পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিরোধিতা করে ইদিন্তাকারিতে এ বার ৪৮ ঘণ্টার অনশনে বসলেন প্রায় ১ হাজার বিক্ষুব্ধ। তাঁদের অধিকাংশই মহিলা।
কাল পরমাণু-বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রতিবাদে সামিল বিক্ষুব্ধদের সামলাতে গুলি চালায় পুলিশ। তাতে প্রাণ হারান এক মৎস্যজীবী। সেই ঘটনার প্রতিবাদে কাল থেকেই শুরু হয় অনশন। সেই সঙ্গে আজ পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্প বিরোধী আন্দোলনের নেতা এস পি উদয়কুমার এবং পুষ্পরায়ন থানায় আত্মসমর্পণ করার কথা ঘোষণা করেছেন। এই কথা ঘোষণার সঙ্গেই উদয়কুমার আশা প্রকাশ করেন, তাঁরা গ্রেফতার হলেও থামবে না আন্দোলন। অনশনকারীরাও জানান, কোনও মতেই আন্দোলনের পথ থেকে সরে আসা হবে না। তবে পরিস্থিতি যাতে ফের অশান্ত না হয়ে ওঠে সে জন্য মোতায়েন করা হয়েছে কড়া পুলিশি প্রহরা।
গত এক বছরে কুড়ানকুলামের পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পটির বিরোধিতা সীমাবদ্ধ ছিল ইদিন্তাকারি এবং সংলগ্ন গ্রামগুলির মধ্যেই। কিন্তু গত কাল বিক্ষুব্ধদের উপর পুলিশের গুলিচালনা এবং তাতে এক মৎস্যজীবীর মৃত্যুর পর সেই প্রতিবাদের আগুন ছড়িয়ে পড়েছে আশপাশের এলাকাগুলিতেও। আন্দোলনকারীদের প্রতি সমর্থন জানাতে আজ কাজে যাননি দক্ষিণের জেলাগুলির মৎস্যজীবীরা। এমনকী, চেন্নাইয়েও কয়েকটি জায়গায় বিক্ষিপ্ত ভাবে ক্ষোভ দেখানো হয়। তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা পুলিশের ভূমিকাকে সমর্থন করে রাজ্যবাসীর কাছে আবেদন জানিয়ে বলেছেন, পরমাণু-প্রকল্প বিরোধীদের জালে পা না দিয়ে রাজ্যে শান্তি বজায় রাখতে।
এ দিকে, আজ কুড়ানকুলাম পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্পটি রদ করার আবেদন জানানো হল সুপ্রিম কোর্টে। গত সপ্তাহেই কুড়ানকুলামের পরমাণু বিদ্যুৎ চুল্লিতে জ্বালানি ভরার অনুমতি দেয় মাদ্রাজ হাইকোর্ট। আজ সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন প্রশান্তভূষণ। এই আবেদনে বলা হয়েছে, সরকারের নিজস্ব সংস্থাগুলিই এই প্রকল্পটিকে ‘নিরাপদ’ বলে ঘোষণা করেছে। পাশাপাশি বলা হয়েছে, সরকার জানিয়েছে, রাশিয়ার সহযোগিতায় তৈরি এই পরমাণু কেন্দ্রটিতে কোনও ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলে তার জন্য দায়ী থাকবে রাশিয়া, যা সম্পূর্ণ সুপ্রিম কোর্টের রায়বিরুদ্ধ। কাজেই জাপানের ফুকুশিমার মতো পরিস্থিতি ভারতে যাতে কোনও ভাবেই তৈরি না হয়, সে কথা বিচার করে যেন অবিলম্বে এই প্রকল্পটি বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। সুপ্রিম কোর্টে এই মামলাটি প্রশান্তভূষণই লড়বেন বলে জানিয়েছেন। |