ঝটিকা সফরে নামনি অসম ও বড়োভূমির ত্রাণ শিবির ঘুরে গেলেন কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক রাহুল গাঁধী। কথা বললেন শিবিরবাসী মানুষদের সঙ্গে। তার পর রাহুল জানালেন, “ভারতের মাটিতে, ভারতীয়দের ত্রাণ শিবিরে দিন যাপনের এমন দৃশ্যে আমি স্তম্ভিত।” পাশাপাশি, তাঁর ঘোষণা, সন্দেহজনক ব্যক্তি ও অনুপ্রবেশকারীদের কোনও মতেই অসমের মাটিতে আশ্রয় দেওয়া হবে না।
আজ সকাল ৯টা নাগাদ গুয়াহাটি আসেন রাহুল। সেখান থেকে হেলিকপ্টারে যান কোকরাঝাড়। তাঁর সঙ্গে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ভুবনেশ্বর কলিতা, মুখ্যমন্ত্রী-পুত্র গৌরব গগৈ, রাজস্বমন্ত্রী পৃথ্বী মাঝি, শ্রম ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী অকন বরা, পর্যটন ও পরিবহনমন্ত্রী চন্দন ব্রহ্ম, বনমন্ত্রী রকিবুল হুসেন ও বিটিসি প্রধান হাগ্রামা মহিলারি। কোকরাঝাড়ের ক্যাম্বেলপুর হাইস্কুল, গোসাঁইগাঁও গামবারিবিল হাইস্কুল ঘুরে বেলা পৌনে ১টা নাগাদ তাঁরা ধুবুরি যান। পানবাড়ি হেলিপ্যাড থেকে সড়কপথে বিলাসীপাড়ায় লক্ষ্মীগঞ্জ এম ই মাদ্রাসার শিবিরে যান তিনি। যান লখিগঞ্জ মক্তব স্কুল, লখিগঞ্জ হাইস্কুলের শিবির দু’টিতেও। |
গোসাঁইগাঁও জেলার গামবারিবিল হাইস্কুলে শরণার্থীদের সঙ্গে রাহুল গাঁধী। মঙ্গলবার। ছবি: উজ্জ্বল দেব |
ধুবুরি ঘুরে রাহুল যান চিরাং জেলার বাসুগাঁওয়ে। শরণার্থীদের অভিযোগ, অভিজ্ঞতা মন দিয়ে শোনেন রাহুল। সাংবাদিকদের বলেন, “ভারতীয় হয়েও, শিবিরবাসীদের যে ভাবে দু’মাসের উপর ঘরছাড়া হয়ে থাকতে হচ্ছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। সকলেই ঘরে ফিরতে চান। কিন্তু নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। আমি যা দেখলাম তা নিয়ে দিল্লি গিয়ে আলোচনা করব।” হাগ্রামা মহিলারির সঙ্গে বৈঠকের পরে রাহুল জানান, “বিটিসি প্রশাসন প্রকৃত ভারতীয়দের শীঘ্র পুনর্বাসনের যথাসাধ্য চেষ্টা করবে। তবে সন্দেহজনক নাগরিকদের কোনও ভাবেই প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।” হাগ্রামা জানান, “জমির পাট্টা না থাকা ও ভোটার তালিকায় নাম না থাকা শিবিরবাসীদের পুনর্বাসন দেওয়া হবে না।”
বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ গুয়াহাটি হয়ে রাহুলের দিল্লি ফেরার কথা ছিল। কিন্তু মন্দ আবহাওয়ার জন্য রাহুলের মতো ভিভিআইপি-কে নিয়ে উড়তে অস্বীকার করেন হেলিকপ্টারের পাইলট। পরে বিমানবাহিনী সূত্রে খবর, ঝুঁকি নিয়েই গুয়াহাটি যাওয়ার জন্য রাহুল পাইলটকে অনুরোধ করেন। বিমানবাহিনীর পাইলট জানিয়ে দেন, সামান্যতম ঝুঁকিও তাঁরা নিতে পারবেন না। এরপর কোকরাঝাড় থেকে সড়কপথে রাহুল গুয়াহাটি রওনা হন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ভুবনেশ্বর কলিতা। রাতেই তিনি দিল্লি ফিরে যান।
ধুবুরিতে এখনও কার্ফু চলছে। ধুবুরি পুরসভা এলাকায় আজ সকাল ১০টা থেকে ৩টে অবধি কার্ফু শিথিল করা হয়। বিলাসিপাড়া, চাপড় প্রভৃতি এলাকায় সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা অবধি কার্ফু শিথিল করা হয়। চার জেলা মিলিয়ে ২১৪টি শিবিরে এই মুহূর্তে ১,৯৪,৫৩৩ জন শরণার্থী রয়েছেন। |