গোড়া ও খোলা পচা
আমনে সংক্রমণ নিয়ে আতঙ্ক নয়, আশ্বাস কৃষি দফতরের
ধান খেতে গোড়া পচা ও খোলা পচা রোগের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে মহকুমার কিছু এলাকায়, এমনই একটি রিপোর্ট পেয়েছে কালনা কৃষি দফতর। তবে এ নিয়ে বিশেষ আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলে জানিয়েছেন মহকুমার কৃষি কর্তারা।
কালনা মহকুমার পাঁচটি ব্লকের অধিকাংশ বাসিন্দাই চাষাবাদের সঙ্গে যুক্ত। কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর মহকুমায় আমন ধানের চাষ হয়েছিল মোট ৫৮ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে। এ বছর এই চাষ হয়েছে ৫৭ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে। তার মধ্যে শুধু মন্তেশ্বর ব্লকেই চাষ হয়েছে ২২ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে। বাকি চার ব্লকের মধ্যে কালনা ১ ও ২-এ যথাক্রমে ৯,৮০০ ও ১২,১০০ হেক্টর এবং পূর্বস্থলী ১ ও ২-এ যথাক্রমে ৮,৬০০ ও ৫,২০০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে।
মহকুমা কৃষি দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, গোড়া পচা ও খোল পচা রোগ বড় আকার না নিলেও সব ব্লক থেকেই এই রোগের প্রাদুর্ভাবের খবর মিলেছে। গোড়া পচা রোগের সংক্রমণ শুরু হয় গাছের তলার অংশ থেকে। একটু একটু করে নীচের অংশ নষ্ট হতে শুরু করে। শেষে শিষ-সহ গোটা গাছটিই নষ্ট হয়ে যায়। খোলা পচা রোগের ক্ষেত্রে পাতার উপরি ভাগ প্রথমে নষ্ট হতে শুরু করে। ক্রমে তা ছড়িয়ে পড়ে এক খেত থেকে অন্য খেতে।
কেন এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়, সে প্রশ্নে কালনা মহকুমা কৃষি দফতরের এক বিশেষজ্ঞ নিলয় কর বলেন, “মাটির জলধারণ ক্ষমতা কমে গেলে ও আবহাওয়ার ঘনঘন পরিবর্তন হলে এই দুই রোগ হতে পারে। লালস্বর্ণ প্রজাতির ধানে এই দুই রোগের সংক্রমণ বেশি হয়।” তাঁর দাবি, “উচ্চফলনশীল হওয়ার কারণে ঝুঁকি সত্ত্বেও এই মহকুমার বেশির ভাগ চাষিই এই লালস্বর্ণ প্রজাতির ধান চাষ করেন।”
গোড়ায় গলদ। সংক্রমিত ধান গাছের ছবি। কালনা কৃষি দফতরের সৌজন্যে। নিজস্ব চিত্র।
ধান খেতে এই দুই রোগের প্রাদুর্ভাবের কথা জানিয়েছেন মহকুমার নানা এলাকার চাষিরাও। বাদলা এলাকার চাষি রবীন ঘোষের কথায়, “কয়েক দিন আগে থেকে ধানের শিষ আসা শুরু হয়েছে। এই অবস্থায় জমির নানা জায়গায় শুকিয়ে যাওয়া গাছ নজরে পড়ছে। কীটনাশক স্প্রে করে গাছ বাঁচানোর চেষ্টা করছি।” মন্তেশ্বরের চাষি শ্যামল শর্মার কথায়, “প্রতি বারই আমন মরসুমে লালস্বর্ণ ধানের খেতে কিছু গাছ মরতে দেখা যায়। এ বার তুলনায় খানিকটা বেশি গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।”
মহকুমা কৃষি দফতরের তরফে অবশ্য চাষিদের এই দুই রোগের ব্যাপারে অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কৃষি বিশেষজ্ঞদের দাবি, ভেলিডামাইসিন, হেক্সাকোনাজল অথবা প্রপিকোনাজল জাতীয় ওষুধ ধান খেতে স্প্রে করলে সুফল মিলবে। ভেলিডামাইসিন বিঘা প্রতি জমিতে একশো লিটার স্প্রে করতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রতি লিটার জলের সঙ্গে মেশাতে হবে ২.৫ মিলিলিটার প্রতিষেধক। অন্য দিকে, হেক্সাকোনাজল লিটার প্রতি জলে দিতে হবে এক মিলিলিটার করে।
আমন মরসুমে মহকুমা কৃষি দফতরের নিয়ন্ত্রণে পাঁচ ব্লকে ২৫০ হেক্টর করে জমিতে পরীক্ষামূলক যে ধান চাষ করা হয়েছে সেখানে এই দুই রোগের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে ইতিমধ্যে হেক্সাকোনাজল স্প্রে করার সুপারিশ করা হয়েছে। মহকুমা কৃষি আধিকারিক স্বপনকুমার মারিক বলেন, “চাষিদের জন্য আমাদের পরামর্শ, রোগের লক্ষণ দেখে ওষুধ স্প্রে করুন। এ ব্যাপারে কৃষি দফতরে এলে প্রয়োজনীয় সাহায্য করা হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.