ওভারহেড তারে কাজ করে নীচে নামার আগেই ‘বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে দেওয়ায়’ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে গুরুতর জখম হন ২ রেলকর্মী। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সমন্বয়ের অভাবেই ওই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। শনিবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে ব্যান্ডেল স্টেশনে। স্টেশনে লোকাল ট্রেনের প্যান্টোগ্রাফ ভেঙে যাওয়ায় দুপুর থেকে হাওড়া-বর্ধমান মেন ও হাওড়া-কাটোয়া শাখার ট্রেন চলাচল দফায় দফায় বন্ধ থাকে। বিভিন্ন স্টেশনে ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়ে। যাত্রীরা নাকাল হন।
এ দিন দুপুরে পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদা থানার জ্যাঠাগেড়িয়া অঞ্চলে প্রহরীহীন লেভেল ক্রশিং পেরোতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় মোটরবাইক আরোহী ও তাঁর সঙ্গী চার বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ওই ঘটনার জেরে রেল লাইনে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের খড়্গপুর শাখায় আপ ও ডাউন লাইনে হাওড়া-যশবন্তপুর, আপ দুরন্ত এক্সপ্রেস-সহ বেশ কিছু ট্রেন দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকে। |
নারায়ণগড়ে জ্যাঠাগেড়িয়ার এই লেবেল ক্রসিংয়ে ট্রেনে কাটা পড়ে
মারা যান দু’জন। রেললাইন অবরোধ করে বিক্ষোভ গ্রামবাসীদের। |
পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, দুপুর দেড়টা নাগাদ আপ কাটোয়া লোকাল ব্যান্ডেল স্টেশন ছাড়ার মুখে ট্রেনটির প্যান্টোগ্রাফ ভেঙে যায়। এর জেরেই ওই দুই শাখার আপ এবং ডাউন দুই লাইনেই বন্ধ হয় ট্রেন চলাচল। প্যান্টোগ্রাফ মেরামতের পরে দুপুরে ডাউনে ট্রেন চলাচল আরম্ভ হয়। প্রাথমিক মেরামতির পরে আপে ট্রেন চলতে আরও আধঘণ্টা সময় লেগে যায়। এর পরে, সোয়া চারটে নাগাদ ফের আপ লাইনে মেরামতির কাজ শুরু হয়। বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রেখেই কাজ চলছিল। অভিযোগ, সারাই চলাকালীন বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে দেওয়া হয়। সেই সময় ওভারহেড লাইনে কাজ করছিলেন শঙ্কর মাহাতো এবং অমিত মণ্ডল নামে রেলের বিদ্যুৎ বিভাগের দুই কর্মী। দু’জনেই ছিটকে পড়েন লাইনের উপর। তাঁদের প্রথমে ব্যান্ডেলে রেলের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁদের কাঁচরাপাড়া রেল হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
পূর্ব রেলের মূখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সমীর গোস্বামী বলেন, “রেলের দুই কর্মী জখম বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে জখম হয়েছেন। তাঁদের রেলের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।” ওই ঘটনার জেরে ফের বিকেল ৫টা ২৫ থেকে সন্ধ্যা ৬টা ১০ পর্যন্ত ট্রেন বন্ধ ছিল। ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হতে রাত হয়। বেলদা থানার বাখরাবাদ স্টেশনের অদূরেই জ্যাঠাগেড়িয়া। এখানে একটি প্রহরী-হীন লেভেল ক্রশিং রয়েছে। শনিবার দুপুর ১২টা নাগাদ আপ লাইন দিয়ে যাচ্ছিল নিউ জলপাইগুড়ি-চেন্নাই এক্সপ্রেস। সেই সময়ে মোটরবাইকে রেললাইন পেরোচ্ছিলেন শচীন জানা। ছিলেন তাঁর আত্মীয় মানিক দত্ত (৩১) ও তাঁর চার বছরের মেয়ে বুনু। ট্রেনের ধাক্কায় শচীনবাবু ও বুনুর মৃত্যু হয়। লাফিয়ে প্রাণে বাঁচেন মানিক। |