একশো দিনের কাজের মূল্যায়ন
কেন্দ্রের অধীনে অডিট চান পঞ্চায়েতমন্ত্রী
শ্চিমবঙ্গে মহাত্মা গাঁধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান প্রকল্পের (এনরেগা) কাজে অগ্রগতির দাবির পাশাপাশি দুর্নীতির অস্তিত্বও অস্বীকার করছে না রাজ্য। তবে দুর্নীতি দমনে তৃণমূল স্তর পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও করেছেন রাজ্য। একই সঙ্গে কেন্দ্রের অধীনে বিশেষ অডিটের প্রস্তাবও সমর্থন করেছেন রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী।
সুব্রত মুখোপাধ্যায়
শনিবার দিল্লিতে রেগা-র ‘সমীক্ষা’ পত্র প্রকাশ করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ দেশজুড়ে চলা এই বিশাল প্রকল্পে বেশ কিছু খামতির উল্লেখ করেন। বিভিন্ন রাজ্যে যে এই প্রকল্পে দুর্নীতি ঘটে চলেছে, তাও উল্লেখ করেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, ১২০০ কোটি মানুষকে এযাবৎ ১ লক্ষ ১০ হাজার কোটি টাকা মজুরি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি মনে করেন, ‘সংখ্যাতত্ত্বের এই হিসেব সত্যের অর্ধাংশ মাত্র।’ এই বিশাল প্রকল্পে বিপুল পরিমাণ ব্যয়ের পাশাপাশি কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ মূল্যায়নের অবস্থা ভাল নয়, সে কথাও তিনি স্পষ্ট করে দেন। এর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী জয়রাম রমেশ এ দিনই জানিয়ে দিয়েছেন, এই প্রকল্পে দুর্নীতির প্রসার ঘটছে। রেগার আর্থিক সম্পদের অন্যায্য ব্যবহারের প্রসার মোকাবিলার জন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দাওয়াই, গ্রামসভার হিসাব পরীক্ষার পর সেটি সিএজি আবার পরীক্ষা করুক। শুধু আর্থিক হিসাবপত্র পরীক্ষা নয়, যে কাজে ব্যয় হয়েছে, সেটি বাস্তবে কতটা হয়েছে, সেই পরীক্ষাও সিএজি করুক, এমনটাই প্রস্তাব জয়রামের।
“কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই প্রস্তাব সর্বতো ভাবে মেনে নিচ্ছি” বলে জানিয়েছেন রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। এর সঙ্গে তাঁর প্রস্তাব, “রেগা এমনই এক বিশাল প্রকল্প, যার জন্যে এক ধরনের বিশেষ অডিট হওয়া দরকার। সেটা সম্পূর্ণ ভাবে কেন্দ্রের হাতে থাকা দরকার। জয়রামের এই প্রস্তাবে আমার অকুন্ঠ সমর্থন রয়েছে।” তবে এরই সঙ্গে জানান, তিনি পঞ্চায়েত দফতরের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বিশেষত রেগায় অর্থব্যয়ের অডিটের দায়িত্ব সিএজি-র হাতে দেওয়া হয়েছে। সুব্রতবাবু বলেন, “মনে রাখবেন, দেশের অধিকাংশ রাজ্য রেগায় খরচের হিসেব সিএজিকে দিয়ে পরীক্ষা করানোর চল নেই। কিন্তু আমরা তা করেছি।” তিনি বলেন, “বামফ্রন্ট সরকার তাদের চৌত্রিশ বছরে গ্রামাঞ্চলে টাকা খরচে পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতি করে গিয়েছে। সেটা তাদের পতনের অন্যতম কারণও বটে। আমরা তাই প্রথমেই খরচের হিসেবে স্বচ্ছতা আনতে চাইছি।”
তবে এর পাশাপাশি দুর্নীতি যে হচ্ছেই, তাও স্বীকার করেছেন সুব্রতবাবু। তাঁর দফতরের হিসেবে, এই দুর্নীতি সারা রাজ্যে ১০ শতাংশ গ্রাম পঞ্চায়েতে হয়েছে। তবে একই সঙ্গে মন্ত্রীর দাবি, যে-পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে রেগার টাকা নিয়ে অপব্যবহারের অভিযোগ উঠছে, সেখানে সেই জেলার জেলাশাসক থেকে বিডিও-র স্তর পর্যন্ত সাধারণ প্রশাসনের হাতে কাজ করানো এবং টাকা খরচের দায়িত্ব সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
মূলত দুর্নীতির মোকাবিলা এবং কাজের স্বচ্ছতা, রেগায় অংশগ্রহণকারীদের মজুরি পাওয়ার প্রক্রিয়া সরলতর করতে তাঁর দফতর বায়োমেট্রিক কার্ডের প্রচলন শুরু করেছে বলে মন্ত্রী জানান। এটিএম কার্ডের মতো অনলাইনে এই কার্ডের ব্যবহার হচ্ছে। এ নিয়ে দফতরের সচিব সৌরভ দাশ বলেন, “প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে অন্ধ্রের প্রশংসা করে বলেছেন সেখানে গ্রামাঞ্চলে একেবারে তৃণমূল স্তরে রেগার কাজে ইন্টারনেটকে ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু আমরা তো ইতিমধ্যেই তারও বেশি করে ফেলেছি। রেগার কাজে অংশগ্রহণকারীদের বায়োমেট্রিক কার্ড দিয়ে টাকা পাওয়ার সুবিধা, তাঁদের সম্পর্কে সব তথ্য ইত্যাদিও অনলাইনে সঙ্গে সঙ্গে করা হচ্ছে। চলতি মাসেই এই পদ্ধতি চালু হয়ে যাবে।” এই কার্ড চালু হয়ে গেলে রেগায় দুর্নীতির অনুপ্রবেশ অনেকটা কমানো যাবে বলে সুব্রতবাবুদের বিশ্বাস।
এই সংক্রান্ত খবর...

একশো দিনের কাজে ক্ষুব্ধ মনমোহন



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.