শারাপোভাকে ৩-৬, ৬-২, ৬-৪ হারিয়ে আজারেঙ্কা তাঁর প্রথম যুক্তরাষ্ট্র ওপেন ফাইনালে ওঠার পর তাঁকে পিঠে চাপড় মেরে প্রথম অভিনন্দনটা জানান যিনি তাঁরই চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বী! সেরেনা উইলিয়ামস। আজারেঙ্কার লড়াকু সেমিফাইনাল জয়ের পরপরই আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে নেমে যিনি নিউ ইয়র্কের পার্কে বেড়ানোর মতো হালকা মেজাজে উড়িয়ে দেন সারা ইরানিকে ৬-১, ৬-২। ১৪ গ্র্যান্ড স্ল্যাম চ্যাম্পিয়ন সেরেনার এটা পঞ্চম যুক্তরাষ্ট্র ওপেন ফাইনাল। তবু মাত্র একটা গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ী আজারেঙ্কার সঙ্গে সেরেনার দ্বৈরথকেই টেনিসমহল বলছে, এই মুহর্তে মেয়েদের গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালে সেরা লাইন আপ।
তবে সেই মহারণের জন্য দর্শকদের বাড়তি এক দিন অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। যেহেতু নিউ ইয়র্কে প্রবল বৃষ্টি আর ঝড়ের পূর্বাভাস থাকায় শনিবার সন্ধে সাতটার (ভারতীয় সময় রবিবার ভোর) বদলে এই ম্যাচ রবিবারে পিছিয়ে দিয়েছেন সংগঠকেরা। পুরুষ ফাইনালও রবিবার বিকেল সাড়ে চারটেয় (ভারতীয় সময় মধ্যরাতে) নির্দিষ্ট আছে। |
এ বছর পেশাদার সার্কিটে এই দুই মেয়েই সবচেয়ে ধারাবাহিক। সবচেয়ে সফল। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, বিশ্বের এক নম্বর আজারেঙ্কারও কি ক্ষমতা আছে সেরেনাকে হারানোর? চতুর্থ বাছাই কৃষ্ণাঙ্গী মার্কিন চলতি টুর্নামেন্টে এতটাই তীক্ষ্ম আর নির্মম রূপে আগের ছ’টা ম্যাচে কোর্টে বিরাজ করেছেন যে, সে ভাবে পরীক্ষিতই হননি। ৬ রাউন্ডে মাত্র ১৯টা গেম সেরেনার কাছ থেকে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীরা কাড়তে পেরেছেন। সেমিফাইনাল পর্যন্ত একটা সেটও হারেননি। ৬টা ম্যাচে মাত্র ২ বার নিজের সার্ভিস নষ্ট করেছেন। অবিশ্বাস্য দাপট!
তা সত্ত্বেও ফাইনালের কয়েক ঘণ্টা আগে সেরেনার সতর্ক মন্তব্য, “এ বছরের সবচেয়ে ধারাবাহিক এবং সেরা প্লেয়ারের মুখোমুখি হতে চলেছি ফাইনালে।” পরিসংখ্যান অবশ্য বলছে, ৩০ বছরের সেরেনার সঙ্গে ১০ বারের সাক্ষাতে ২৩ বছরের আজারেঙ্কা জিতেছেন মাত্র ১ বার। সেটাও তিন বছর আগে। ২০০৯-এ মিয়ামিতে। চলতি বছরে দু’জনের সাক্ষাতে সেরেনা এগিয়ে ৩-০। মাদ্রিদ ছাড়াও উইম্বলডন আর অলিম্পিক, দু’টোতেই সেমিফাইনালে হারান আজারেঙ্কাকে। কিন্তু সেরেনার তাঁর ৭ বছরের ছোট প্রতিপক্ষকে দারুণ পছন্দ। “ভিকা চমৎকার মেয়ে। অনেক দূর উঠে এসেছে। এত কম বয়সে এত ভাল করছে, অসাধারণ!”
কিন্তু আজারেঙ্কা ভাল করেই জানেন, কোর্টে তাঁকে অন্য সেরেনাকে সামলাতে হবে। যিনি চলতি টুর্নামেন্টে মেয়েদের মধ্যে দ্রুততম সার্ভিস (ঘণ্টায় ১২৪ মাইল) করছেন। “সেরেনার বিরুদ্ধে খেলছি ভাবলেই গেল! সব চাপ নিজের কাঁধের ওপর এসে চাপবে। আমি তাই সেরেনার সঙ্গে ফাইনাল খেলছি ভেবে কোর্টে নামবই না। তার চেয়ে বেশি ফোকাস্ড থাকব নিজের খেলা নিয়ে। নিশ্চিত থাকতে হবে যে, প্রতিপক্ষকে হারাতে নিজের শেষ স্কিলটুকু বার করতে পারব আমি।” শীর্ষ বাছাই আজারেঙ্কার জন্য অবশ্য একটা খারাপ পরিসংখ্যান হল যে, যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে জাস্টিন এনার পর শেষ পাঁচ বছরে মেয়েদের কোনও শীর্ষ বাছাই চ্যাম্পিয়ন হতে পারেননি। এমনকী ২০১০ উইম্বলডনের পর কোনও গ্র্যান্ড স্ল্যামেই কোনও শীর্ষ বাছাই মেয়ে খেতাব জেতেননি। সেই শেষ ভাগ্যবতী কে? সেরেনা উইলিয়ামস! |