প্রেমিকাকে ট্রেন থেকে ছুড়ে ফেলে খুনের দায়ে যাবজ্জীবন হল প্রেমিকের। মঙ্গলবার চুঁচুড়া আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (স্পেশাল কোর্ট) আশিসকুমার দেব-এর এজলাসে তোলা হয় আকবর আলি ওরফে ভোলাকে। বিচারক তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ শোনান। সেই সঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদণ্ডের আদেশও দিয়েছেন বিচারক।
সরকারপক্ষের আইনজীবী কালীপ্রসাদ সিংহরায় এবং মৌমিতা ঘোষ জানান, উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটির লালদিঘির বাসিন্দা সাহাজাদি খাতুনের সঙ্গে এলাকারই যুবক আকবর আলির প্রণয়ের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিছু দিন কাটার পরে মেয়েটি বিয়ের জন্য চাপ দেয় আকবরকে। তারই প্রেক্ষিতে আকবর মেয়েটির বাড়ি গিয়ে বলে, ৫০ হাজার টাকা নগদ এবং সঙ্গে আরও যৌতুক দিলে সে এই বিয়েতে রাজি আছে। সাহাজাদির দরিদ্র পরিবার। তাঁরা জানান, এত কিছু দেওয়া সম্ভব নয়। এই নিয়ে দু’পক্ষের কথা কাটাকাটি বাধে। হঠাৎই সকলের সামনে অপমানিত মেয়েটি চড় মারে আকবরকে। ওই যুবক কোনও কথা না বলে তখনকার মতো বেরিয়ে যায়। |
এই ঘটনার বেশ কিছু দিন পরে আকবর তার প্রেমিকার কাছে ‘ভুল স্বীকার’ করে। বলে, সব কিছু ভুলে আবার সম্পর্ক শুরু করতে চায়। কিন্তু এ তার মনের কথা ছিল না। অপমান তখনও ভোলেনি ওই যুবক। গত ১৭ এপ্রিল, ২০১০ সাহাজাদিকে ফোন করে ডেকে পাঠায় আকবর। চন্দননগরের দু’পার্কে ঘোরাফেরা করে তারা। সারা দিন এক সঙ্গে কাটিয়ে ফেরার পথে ব্যান্ডেল থেকে নৈহাটি লোকালে ওঠে দু’জন। ট্রেনের দরজার সামনেই মেয়েটিকে নিয়ে দাঁড়িয়েছিল আকবর। ব্যান্ডেল ছেড়ে ট্রেন হুগলির দিকে কিছুটা এগোতেই চলন্ত ট্রেন থেকে শাহাজাদিকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় ওই যুবক। কর্তব্যরত কয়েক জন রেলপুলিশের কর্মী এবং যাত্রীরা ধরে ফেলেন তাকে। ঘটনাস্থলেই মারা যায় মেয়েটি। তার ভাই সুরজ দিদিকে খুনের অভিযোগ দায়ের করে।
সাহাজাদির মা সাকিলা বানু এ দিন সাজা শুনে চোখের জল সামলাতে পারেননি। তিনি বলেন, “আমার মেয়েকে খুন করে সকলের থেকে দূরে করে দিয়েছে ও। বিচারক এই সাজা দেওয়ায় আমি খুশি।” |