নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
বাসকর্মীদের মারধরের অভিযোগে মঙ্গলবার দুর্গাপুরে ঘণ্টা তিনেক বন্ধ রইল বাস চলাচল। এর ফলে বিপাকে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে ঘণ্টা তিনেক পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ দুর্গাপুর-বাঁকুড়া রুটের একটি বাস স্টেশনের কাছে একটি সাইকেল স্ট্যান্ডের সামনে দাঁড়িয়ে যাত্রী নামাচ্ছিল। ওই স্ট্যান্ডের কর্মীরা চালককে সেখান থেকে বাসটি সরিয়ে নিয়ে যেতে বলেন। কিন্তু চালক তা করতে অস্বীকার করেন। বাসকর্মীদের সঙ্গে সাইকেল স্ট্যান্ডের কর্মীদের বচসা শুরু হয়ে যায়। অভিযোগ, কাছাকাছি শিমুলতলা বস্তি থেকে বেশ কয়েক জন এসে সাইকেল স্ট্যান্ডের কর্মীদের সঙ্গে যোগ দেন। হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। তিন বাসকর্মী জখম হন। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠায়।
বাসকর্মীদের আইএনটিইউসি সংগঠনের নেতা স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, দুর্গাপুর বাসস্ট্যান্ডের এলাকা দিনদিন দখলদারদের দাপটে সঙ্কুচিত হয়ে যাচ্ছে। রাস্তা দখল করে সাইকেল স্ট্যান্ড, গুমটি গড়ে উঠছে। ফলে বাস চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। এ দিন সে সবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করাতেই তিন বাসকর্মীকে মার খেতে হয়েছে বলে স্বপনবাবুর অভিযোগ। তাঁর বক্তব্য, “পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। প্রশাসনের কাছেও দখলদার উচ্ছেদের আর্জি জানিয়েছি।” |
দুর্গাপুর বাসস্ট্যান্ডে একের পর এক গুমটি, সাইকেল স্ট্যান্ড গড়ে ওঠায় বিরক্ত সাধারণ যাত্রীরাও। তাঁরা জানান, বাসস্ট্যান্ডে ঢোকার রাস্তাটি এমনিতেই বেহাল। তার উপরে সাইকেল স্ট্যান্ডের জন্য রাস্তা সঙ্কুচিত হয়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাইকেল স্ট্যান্ডের কর্মীরা কেউ অবশ্য এ ব্যাপারে মুখ খুলতে রাজি হননি। যাত্রীদের আরও অভিযোগ, মাঝে এক বার প্রশাসনের পক্ষ থেকে বেআইনি গুমটি তুলে দেওয়া হয়েছিল। ইদানিং ফের সেগুলি নতুন করে বসেছে।
এ দিন হঠাৎ বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েন শত শত সাধারণ যাত্রী। বাসকর্মীরা স্ট্যান্ডের ঢোকা-বেরোনোর পথে বাস দাঁড় করিয়ে দেন। ফলে দূরপাল্লার বড় বাসের পাশাপাশি শহরের মিনিবাস পরিষেবাও ব্যাহত হয়। বাসস্ট্যান্ডের ভিতরে থাকা মিনিবাসগুলি বেরোতে পারেনি। শহর থেকে স্টেশনে যাওয়ার মিনিবাসগুলিও স্ট্যান্ডের বাইরে যাত্রী নামিয়ে দিতে বাধ্য হয়। সেখান থেকে হেঁটে যাত্রীদের স্টেশন পৌঁছাতে হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি জানাতে থাকেন বাসকর্মীরা। পুলিশ আশ্বাস দেওয়ার পর দু’একটি বাস চলাচল শুরু হয়। পরিস্থিতি পুরো স্বাভাবিক হতে লেগে যায় প্রায় ঘণ্টা তিনেক। মহকুমাশাসক আয়েষা রানি এ জানান, ঝামেলার খবর পেয়ে পুলিশ বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেছে।
|