অনির্বাণ রায় • জলপাইগুড়ি |
সার্কিট বেঞ্চের স্থায়ী ভবনের শিলান্যাসের মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় জলপাইগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গবাসীর প্রত্যাশা পূরণের আশা উদগ্রীব। অথচ সেই সময়ে সার্কিট বেঞ্চের স্থায়ী ভবনের জন্য অধিগৃহীত জমিতে পাঁচিল তৈরির কাজ ঘিরে অনিশ্চয়তা দানা বেঁধেছে। অভিযোগ, বালি, পাথর, ইট, সিমেন্ট সহ সবরকম উপকরণ সরবরাহের বরাত দিতে হবে বলে নির্মানকারী সংস্থাকে ক্রমাগত চাপ দেওয়া হচ্ছে। নির্মাণ সংস্থাকে চাপে রাখতে শ্রমিকদেরও কাজে আসতে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। এই ব্যাক্তিদের দাবি না-মানায় গত ১ জুলাই সন্ধ্যায় স্থায়ী ভবনের জমিতে নির্মাণ সংস্থার তৈরি ক্যাম্পে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনার পরে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করা হয়। তার পরেও জুলুম বন্ধ হয়নি বলে অভিযোগ। গত এপ্রিল মাস থেকে নির্মাণ সংস্থার তরফে পূর্ত দফতর এবং পুলিশকে অন্তত বার সাতেক লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে। সম্প্রতি বিষয়টি জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের কাছেও খবর পৌঁছেছে। বুধবার জলপাইগুড়ি জেলাশাসক স্মারকী মহাপাত্র বলেন, “সমস্যার কথা শুনেছি। সমাধানে সব দফতরকে নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে।” |
তবে মুখ্যমন্ত্রী আগামী অগস্টেই সার্কিট বেঞ্চ চালু করাতে উদ্যোগী হওয়ায় আশার আলো দেখছেন জলপাইগুড়ি। জলপাইগুড়ি বার আসোসিয়েশনের সম্পাদক অভিনন্দন চৌধুরী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীকে অভিনন্দন। এবার একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে অস্থায়ী বেঞ্চের কাজ দ্রুত চালুর করার আর্জি নিয়ে যাব।” অভিনন্দন জানিয়েছে সার্কিট বেঞ্চ দাবি আদায় সমন্বয় কমিটি। কমিটি সম্পাদক কমলকৃষ্ণ বন্দোপাধ্যায় বলেন, “জলপাইগুড়িবাসীর স্বপ্ন হল সার্কিট বেঞ্চ। সেই স্বপ্ন পূরণের মাহেন্দ্রক্ষণ দ্রুত এগিয়ে আসছে বলেই মনে হচ্ছে। আমরাও সমণ্বয় কমিটির তরফে সব জায়গায় আর্জি জানাব।” প্রশাসনের একটি সুত্রেই জানা গিয়েছে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে কাজ শুরু হয়। প্রথমে নির্মাণকারী সংস্থার তরফে স্থানীয় সরবারহকারীদের বালি পাথর সরবরাহের বরাত দেওয়া হয়। কিন্তু তারা যথেষ্ট পরিমাণে সরবরাহ করতে পারেনি বলে সংস্থার দাবি। তখন অন্য কিছু সরবরাহকারীকে আংশিক বরাত দেওয়া হয়। এই সরবারহকারীরাও জলপাইগুড়ি শহরের বাসিন্দায় কিন্তু তাদের এলাকায় ঢুকতে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। নির্মাণ কাজে এলাকার শ্রমিককে কাজে নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, পেশাদার শ্রমিককে বাইরে থেকে আনা হয়। সেই শ্রমিকদের ভয় দেখিয়ে এলাকা থেকে চলে যেতে বাধ্য করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, রাতের বেলায় নির্বিচারে ইট, পাথর, বালি ভ্যানে করে চুরি করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ মিলছে। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার সুগত সেন বলেন, “বিষয়টি দেখছি। নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |