যুবভারতীতে এক ঘণ্টা ৪০ মিনিটের নাটক
আলো-বিতর্কে ইস্টবেঙ্গলের খেলা পরিত্যক্ত
যুবভারতীতে অনেকবার খলনায়ক হয়েছে ফ্লাডলাইট। এ বার ম্যাচ বাতিলের জন্য কাঠগড়ায় প্রাকৃতিক আলো!
শনিবার দুপুর তিনটেয় ইস্টবেঙ্গল বনাম বিএনআর কলকাতা লিগের ম্যাচ শুরু হয়েছিল। কিন্তু কালো মেঘে বিকেলেই অন্ধকার নেমে আসায় ম্যাচ ৬৭ মিনিটের মাথায় বন্ধ করে দিতে হয়। কিন্তু খেলা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিতে ম্যাচ অফিসিয়ালদের লাগল ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট। মাঝের সময়টায় বিস্তর নাটক হল, অসম্পূর্ণ ভাবে জ্বলে ওঠা ফ্লাডলাইটে ম্যাচ করা যাবে কি না সেই টানাপোড়েনে। যা নিয়ে মাঠের মধ্যেই মেজাজ হারালেন লাল-হলুদ কোচ মর্গ্যান থেকে মেহতাব, সৌমিকদের মতো ফুটবলাররাও।
ঘড়িতে সময় তখন বিকেল চারটে বেজে বত্রিশ মিনিট। ইস্টবেঙ্গল তখন পেনের গোলে ১-০ এগিয়ে। দিনের আলো এতটাই কমে গিয়েছিল যে, ফুটবলারদের পক্ষে খেলা সম্ভব হচ্ছিল না। সঙ্গত কারণেই ম্যাচ সাময়িক বন্ধ করে দেন রেফারি অসিত সরকার। নাটক শুরু হয় এর পরেই। মিনিট দশেক পর মাঠে হাজির আইএফএ কর্তারা ম্যাচ বন্ধের কথা জানান সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায়কে। তিনি তৎক্ষণাৎ ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্রের সঙ্গে কথা বলেন যুবভারতীর আলো জ্বালানো সম্ভব কি না জানতে। আইএফএ-র সূত্রের খবর, ক্রীড়ামন্ত্রী ফ্লাডলাইট জ্বালিয়ে ম্যাচ করার অনুমতি দেন। অথচ মাত্র ক’দিন আগেই মদনবাবু জানিয়েছিলেন, নভেম্বর-ডিসেম্বরে ফ্লাডলাইট ঠিক হবে। ফলে পুরোপুরি না সেরে ওঠা আলো জ্বালানোর ব্যর্থ চেষ্টা শুরু হয়।
অপেক্ষা: আঁধার-সঙ্কটে রিজার্ভ বেঞ্চে লাল-হলুদের প্রথম দল।
উদ্বিগ্ন মর্গ্যানও। শনিবার। —নিজস্ব চিত্র
যুবভারতীর ফ্লাডলাইট দীর্ঘ দিন খারাপ হয়ে পড়ে। যে ন’জন কর্মী রক্ষণাবেক্ষণ করতেন তাঁদের মার্চ থেকে বেতন বন্ধ। নিয়মিত কাজে আসেন না। এপ্রিল থেকে আলোর রক্ষণাবেক্ষণ হয়নি। স্টেডিয়ামের এক ইঞ্জিনিয়ার এ দিন সে কথা বলেও ফেলেন। বেগতিক দেখে পুরনো কর্মীদের মাঠে আসার অনুরোধ করা হয়। তারা আসেননি। শেষে আলো জ্বালানোর চেষ্টা শুরু করেন মাঠে হাজির থাকা বর্তমান কর্মীরা।
ও দিকে আবার ম্যাচ বন্ধ হতেই স্টেডিয়াম থেকে বেরিয়ে যায় অ্যাম্বুল্যান্স। ফের মাথায় হাত আইএফএ কর্তাদের! যদিও বা আলোর ব্যবস্থা হচ্ছে, অ্যাম্বুল্যান্স ছাড়া তো ম্যাচ শুরুই করা যাবে না। ফের ডেকে আনানো হয় অ্যাম্বুল্যান্স। ঘণ্টা খানেক কেটে যাওয়ার পরেও দেখা যায় ৬২৪টি আলোর মধ্যে জ্বলছে মাত্র ২৪০টি। এর মধ্যেই ইস্টবেঙ্গল ম্যানেজার স্বপন বল রেফারিদের কাছে এসে জানান, ম্যাচ শুরু করার মতো উপযুক্ত আলো জ্বলে গিয়েছে। খেলা শুরু করুন। ম্যাচ কমিশনার সুপ্রিয় ভট্টাচার্য তখনই বলে দেন, খেলা চালানোর পক্ষে আলো বেশ কম। কিন্তু আইএফএ কর্তাদেরও রেফারিদের ম্যাচ শুরু করার জন্য বলতে দেখা যায়। বিএনআর কোচ নভনীল বন্দ্যোপাধ্যায় এই অবস্থা্য় দলকে মাঠে নামাতে চাননি। ক্লাব সচিব পি কে বসুও বলেন, “এই আলোকে কী করে ম্যাচের উপযুক্ত বলছেন ইস্টবেঙ্গল কর্তারা?” বিএনআর এই প্রশ্নও তোলে যে, কলকাতা লিগ কি ফ্লাডলাইটে করার নিয়ম আছে টুনামেন্টের রুল-এ? আইএফএ সচিব পরে বললেন, “মাঠে যদি আলোর ব্যবস্থা থাকে তা হলে অবশ্যই প্রয়োজনে লিগের ম্যাচ ফ্লাডলাইটে করা যায়।” শেষ পর্যন্ত এক ঘণ্টা ৪০ মিনিট পর দু’দলের অধিনায়ককে ডেকে রেফারি পাঁচ মিনিটের মধ্যে খেলা শুরু করতে বলেন। তখন বিএনআর অধিনায়ক প্রতিম সরকার বলেন, “সব আলো না জ্বললে খেলা অসম্ভব।” তখন রেফারি ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন, ‘বিএনআর খেলতে চায়নি’ যুক্তি দিয়ে। সে ক্ষেত্রে লিগ সাব কমিটির বৈঠকে ইস্টবেঙ্গলের তিন পয়েন্ট পাওয়ার সম্ভাবনা থাকছে। ফেডারেশনের রেফারি কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রাক্তন ফিফা রেফারি প্রদীপ নাগ বললেন, “ম্যাচ হবে কি না সেই সিদ্ধান্ত রেফারিই নেয়। সেক্ষেত্রে কোনও দল যদি খেলতে না চায়, তা হলে বিপক্ষ তিন পয়েন্ট পেয়ে যাবে।”
মর্গ্যান এই সময় বিএনআর কর্তাদের কাছে খেলার জন্য আবেদন করতে যান। হঠাৎই মেহতাব এবং সৌমিক কটু মন্তব্য করেন বিএনআর কর্তাদের উদ্দেশে। আইএফএ কর্তারা তখন শাটলককের মতো একবার ইস্টবেঙ্গল কর্তা, একবার ম্যাচ কমিশনার আর একবার বিএনআর কর্তাদের কাছে দৌড়োদৌড়ি করছেন। আইএফএ সচিবের মোবাইল তখন বন্ধ। যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিএনআর কর্তারাও। ক্ষুব্ধ মর্গ্যান স্টেডিয়াম ছাড়ার সময় বললেন, “আমি বুঝতেই পারছিলাম না ম্যাচ হওয়া বা না হওয়া নিয়ে সিদ্ধান্তটা কে নেবে! আমি সবচেয়ে হতাশ এতক্ষণ মাঠে অপেক্ষা করতে হওয়ায়।”

পাহাড়েও উজ্জ্বল টোলগে
সমতল থেকে পাহাড়। ভয়ঙ্কর টোলগে। কলকাতায় এয়ারলাইন্স কাপে জোড়া গোলের পরে শ্রীনগরেও গোল করলেন মোহনবাগানের অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকার। শনিবার প্রীতি ম্যাচে জম্মু কাশ্মীর একাদশকে ৪-০ হারাল মোহনবাগান। টোলগে ছাড়া গোল করেন ওডাফা, মনীশ মৈথানি ও জুয়েল রাজা। ফেড কাপ সরতে পারে: রাঁচির বিরসা মুণ্ডা স্টেডিয়াম থেকে সরে যেতে পারে ফেড কাপের দুটো গ্রুপের খেলা। ভারী বর্ষায় মাঠ শোচনীয়। রবিবার স্টেডিয়াম পরিদর্শনে যাচ্ছেন ফেডারেশনের বিশেষজ্ঞ অমিত মলহোত্র। তাঁর ছাড়পত্র পেলেই প্রয়াগ, ডেম্পো, সালগাওকরের মতো দলের খেলা দেখবে রাঁচির ফুটবলপ্রেমীরা। অন্য দুটো গ্রুপের খেলা শিলিগুড়িতে। এ দিকে এ দিন আইএফএ অ্যাকাডেমির কোচ হলেন চিন্ময় চট্টোপাধ্যায়।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.