শুকনো রক্তে পায়ের ছাপ কি কোনও মহিলার
শুকিয়ে যাওয়া রক্তের মধ্যে পায়ের ছাপটা কার?
পুলিশ বলছে, ছাপটি কোনও মহিলার। তা হলে কি আততায়ীদের দলে মহিলাও ছিল?
উত্তর খুঁজছে পুলিশ। জানতে চাইছে, বেহালার প্যারিসপাড়ার বাসিন্দা নিহত দীপক ভট্টাচার্যের বাড়িতে স্থানীয় এক এজেন্সি থেকে আয়া ও ঠিকে পরিচারিকা ছাড়া আর কোন মহিলা আসতেন।
এক পুলিশকর্তা বলেন, “আততায়ীদের দলে মহিলা থাকা অস্বাভাবিক নয়।” কেন? তদন্তকারী অফিসারদের একাংশের মত, “খুনিদের কেউ ওই পরিবারের পরিচিত ছিল। সে জানত, ওই বাড়ির গৃহকর্তা ও তাঁর বৃ্দ্ধা মায়ের দেখভালের জন্য এক জন আয়া ও সব সময়ের পরিচারিকা থাকেন। বাইরে থেকে কেউ কড়া নাড়লে তাঁরাই দরজা খুলে দেবেন, এটাই স্বাভাবিক। সেই কারণেই হয়তো কোনও মহিলাকে দলে রেখেছিল আততায়ীরা।”
পুলিশ জেনেছে, দীপকবাবুর মায়ের দেখাশোনার জন্য দিনে-রাতে দু’জন আয়া আসতেন। তাঁদেরই এক জন ময়না রায় ওই বাড়িতে বৃহস্পতিবার রাতে খুন হন। একই সঙ্গে গলা কেটে খুন করা হয় দীপকবাবুর বৃদ্ধা মা গৌরীদেবী ও তাঁদের সব সময়ের পরিচারিকা অণিমা মণ্ডলকে। কিন্তু নিহত তিন মহিলার পায়ের সঙ্গে রক্তের মধ্যে পাওয়া ওই ছাপ মেলেনি।
আর আসত এক ঠিকা পরিচারিকা। তাঁকে এক দফা জেরা করে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। জেরা করা হয়েছে সন্ধ্যা গোস্বামী নামের আর এক আয়াকে। ওই দিন রাতের দিকে তাঁর কাজে আসার কথা ছিল প্যারিসপাড়ার বাড়িতে।
এর বাইরেও এ দিন আরও এক মহিলাকে জেরা করেন তদন্তকারী অফিসারেরা। পুলিশ জেনেছে, মায়ের অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ায় দীপকবাবু বেহালায় তাঁর বৈদুতিন সরঞ্জামের দোকানে নিয়মিত যেতে পারতেন না। সেই কারণে এক মহিলাকে ওই দোকানে অস্থায়ী ভাবে নিয়োগ করা হয়। প্রতিবেশীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, দোকানের ওই মহিলা প্রায় রোজই দীপকবাবুর বাড়িতে আসতেন। পুলিশের একাংশ বলছে, রক্তের মধ্যে পাওয়া পায়ের ছাপের সঙ্গে ওই মহিলার পায়ের ছাপ মিলিয়ে দেখা হবে। শনিবার বিকালে দীপকবাবুর বাড়ি থেকে দু’জোড়া চটিও উদ্ধার করেন গোয়েন্দারা। সেগুলি কাদের, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
একই সঙ্গে ব্যবসায়িক কারণে দীপকবাবুর সঙ্গে কারও গোলমাল ছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সেই কারণে এ দিন সকাল থেকে তাঁর বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম ও কেবল ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের ঠাকুরপুকুর থানা ও লালবাজারে ডেকে এনে দফায় দফায় জেরা করেন তদন্তকারী অফিসারেরা। পুলিশ জেনেছে, দীপকবাবুর অধীনে দু’হাজারেরও বেশি কেবল গ্রাহক ছিল। তা থেকে মাসে কয়েক লক্ষ টাকা আয় হত। ওই ব্যবসায় কারও অংশীদারি ছিল কি না, পুলিশ তারও খুঁটিনাটি হিসেব মেলাচ্ছে।
এ দিন দীপকবাবুর ভগ্নিপতি বুদ্ধদেব মুখোপাধ্যায়কেও জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। বাড়ির কোথায় টাকা রাখা হত, তা পুলিশ জানতে চায় তাঁর কাছে। গোয়েন্দারা দীপকবাবু এবং তাঁর মায়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও পরীক্ষা করেছেন। বৈদ্যপাড়ার বাড়ি বিক্রির টাকা কোন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দীপকবাবু রেখেছিলেন, তা-ও জানতে চাইছে পুলিশ।
এ দিনও ফের ঘটনাস্থলে যান কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার সুধীর মিশ্র। তিনি বলেন, “তদন্ত চলছে। পারিবারিক ব্যবসা থেকে ব্যক্তিগত শত্রুতা, সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.