সমবায় ভোটে মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে গণ্ডগোল বাধল খণ্ডঘোষের দুবরাজহাটে। মঙ্গলবার দুপুরের এই ঘটনায় জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায় ও লাঠি চালায়। এই ঘটনায় প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে পায়ে বোমার আঘাত লেগেছে উত্তম বাউরি নামে এক ব্যক্তির। পুলিশের দাবি, তাদের লক্ষ করে বোমা ছোঁড়ার সময়ে তা ফেটে গিয়েই জখম হয়েছেন ওই ব্যক্তি। উত্তমবাবুকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা জানান, দুবারজহাটে সমবায়ের নির্বাচন উপলক্ষে মনোনয়ন জমা নেওয়ার কাজ চলছিল। এ দিন দুপুরে আচমকা কিছু লোক সেই কাজ বন্ধ করে দিতে চায়। পুলিশ তা মেটাতে গেলে সমস্যা দেখা দেয়। তিনি বলেন, “জেলা সদর থেকে বড় বাহিনী নিয়ে এসডিপিও (সদর) ও সার্কল ইনস্পেক্টর-সি ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশকে লক্ষ করে ওই জনতা ইট ও বোমা ছুড়তে শুরু করে। পুলিশ জনতাকে তাড়া করে। কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটানো হয়। মৃদু লাঠিও চালানো হয়। জনতার ছোড়া ইটে চার জন কনস্টেবল জখম হয়েছেন। তবে তাঁদের আঘাত তেমন গুরুতর নয়।” পুলিশ জানায়, এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আপাতত উত্তমবাবু-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের ধরার জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে। |
জেলা কংগ্রেস নেতা কাশীনাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের অবশ্য অভিযোগ, “সোমবার ওই সমবায়ের ভোটের জন্য মনোনয়ন তুলতে গিয়েছিলেন কংগ্রেসের কিছু কর্মী। তৃণমূলের কিছু লোক মনোনয়নপত্র কেড়ে নিয়ে ছিঁড়ে দেয়। তারই প্রতিবাদে স্থানীয় মানুষ মঙ্গলবার দুপুরে সমবায়ে হাজির হয়ে নতুন করে সমস্ত মনোনয়নপত্র দিতে হবে বলে দাবি জানাতে শুরু করেন। দাবিপূরণের জন্যই তাঁরা সমবায় সমিতি বন্ধ করে দেন। পুলিশ গিয়ে সাধারণ মানুষের উপরে লাঠি চালিয়েছে।”
সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য মহফুজ রহমানের আবার দাবি, “ওই এলাকার কৃষি সমবায় সমিতির বেশির ভাগ সদস্যই বামপন্থী। তাই ওখানে ভোট হলে আমরাই জিততাম। তাই তৃণমূল গোলমাল পাকিয়েছে।” তাঁরও অভিযোগ, “গত কাল আমাদের প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া হয়নি। প্রতিবাদে সমিতির সদস্যেরা সমবায়ে গিয়ে মনোনয়ন প্রক্রিয়া নতুন করে শুরু করার দাবি জানান। গোলামাল মেটাতে পুলিশ যখন তাদের সঙ্গে আলোচনা করছেন, তখনই তৃণমূলের লোকেরা বোমা নিয়ে আক্রমণ করে।” তাঁর অভিযোগ, তৃণমূলের লোকজনের ছোড়া বোমায় তাঁদের দলের সমর্থক উত্তমবাবু আহত হন।
তৃণমূল অবশ্য কংগ্রেস ও সিপিএমের এই সব অভিযোগ মানতে চায়নি। স্থানীয় নেতারা এ দিনের ঘটনা নিয়েও কিছু বলতে চাননি। তৃণমূল নেতা অপার্থিব ইসলামের বক্তব্য, “এক দল লোক সমবায় সমিতিতে তালা দিয়ে দেয়। তালা খুলতে গিয়েই পুলিশ আক্রান্ত হয়েছে। তার সঙ্গে আমাদের কেউ জড়িত নয়।” |