|
|
|
|
কমেছে এডস আক্রান্তের সংখ্যা, দাবি ন্যাকোর |
সুকান্ত সরকার • কলকাতা |
আগে ফি বছর প্রায় দু’লক্ষ মানুষ এডস রোগে আক্রান্ত হতেন। এখন সেই সংখ্যাটা কমে দাঁড়িয়েছে বছরে ৪৩ হাজার। এমনটাই দাবি করছে ন্যাশনাল এডস কন্ট্রোল অরগানাইজেশন (ন্যাকো)। তাদের দাবি, একই সঙ্গে কমছে ওই মারণ রোগের প্রভাবও। উদাহরণ হিসেবে ন্যাকো জানিয়েছে, তিন বছর আগে দেশে এডস আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫০ লক্ষেরও বেশি। বর্তমানে সেই সংখ্যাটা কমে দাঁড়িয়েছে ৩৫ লক্ষের কাছাকাছি।
কী করে কমানো গেল আক্রান্তদের সংখ্যা? ন্যাকো-র ডিরেক্টর জেনারেল সায়ন চট্টোপাধ্যায়ের ব্যাখ্যা, নিরাপদ যৌন জীবন যাপনে উপর জোর দেওয়ার পাশাপাশি প্রচারের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি, বিশাল সংখ্যক আক্রান্তের মৃত্যু এবং পাশাপাশি নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমে যাওয়ার ফলেই এই হ্রাস। এ ছাড়াও, গত কুড়ি বছর ধরে ঝুঁকিপূর্ণ জনবসতির মধ্যে ধারাবাহিক প্রচার এবং ‘হাই রিস্ক পপুলেশনে’র মধ্যে নিয়মিত চিকিৎসা-সংক্রান্ত নজরদারিও এর অন্যতম কারণ বলে দাবি করেছেন ‘ন্যাকো’ কর্তৃপক্ষ। তবে, এই সাফল্য অগণিত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে ভাগ করে নিতে চায় ‘ন্যাকো’।
এ দেশে এডস মহামারির আকার নিতে পারে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) কেন্দ্রীয় সরকাকে সতর্ক করার পর ১৯৯২ সাল থেকে ‘ন্যাশনাল এডস কন্ট্রোল প্রোগ্রাম’ বা ‘এনএসিপি’ কাজ শুরু করে। বর্তমানে ‘এনএসিপি’র তৃতীয় পর্যায়ের কাজ শেষ হওয়ার মুখে (২০০৭-২০১২)। এই তিনটি পর্যায়ে সরকার এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি এডস নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে কাজ করার ফলে সেই মহামারির সম্ভাবনা এড়ানো সম্ভব হবে বলে মনে করেন ন্যাকো কর্তৃপক্ষ।
ন্যাকোর একটি রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে ‘টারগেটেড ইন্টারভেনশন’ (টিআই) এর মাধ্যমে, ঝুঁকিপূর্ণ জনবসতির মধ্যে সরকার এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কাজই এই মারণ রোগের সংক্রমণকে প্রতিরোধ করার ক্ষেত্রে প্রধান হাতিয়ার। ২০১১ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত ১৩৮৫ টি ‘টারগেটেড ইন্টারভেনশন’-এর মাধ্যমে ৩১ লক্ষ ৩২ হাজার মানুষকে প্রতিরোধ-সহায়ক পরিষেবা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৭৮ শতাংশ মহিলা যৌনকর্মী, ৭৬ শতাংশ ড্রাগ আসক্ত, ৬৯ শতাংশ পুরুষ সমকামী এবং ৩৩ শতাংশ ট্রাক চালক এবং খালাসি রয়েছেন বলে ওই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
এডস নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে কাজ করছেন চিকিৎসক স্মরজিৎ জানা। যৌন পল্লিগুলিতে ধারাবাহিক শারীরিক পরীক্ষা এবং চিকিৎসা করা ছাড়াও যৌনকর্মী এবং তাঁদের কাছে আসা-যাওয়া করা লোকেদের মধ্যে নিরাপদ যৌন সংসর্গের বিষয়ে নিবিড় ভাবে সচেতনতার কাজ করার ফলেই নতুন করে ব্যাধি খুব বেশি ছড়াতে পারেনি বলে জানিয়েছেন স্মরজিৎবাবু। এখনও অনেক মানুষ এই প্রতিরোধ প্রক্রিয়ার বাইরে রয়েছেন। তাঁদেরকেও এই সুসংহত প্রক্রিয়ায় দ্রুত নিয়ে আসার উপর জোর দিতে হবে বলে মনে করেন তিনি। |
|
|
|
|
|