কয়লা কেলেঙ্কারি
অস্বস্তি কাটাতে পাল্টা প্রচারে নামছে সিপিএম
য়লার ‘কালি’ থেকে দূরে থাকতে এ বার পাল্টা প্রচারে নামছেন কমিউনিস্টরা।
কপিল সিব্বল থেকে পি চিদম্বরম, জয়রাম রমেশ থেকে শ্রীপ্রকাশ জয়সওয়াল ইউপিএ সরকারের শীর্ষ মন্ত্রীরা বারবার অভিযোগ তুলছেন, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের আমলে নিলামের মাধ্যমে কয়লা খনি বণ্টনে আপত্তি তুলেছিল রাজ্য সরকার। এখন সিএজি যে-ই রিপোর্ট দিয়েছে, নিলাম না হওয়ায় কেন্দ্রের বিপুল আর্থিক ক্ষতি হয়েছে, তখনই সুর পাল্টে মাঠে নেমে পড়েছেন সিপিএম নেতারা। তাঁরাই এখন কংগ্রেসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলছেন। স্বাভাবিক ভাবেই তাঁদের মোকাবিলায় বাম সরকারের আমলের চিঠি প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরেছেন চিদম্বরম-সিব্বলরা। এই আক্রমণের মুখে সিপিএম শীর্ষ নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নিয়েছে, মানুষকে সঠিক তথ্য জানাতে তাঁরাও পাল্টা প্রচারে নামবেন।
আজ দিল্লিতে পলিটব্যুরোর বৈঠকে যোগ দিতে এসে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী নিরুপম সেন বলেন, “আমরা প্রথম থেকেই কয়লা খনি বেসরকারি সংস্থাকে দেওয়ার বিরুদ্ধে ছিলাম। কিন্তু কেন্দ্র যখন সেই সিদ্ধান্ত নিল, তখন আমরা দাবি করেছিলাম, বণ্টনটা রাজ্যের মাধ্যমে করা হোক। রাজ্যে শিল্পায়নের স্বার্থে সরকার যাকে কয়লা খনি দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করবে, তাকে দেওয়া হবে।” তাই তাঁরা নিলামেরও বিরোধিতা করেছিলেন বলে নিরুপমের যুক্তি। তাঁর বক্তব্য, নিলাম হলে রাজ্যের নতুন ইস্পাত বা সিমেন্ট কারখানার জন্য কয়লা জোগান সুনিশ্চিত করা যেত না।
এ বিষয়ে রাজ্য নেতৃত্বের পাশে দাঁড়াচ্ছেন সিপিএম কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। প্রকাশ কারাটের যুক্তি, দেড় দশক ধরেই কয়লা খনি বণ্টনের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের বাম সরকারের একই অবস্থান ছিল। বামেদের যুক্তি ছিল, কয়লা খনি বণ্টনের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের মত নেওয়া উচিত। রাজ্য সরকারের মাধ্যমে যেখানে খনি বিলি হয়েছে, সেখানে রাজ্যের সঙ্গে ওই সংস্থার চুক্তি হয়েছে। কয়লা মন্ত্রকের তথ্য বলছে, পশ্চিমবঙ্গে একটি মাত্র কয়লা খনি সরাসরি বেসরকারি সংস্থাকে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও রাজ্যের বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য সরকারি সংস্থাকে কয়লা খনি দেওয়া হয়েছে।
সিএজি-র রিপোর্টের পরে অভিযোগ উঠেছে, বহু সংস্থাই কয়লা খনির লাইসেন্স নিয়েছিল। কিন্তু সেই কয়লা তুলে ইস্পাত বা সিমেন্ট কারখানা তৈরির কোনও উদ্দেশ্য তাদের ছিল না। লাইসেন্স পাওয়ার পরে তা দেখিয়ে তারা ব্যাঙ্ক থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়েছে। শেয়ার বাজার থেকেও ফায়দা তুলেছে। নিরুপমবাবুর ব্যাখ্যা, উৎপাদন শুরু না হওয়ার পিছনে পরিবেশ সংক্রান্ত ছাড়পত্র বা জমি অধিগ্রহণের মতো অসুবিধা থাকতে পারে। কিন্তু সমস্ত ছাড়পত্র পেয়ে যাওয়ার পরে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উৎপাদন শুরু করতে হবে বলে চুক্তিতে বলা হয়েছিল। চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগে কয়লা খনি ফেরত নিয়ে নেওয়ার কথাও বলা রয়েছে।
কিন্তু সিপিএমের জন্য সমস্যা তৈরি করেছে ২০০৫ সালে তৎকালীন মুখ্যসচিব অশোক গুপ্তর একটি চিঠি। চিদম্বরমরা সেই চিঠি বের করে দেখাচ্ছেন, পশ্চিমবঙ্গ চেয়েছিল, একটি বাছাই কমিটির সুপারিশের মাধ্যমে খনি বণ্টনের পুরনো পদ্ধতিই বজায় থাকুক। কারণ সেখানে রাজ্যের মতামত প্রাধান্য পায়। সিপিএম নেতারা কিন্তু নিরুপমবাবুদের যুক্তির প্রমাণে কোনও চিঠি তুলে ধরতে পারছেন না। রাজ্যের এক প্রাক্তন মন্ত্রী মজা করে বলছেন, “আমরা তো মহাকরণ থেকে ফাইল নিয়ে চলে আসিনি। তা হলে অনেক চিঠিই দেখানো যেত।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.