একটি স্টেট জেনারেল হাসপাতাল, অথচ প্রায় এক বছর সাধারণ প্রসবটুকুও হয় না সেখানে, সিজার তো দূরের কথা। অ্যানাসথেটিস্টের অভাবে হয় না কোনও অস্ত্রোপচারই। ছবিটা কোনও গ্রাম বা মফস্সলের নয়, খোদ কলকাতার রামরিক হাসপাতালের।
শনিবার দুপুরে ভবানীপুরের এই হাসপাতালই ঘুরে দেখলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। হাসপাতাল সূত্রের খবর, যাবতীয় অসুবিধার কথা এ দিন মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তিনি দ্রুত সমাধানের আশ্বাসও দিয়েছেন। পরে মহাকরণে ফিরহাদ বলেন, “রামরিক হাসপাতালকে বড় হাসপাতালে পরিণত করা হবে। সেটিকে এসএসকেএম হাসপাতালের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হবে বলেও মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন।”
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, শনিবার সাড়ে বারোটা নাগাদ আচমকা রামরিক হাসপাতালে যান মুখ্যমন্ত্রী। হাসপাতালের তিনটি বাড়ির মধ্যে একেবারে পিছনের ভাঙাচোরা বাড়িটি ঘুরে দেখেন তিনি। সুপার নিখিলরঞ্জন রায় জানিয়েছেন, ওই বাড়িতে দু’টি পরিবার থাকে, আর একটি পিচবোর্ডের গুদাম রয়েছে। |
হাসপাতালে মুখ্যমন্ত্রী। শনিবার। —নিজস্ব চিত্র
|
মুখ্যমন্ত্রী সেখানকার দখলদারদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের হাসপাতালের জায়গা ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন। হাসপাতালে কী কী রোগের চিকিৎসা হয়, কত জন রোগী রয়েছে সেই সব খবর নেন। রোগীদের সঙ্গেও মুখ্যমন্ত্রী কথা বলেন।
শহরের এই স্টেট জেনারেল হাসপাতালটির বেহাল দশার কথা স্বীকার করেছে স্বাস্থ্য দফতরও। তারা বলছে, কলকাতার অন্য সরকারি হাসপাতালে যেখানে শয্যা পাওয়া খুবই কঠিন, সেখানে ৫০ শয্যার এই হাসপাতালে অর্ধেকের বেশি শয্যা খালি। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র তিন জন। এক জন চোখের, এক জন দাঁতের আর এক জন মেডিসিনের। ফলে লোকাল অ্যানেস্থেশিয়া দিয়ে যে অস্ত্রোপচারগুলি করা যায়, সেটা ছাড়া কোনও বড় অপারেশন হয় না।
পুরমন্ত্রী জানান, এ দিন হাসপাতালে দাঁড়িয়েই তার পুনর্নির্মাণের কাজের নির্ঘণ্ট তৈরি করতে স্বাস্থ্য-সচিব সঞ্জয় মিত্রকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এসএসকেএম হাসপাতালে যাঁরা রোগী আনবেন, তাঁদের থাকার জন্য ডি এল খান রোডে একটি প্রতীক্ষালয় গড়ে তুলতেও নির্দেশ দিয়েছেন। |