|
|
|
|
জনসংযোগ বাড়াতে মেলবন্ধন উৎসব |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রাজনগর |
‘পুলিশকে ভয় না পেয়ে বন্ধু ভাবুক সাধারণ মানুষ। আমরা পাশে আছি।’ পুলিশের সঙ্গে জনসংযোগ বড়ানোর উদ্দেশ্যে মঙ্গলবার রাজনগরে অনুষ্ঠিত ‘মেলবন্ধনে’ উৎসবে এসে সাধারণ মানুষের কাছে এই বার্তাই দিতে চাইলেন পুলিশ প্রশাসনের কর্তারা।
জেলা পুলিশের উদ্যোগে এবং রাজনগর থানার ব্যবস্থাপনায় ‘মেলবন্ধন’ অনুষ্ঠিত হল ভবানীপুর পঞ্চায়েত এলাকার নূতনগ্রামে। এলাকার ১৮টি আদিবাসী ফুটবল দলের মধ্যে একটি ফুটবল প্রতিযেগিতা, দু’টি মহিলা আদিবাসী দলের প্রদর্শনী ফুটবল খেলা, আদিবাসী নৃত্য-সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালিত হল দিনটি। উপস্থিত ছিলেন আইজি (পশ্চিমাঞ্চল) গঙ্গেশ্বর সিংহ, ডিআইজি (বর্ধমান রেঞ্জ) বাসব তালুকদার, বীরভূম জেলা পুলিশ সুপার হৃষিকেশ মিনা, জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা, রাজ্য সরকারের পরিসংখ্যান মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, এসআরডিএ-র চেয়ারম্যান অনুব্রত মণ্ডল এবং জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের একাধিক আধিকারিক। এ দিনের অনুষ্ঠানকে ঘিরে স্থানীয় মানুষের উদ্দীপনাও ছিল চোখে পড়ার মতো।
জঙ্গলমহলের বাইরে বীরভূমের যে আটটি থানা এলাকাকে মাওবাদী উপদ্রুত এলাকা বলে পুলিশ প্রশাসন চিহ্নিত করেছে তার মধ্যে ঝাড়খণ্ড ঘেঁষা রাজনগর অন্যতম। ২০০৮ সালে রাজনগরে খুন হয়েছিলেন দুই সিপিএম নেতা এবং ওই খুনের পেছনে মাওবাদীদের হাত আছে ও এলাকায় ‘মাও’ গতিবিধি আছে বলে দাবি করেছিল পুলিশ প্রশাসন। জনসংযোগের অভাবে মাওবাদীরা চিহ্নিত থানা এলাকায় যেন তাঁদের গতিবিধি বাড়াতে না পারে এই বিষয়ে বিভিন্ন সময় পুলিশের শীর্ষ কর্তারা দফায় দফায় বৈঠক করেছেন জেলায়। মঙ্গলবার রাজনগরের এই ‘মেলবন্ধন’ অনুষ্ঠান তারই অঙ্গ বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। |
|
মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, “সাধারণ মানুষ যাতে পুলিশকে ভয় না পায় এবং নির্ভয়ে তাঁদের সুবিধা অসুবিধার কথা পুলিশকে জানাতে পারেন সে জন্যই এই অনুষ্ঠান।” জেলার প্রতিটি পঞ্চায়েত এলাকার জন্য গ্রাম্য পুলিশ পদে সদ্য নির্বাচিত হয়েছেন জেলার বেশ কিছু যুবক। রাজনগর ব্লকের পাঁচটি পঞ্চায়েত এলাকার পাঁচ নির্বাচিত যুবকের হাতে এ দিনই আনুষ্ঠানিক নিয়োগপত্র তুলে দেন মন্ত্রী।
আইজি গঙ্গেশ্বর সিংহ বলেন, “শুধুমাত্র অসুবিধায় পড়লে মানুষ পুলিশের কাছে আসেন। তাঁরা যাতে অসুবিধায় না পড়েন সেটা নিশ্চিত করতে এ বার পুলিশই সব সময় মানুষের পাশে থাকবে। শুধু পুলিশ প্রশাসনই নয়, জেলা প্রশাসন ও সহকারি বিভাগগুলিকে অনুরোধ করা হয়েছে (যেমন কৃষি ও সেচ দফতর) একযোগে কাজ করতে।” আইজি আরও বলেন, “জঙ্গলমহলের পাশাপাশি বীরভূমের আটটি থানা এলাকায় আগামী দিনে মহিলা ফুটবল ও তিরন্দাজী প্রতিযোগীতা হবে। যোগদানকারী প্রতিযোগিদের মধ্যে যাঁরা ভাল ফল করবেন তাঁরা আগামী বছর ১০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত রাজ্য স্তরের প্রতিযোগিতায় নামার সুযোগ পাবেন।”
|
|
এ দিন ফুটবল প্রতিযেগিতার ফাইনালে উঠেছিল রামনগর ও মাদারপুর ফুটবল দল। টাইব্রেকারে ১ গোলে জয়ী হয় মাদারপুর ফুটবল দল। মহিলা ফুটবল দল দু’টি নূতনগ্রাম গ্রামেরই। খেলা শেষে চারটি দলের সকল খেলোয়াড়কে জার্সি ও বিজয়ী ও রানার্স দলকে ট্রফি তুলে দেন উপস্থিত বিশিষ্টজনেরা। জেলা পুলিশ সুপার হৃষিকেশ মিনা বলেন, “এ ধরনের আনুষ্ঠান অন্য থানা এলাকাতেও করা হবে।” |
ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত। |
|
|
|
|
|