মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোচবিহারের মঞ্চ থেকে নাড়ছেন সবুজ পতাকা। সে ছবি ভেসে ওঠার কথা ছিল এনজেপি স্টেশনে লাগানো জায়েন্ট স্ক্রিনে। প্রচুর মানুষ ভিড় জমিয়েছিল স্টেশনে। তৃণমূল সমর্থক-কর্মীরাও পতাকা হাতে হাজির হয়ে যান প্ল্যাটফর্মে। কিন্তু লিঙ্ক না থাকায় মুখ্যমন্ত্রী, রেলমন্ত্রীর সবুজ পতাকা নাড়ানো আর দেখতে পাননি কেউ। রেল কর্তারা দাবি করেছেন, ছোট একটি স্ক্রিনে ছবি দেখা গিয়েছে। তা দেখেই এখান থেকে হাওড়ার উদ্দেশে রওনা করিয়ে দেন শতাব্দী এক্সপ্রেসকে। বুধবার ঠিক ১ টা বেজে ৩৫ মিনিটে এনজেপি স্টেশনে থেকে কলকাতার উদ্দেশে রওনা হয় ট্রেন। পরে অবশ্য জায়েন্ট স্ক্রিনে ভেসে ওঠে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি। তখন তিনি সরকারি সাহায্য দিচ্ছিলেন স্কুলের ছাত্রীদের। এদিন কোচবিহার রাজবাড়ি স্টেডিয়াম মঞ্চ থেকে শতাব্দী এক্সপ্রেস ছাড়াও তিনটি ট্রেন পরিষেবার সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। |
রাজবাড়ী স্টেডিয়ামের মঞ্চ থেকে সবুজ পতাকা নেড়ে মুখ্যমন্ত্রী ওই পরিষেবার সূচনা করেন। রেলমন্ত্রী মুকুল রায় ওই অনুষ্ঠানে বলেন, “শতাব্দী এক্সপ্রেসে উত্তরবঙ্গ থেকে কলকাতা গিয়ে সেদিনই ফেরা যাবে। এটা যুগান্তকারী ঘটনা।” নিউ জলপাইগুড়ির এরিয়া ম্যানেজার পার্থ শীল বলেন, “যান্ত্রিক গোলযোগের জন্য ওই সময় জায়েন্ট স্ক্রিনে দেখা যায়নি। ছোট স্ক্রিনে তা দেখা গিয়েছে। আমরা তা দেখেই ট্রেন হওড়ার উদ্দেশে রওনা করিয়ে দিই। এখানে ডিআরএম ছিলেন। এ ছাড়া শিলিগুড়ির বিধায়ক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য, রাজগঞ্জের বিধায়র খগেশ্বর রায় উপস্থিত ছিলেন।” এদিন শতাব্দী এক্সপ্রেসকে নিয়ে উৎসাহে মেতে ছিলেন এনজেপি স্টেশনের রেল অফিসার, কর্মী এবং যাত্রীরা। সংলগ্ন এলাকা থেকে প্রচুর মানুষ সেখানে হাজির হয়েছিলেন। এনজেপিতে একটি মঞ্চ তৈরি করে ১টা নাগাদ অনুষ্ঠান শুরু করা হয়। শতাব্দী এক্সপ্রেসের যাত্রী মেদিনীপুরের বাসিন্দা সঞ্জয় চক্রবর্তী নিজের খুশির কথা জানান। তিনি বলেন, “আমি পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত আছি। মাঝে মধ্যেই আমাকে কলাকাতা থেকে শিলিগুড়িতে যেতে হয়। শতাব্দী চালু হওয়ায় এখন অনেক কম সময়ে যাতায়াত করতে পারব। খুব ভাল লাগছে।” ওই ট্রেনেই ব্যক্তিগত কাজে কলকাতা যাচ্ছিলেন শিলিগুড়ির হাকিমপাড়ার বাসিন্দা জয়া সাহা। তিনি বলেন, “এনজেপি থেকে চালু হওয়া শতাব্দীতে প্রথম দিনই আমি যাত্রী হয়েছি।” এসজেডিএ চেয়ারম্যান রুদ্রনাথবাবু মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকায় উচ্ছ্বসিত। তিনি এই দিন বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার উন্নয়নের জন্য প্রাণপাত করছেন। তিনি দক্ষিণবঙ্গ, উত্তরবঙ্গ দেখছেন না। এমন মুখ্যমন্ত্রীকে পেয়ে আমরা খুশি। রেলমন্ত্রীর জন্যও গর্বিত। আপনারা মুখ্যমন্ত্রীর উপর ভরসা রাখুন। সোনার বাংলা উপহার দেবেন তিনি।” খগেশ্বরবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তা খুব অল্প সময়ের মধ্যে পেল উত্তরবঙ্গ। সাধারণ মানুষের খুব উপকার হল।” রেল কর্তৃপক্ষ জানান, এ দিন ৩৮ জন যাত্রী এনজেপি থেকে কলকাতা গিয়েছেন। ৬০০ যাত্রী বসার ব্যবস্থা রয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবার ট্রেনটি ফিরবে। শুক্রবার থেকে নির্দিষ্ট সময় মেনে যাতায়াত করবে। |