মুম্বইগামী বিমানের পিছনের দরজার পাশে ঝাঁক বেঁধে বসে যায় তারা।
সে দিনের মতো সোমবারও দমকল অফিসারেরা প্রায় ৯০ মিটার নিরাপদ দূরত্ব থেকে জল ছিটিয়ে মৌমাছি তাড়ান। কিন্তু একটু পরেই আবার একটি বিমানের ককপিটের কাচের উপরে দঙ্গল বেঁধে বসতে দেখা যায় তাদের। বিমান নড়তে শুরু করায় তারা রণে ভঙ্গ দেয়। ওই দিনই বিকেলে আর একটি বিমানের সিঁড়ির কাছে ফের চাক বাঁধতে দেখা যায়।
কর্তৃপক্ষের দাবি, বিমানবন্দরের ভিতরে কোনও বড় গাছ নেই যেখানে মৌমাছি চাক বেঁধে রাখতে পারে। যে বে (যেখানে বিমান এসে দাঁড়ায়)-তে দাঁড়ানো অবস্থায় বিমানগুলি আক্রান্ত হয়েছে, সেগুলি থেকে পাঁচিল অনেক দূরে। ফলে কোথা থেকে এসে মৌমাছির দল হানা দিচ্ছে, তা নিয়ে অন্ধকারে কর্তৃপক্ষ। বিমান সংস্থাগুলির অভিযোগ, বিমান তো দীর্ঘদিন ধরে নামা-ওঠা করছে। এত দিন তো মৌমাছির এত উপদ্রব ছিল না। তা হলে সম্প্রতি কাছাকাছি কোথাও চাক বেঁধেছে তারা, এমনটাই মনে করছে বিমান সংস্থাগুলি।
আশঙ্কা অবশ্য অন্য জায়গায়। বিমানে যখন মৌমাছিরা হানা দিচ্ছে, তখন সেখানে যাত্রী-বিমানকর্মীরা থাকেন। তাঁদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। অভিযোগ, হাত গুটিয়ে বসে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। বিমানবন্দরের মালিকানা তাঁদের হাতেই। সে অর্থে বিমান সংস্থাগুলি ভাড়াটে। ফলে ভাড়াটেদের প্রতি বাড়িওয়ালার বিমাতৃসুলভ আচরণের অভিযোগও উঠে এসেছে মৌমাছির আক্রমণের পরে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.