প্রশাসনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ পুলিশ। তাই আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি উন্নয়ন প্রকল্পেও পুলিশকে সামিল করতে হবে। বুধবার কোচবিহারে উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ কথা জানান প্রশাসনের কর্তাদের।
সরকারি সূত্রের খবর, রাজ্যের মুখ্যসচিব সমর ঘোষ, ডিজি নপরাজিত মুখোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী এই দিন পুলিশ-প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয় বাড়িয়ে ১০০ দিনের কাজ সহ যাবতীয় উন্নয়ন প্রকল্পে আরও গতি আনার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রতিটি থানা ও ব্লক পর্যায়ে ওসি-আইসি এবং বিডিও-দের নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়িয়ে এলাকার সমস্যা সমাধানে সাহায্য করার পরামর্শও দেন তিনি। ওই বৈঠকের পরে কোচবিহারে মনীষী পঞ্চানন বর্মার নামাঙ্কিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিলান্যাস করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আমজনতার উদ্দেশ্যে বলেন, “আমি প্রশাসনিক বৈঠকেও বলেছি। আপনাদেরও বলছি। ১০০ দিনের কাজ শুধু নয়, যে কোনও সমস্যা হলে বিডিও-দের কাছে তো যাবেনই। তাঁদের না পেলে থানার আইসি-ওসি’র কাছেও যাবেন। সকলেই প্রশাসনের অঙ্গ। সকলেই আপনাদের যথাসাধ্য সহযোগিতা করবেন।”
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, জলপাইগুড়ির বৈঠকে বন্যা প্রতিরোধ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী উদ্বেগ প্রকাশ করেন। কোচবিহারে ১০০ দিনের কাজের গতি কম দেখেও চিন্তিত হয়ে পড়েন। জেলা প্রশাসনের পরিসংখ্যান মতো কোচবিহারে গত বছর জবকার্ডধারী আবেদনকারীরা গড়ে মাত্র ১৪ দিন কাজ পেয়েছেন। বর্ষার মরসুমের জন্য জুন থেকে তিন মাস সেভাবে কাজ করা যায় না বলে প্রশাসনের কর্তারা মুখ্যমন্ত্রীকে জানান। কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রী ওই যুক্তি মানতে চাননি। তিনি জানান, বর্ষার সময়ে মানুষের হাতে টাকা-পয়সা কম থাকে। তাই এই সময়ের মধ্যেও ওই প্রকল্পে কাজের ব্যবস্থা করতে আধিকারিকদের কড়া নির্দেশ দেন তিনি। এর পরেই ১০০ দিনের কাজের জন্য ওই জেলায় অন্তত ১৫০ কোটি টাকা খরচের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেন মুখ্যমন্ত্রী।
পাশাপাশি, বন্যার সময় আগাম সতর্কতা নিতে বিডিওদের পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুত রাখতে বলেছেন তিনি। সারের কালোবাজারি রুখতেও পুলিশ-প্রশাসনকে একজোট হয়ে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে কোচবিহারের জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে ছিটমহলের বাসিন্দাদের অবস্থা ও তাঁদের চাহিদা নিয়ে দ্রুত রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। ওই রিপোর্ট দেখার পরে মুখ্যমন্ত্রী নিজে ছিটমহলে যাবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন।
সরকারি সূত্রেই জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের পরেই পুলিশ-প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা তাঁর নির্দেশ রূপায়ণের কাজ শুরু করে দেন। সন্ধ্যায় কলকাতার ট্রেন ধরার আগে শিলিগুড়িতে ডিজি নপরাজিতবাবু পুলিশ কর্তাদের নিয়ে বৈঠকও করেন। পাশাপাশি, শিলিগুড়ি সার্কিট হাউসে অফিসারদের নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্য সচিব সমরবাবুও। |